নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ শেষ হলো বাংলাদেশের হকির ইতিহাসে প্রথবারের মতো আয়োজিত ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি লীগ ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বাংলাদেশ-২০২২।
গত ২৮ অক্টোবর ছয়টি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় প্রথম আসর। হকি ফেডারেশনের সভাপতি ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান, বিবিপি, বিইউপি, এনএসডব্লিউসি, এফএডব্লিউসি, পিএসসি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মোনার্ক মার্ট পদ্মা ও একমি চট্টগ্রাম এর মধ্যকার ফাইনাল খেলা উপভোগ করেন ও পুরস্কার বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠিত ফাইনালে টাইব্রেকারে মোনার্ক মার্ট পদ্মাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে শিরোপা অর্জন করে একমি চট্টগ্রাম। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ২-২ সমতায়।
হেমন্তের মৃদু শীতল পরিবেশে উষ্ণতা ছড়িয়ে দিয়েছিল ফাইনালের মঞ্চে দর্শকের টান টান উত্তেজনা। দর্শকের উচ্ছাস আর সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এ দৃশ্য যেন হকির নব-বিপ্লব।
নব্বই দশকে হকির স্বর্ণযুগের পর ২০২১ সালের জুন থেকে প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করে বাংলাদেশ হকি। খেলাধুলার ক্ষেত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উন্নীত করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকেন। হকিকে পুনরুজ্জীবিত করতে তিনি ইতোমধ্যে এক কোটি টাকা প্রণোদনা প্রদান করেন।
বাংলাদেশের হকিকে সামনে এগিয়ে নিতে বিভিন্ন খাত থেকে স্পন্সর যোগানের মাধ্যমে হকির ক্লাব গুলির অর্থনৈতিক সমস্যা দূর করা হয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন হকি টুর্নামেন্ট ও লীগ খেলার আয়োজন করা হয়, যার মধ্যে বড় চমক এবং সফলতা হলো প্রথমবারের মতো এই ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি লীগের আয়োজন।
প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় হকি ফেডারেশনের সভাপতি এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান স্বল্প পরিসরে যে অগ্রগতিতে হকি-কে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন এবং এইস কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত এই হকি লীগে দেশি খেলোয়াড়ের পাশাপাশি বিদেশি খেলোয়াড়ও অংশগ্রহণ করে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি লীগের মধ্য দিয়ে শুরু হলো হকির দিন-বদল। আর নতুন প্রজন্ম হকিতে খুঁজে পেল তাদের উন্মাদনা ও আনন্দের ধারা।
ফাইনালে অনবদ্য নৈপুণ্যের জন্য একমি চট্টগ্রাম এর আরশাদ ম্যান অব দ্যা ম্যাচ আর পুরো টুর্নামেন্টে পারফরম্যান্সের বিচারে সবাইকে ছাপিয়ে লীগে সেরা খেলোয়াড়ের তকমা পান একমি চট্টগ্রাম এর দেবিন্দার বাল্মিকী। পাশাপাশি এই আসরে ১৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার হন দেবিন্দার বাল্মিকী ।
ফাইনাল ম্যাচ শেষে হকি ফেডারেশনের সভাপতি বিমান বাহিনী প্রধান তাঁর বক্তব্যে হকির উন্নয়নে হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভুমিকা উল্লেখ করে বলেন এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার মাধ্যমে আমাদের খেলোয়াড়রা বাংলাদেশের বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে এবং বিশ্বকাপে খেলার পথে এগিয়ে যাবে।
তিনি হকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টাইটেল স্পন্সর ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক, আয়োজক প্রতিষ্ঠান স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী এইস, বসুন্ধরা গ্রুপ, টি-স্পোর্টস এবং আয়োজনে সম্পৃক্ত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি অংশগ্রহণকারী বিদেশী খেলোয়াড়দের প্রতি বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং নিরাপদে নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের শুভকামনা করেন।
এবারের মত সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি দলসমুহ ও ঢাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকসহ অন্যান্য পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান এই দীর্ঘ পথযাত্রায় হকির পাশে থাকবে এবং একদিন হকি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার গৌরবোজ্জল দিন ফিরে পাবে বলে বিমান বাহিনী প্রধান আশাবাদ ব্যক্ত করেন।