লালমনিরহাট প্রতিনিধি ঃ
লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানার এটিএম গোলাম রসুলের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই গত ১৩ ই সেপ্টেম্বর ( মঙ্গলবার) বাংলাদেশ পুলিশ হেড কোয়াটার পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট-২ এর এআইজি জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এপিবিএন এ বদলির আদেশ দেয়া হয়। প্রজ্ঞাপনে বতর্মান ওসি গোলাম রসুলকে আগামী ১৮ ই সেপ্টেম্বর/২০২২ ইং তারিখের মধ্যে ছাড়পত্র গ্রহন করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ১৯ শে সেপ্টেম্বর হতে তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ হিসাবে গন্য করা হবে।
তার বদলে সংবাদে কালীগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করেছে। অপরদিকে ওসি এটিএম গোলাম রসুল এ বদলির আদেশ পালনের প্রস্তুতি না নিয়ে বদলির আদেশ স্থগিত করার জন্য জোর লবিং তাদের অব্যাহত রেখেছেন। বদলির আদেশ স্থগিত করার জন্য ওসি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ওসি এটিএম গোলাম রসুল যোগদানের পর কালীগঞ্জ মাদক ও জুয়ার শীর্ষে অবস্থান করছে। মাদক ও জুয়া প্রতিরোধে ওসি গোলাম রসুল তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা না গেলেও তিনি নিয়মিত মাদক জুয়া থেকে কমিশন নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া কালীগঞ্জ থানার শত বছরের পুরনো কয়েকটি গাছ নিলাম বিহীন কেটে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে ভোটমারি ইউনিয়নে অবস্থিত ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার প্লান্টের বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করতে আসা সাধারণ নিরীহ মানুষদের অভিযোগ না নিয়ে বরং উল্টো ইন্ট্রো সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের অভিযোগ নিয়ে তাৎক্ষণিক সাধারণ নিরীহ মানুষদের কে ডেকে এনে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে ইন্ট্রাকো পাওয়ার প্লান্টে মুচলেকা গ্রহণ করেন। এখানে তিনি ইন্ট্রাকো সোলার পাওয়ার প্লান্ট হতে মোটা অংকের টাকা গ্রহণ করেন। ওসি এটিএম গোলাম রসুল কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন জুয়ার স্পট থেকে প্রতিরাতে দশ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ, বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীদের থানা থেকে ছেড়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার মাদক সম্রাট ইব্রাহিম নামের একজনকে আটক করে তার কাছ থেকে নগদ ২ লক্ষ টাকা ও এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লতাবর এলাকার মাদকব্যবসার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পরবর্তীকালে ওসি গোলাম রসুল ভুট্টুকে আটক করে তার নিকট ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করে উভয়ই ব্যক্তিকেই একটি নৌকা পোড়া মামলা দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি। এছাড়াও ইয়ার উদ্দিন নামক একজনের দায়ের করা অভিযোগে মহির উদ্দিন নামে একজন ব্যক্তি কে আটক করে দুদিন থানা হেফাজতে রেখে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পরবর্তীকালে আটককৃত আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ না করে তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয় বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী।
এছাড়াও মাদক ব্যবসায়ী রশিদ ও তার স্ত্রীকে মাদকসহ থানায় ধরে নিয়ে এসে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে,সহিদুল নামের অপর এক মাদক ব্যবসায়ীকে থানায় ডেকে নিয়ে ৮০ হাজার টাকা নিয়ে একটু আসামীদেরকে জেল হাজতে প্ররণ না করে এটিএম গোলাম রসূল রাতের আধারে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে উপজেলার চন্দ্র পুর ইউনিয়ন থেকে তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মিলন নামের এক যুবককে লাইনম্যান সাজিয়ে প্রতিমাসে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ওসি এটিএম গোলাম রসুল বলে অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও ওসি গোলাম রসুল কাকিনা ইউনিয়নের মার্কেট এলাকায় খালেক নামের এক যুবককে লাইন দিয়ে সেই স্পোর্ট থেকেও হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের অবৈধ অর্থ। এছাড়াও তিনি পুলিশি অভিযানে আটককৃত মাদক থানায় নিয়ে আসার আগেই তার বিভিন্ন সোর্স মাধ্যম দিয়ে বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এটিএম গোলাম রসুলের বদলিতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলার মানুষ। উপজেলাবাসী মনে করেন, এটিএম গোলাম রসুলের যোগদানের মধ্য দিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলায় জুয়া ও মাদকের তৎপরতা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষএহেনো অসৎ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ওসি এটিএম গোলাম রসুলকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি।
