শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের লাল তালিকাভুক্ত ৩৭ টি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের মধ্যে ২৩ টি কলেজের কার্যক্রম ও প্রচারণা নিয়ে বিভ্রান্তি ; প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন শিক্ষাঙ্গন

পিংকি জাহানারা :  শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পর্যবেক্ষণ টিম সারাদেশের বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোকে পরিদর্শন করে প্রশিক্ষণের মান নির্ণয়ের চেষ্টা করেন। প্রশিক্ষণের  গুণগতমান বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন টিম ৩৮টি বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজকে লাল তালিকাভুক্ত করে তা বন্ধের সুপারিশ করে। কিন্তু ৩৮টি কলেজ থেকে ২৩টি কলেজ আদালতে মামলা করার কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কলেজকে আর বন্ধ করতে পারেনি। উপরন্ত কলেজগুলোকে প্রতি বছর নবায়ন দিয়ে দিয়ে ছাত্র ভর্তির সুযোগ করে দেয় জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়।
২০০৮ সালে করা মামলার ইতোমধ্যে ২০১৫ সালে একটি রায়ও বের হয় আদালতের। যাতে বলা হয়, ইতোমধ্যে ওইসব কলেজ থেকে যারা পাশ করেছে তাদেরকে এমপিও স্কেল দিতে বলা হয়। কিন্তু কলেজগুলোর বর্তমান-ভবিষ্যৎ নিয়ে আদালত কোনো প্রকার পর্যবেক্ষণ না দিলেও কলেজেগুলোর মালিক পক্ষ একটি অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার করে  তাদের ২৩টি কলেজ ছাড়া অন্য কলেজ থেকে বিএড করলে তাদের সনদ গ্রহণযোগ্য হবে না। অথচ আদালতের রায়ে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল না।
সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত আরও প্রায় ৭০টি কলেজ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তাদের এমন দাবি নিঃসন্দেহে অবাস্তব, উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং যা
আদালত অবমাননার শামিল।  উক্ত আদেশ ২টি বাতিল হওয়ার পরও জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে জানান ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.নজরুল ইসলাম খান।
এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার ২ মে বেলা ১১ টায় খুলনা প্রেসক্লাব হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে  ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.নজরুল ইসলাম খান জানান,,১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯৬ সালে বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রথম অধিভুক্তি লাভ করে প্রতিষ্ঠাকাল বিবেচনায় বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলো ২০২২ সালে ৩০ বছর পূর্ণ করেছে। তৎকালীন সময়ে মাত্র ৮/১০টি সরকারি টিটি কলেজ যখন বিপুল সংখ্যক মাধ্যমিক শিক্ষকদের পেশাগত বিএড প্রশিক্ষণ দিতে হিমশিম খাচ্ছিল তখন বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ প্রতিষ্ঠা ছিল সময়ের অনিবার্য দাবি। কিন্তু সরকার যে উদ্দেশ্যে এই কলেজগুলো প্রতিষ্ঠা করার অনুমতি দিয়েছিল তার ছন্দ পতন শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকে।
কিছু কিছু মানহীন কলেজের ব্যর্থতার কারণে সারাদেশে বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোর প্রশিক্ষণের মান নিয়ে জাতীয়ভাবে বিতর্কের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পর্যবেক্ষণ টিম সারাদেশের বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজগুলোকে পরিদর্শন করে প্রশিক্ষণের মান নির্ণয়ের চেষ্টা করেন।
প্রশিক্ষণের  গুণগতমান বজায় রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন টিম ৩৮টি বেসরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজকে লাল তালিকাভুক্ত করে তা বন্ধের সুপারিশ করে। কিন্তু ৩৮টি কলেজ থেকে ২৩টি কলেজ আদালতে মামলা করার কারণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কোনো কলেজকে আর বন্ধ করতে পারেনি। উপরন্ত কলেজ গুলোকে প্রতি বছর নবায়ন দিয়ে দিয়ে ছাত্র ভর্তির সুযোগ করে দেয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
২০০৮ সালে করা মামলার ইতোমধ্যে ২০১৫ সালে একটি রায়ও বের হয় আদালতের। যাতে বলা হয়, ইতোমধ্যে ওইসব কলেজ থেকে যারা পাশ করেছে তাদেরকে এমপিও স্কেল দিতে বলা হয়। কিন্তু কলেজগুলোর বর্তমান-ভবিষ্যৎ নিয়ে আদালত কোনো প্রকার পর্যবেক্ষণ না দিলেও কলেজেগুলোর মালিক পক্ষ একটি অনলাইন পত্রিকার মাধ্যমে প্রচার করে বেড়ায় যে, তাদের ২৩টি কলেজ ছাড়া অন্য কলেজ থেকে বিএড করলে তাদের সনদ গ্রহণযোগ্য হবে না। অথচ আদালতের রায়ে এমন কোনো নির্দেশনা ছিল না। সারাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত আরও প্রায় ৭০টি কলেজ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় তাদের এমন দাবি নিঃসন্দেহে অবাস্তব, উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং যা
আদালত অবমাননার শামিল। কেননা মহামান্য হাইকের্টের রায়ে বলা হয়- Ref.: -Pending hearing of the rule, let the contemnors be directed to allow MPO scale benefits and other
due benefits of the holders of the valid certificates in the B.Ed course obtained from the petitioners colleges and to renew the affiliation of the petitioners colleges for the time being. (Contempt petition number 153 of 2014, Arising out of writ petition no-5038 of 2009)
আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করে ২০১৯ সালে মাউশি থেকে সেই ২৩টি কলেজ ব্যতীত মামলার বাইরে থাকা অন্যান্য মনসম্পন্ন কলেজ থেকে অর্জিত বিএড সনদের বিপরীতে উচ্চতর স্কেল প্রদান না করতে সকল জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নিষেধ করা হয়। (স্মারক নং ওএম ০১-ম/২০১৫/২১৮০, তারিখ ১৪/০৫/২০১৯) তখন মানসম্পন্ন কলেজগুলোর জোর তৎপরতায় ২২/৫/২০১৯ তারিখ এই আদেশটি মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাতিল করতে বাধ্য হয় মাউশি (স্মারক নং ওএম-০১- ন/২০১৫/২২৬১)।
এমতাবস্থায় লাল তালিকাভুক্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের অপতৎপরতায় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন শাখার সহযোগিতায় ২৭ অক্টোবর, ২০২১ তারিখ স্মারক নং ৩৭.০০.০০০০.০৯৪.৫৯.০০১.২১.১০২) আবারও সেই ২৩টি কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যান্য কলেজের
শিক্ষার্থীদের সনদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়-কেবল ২৩টি কলেজকেই সরকারের অনুমোদিত কলেজ বলে দাবি করা হয়।
১৮অক্টোবর, ২০২২ তারিখ আবারও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা থেকে একটি পক্ষপাতমূলক আদেশের মাধ্যমে ২৩টি কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীদের বিএড স্কেল প্রদান না করার জন্য আরেকটি তাগাদাপত্র ইস্যু করা হয়। (স্মারক নং 37,00.0000.0 ৯৩.৫৯.০০১.২১.৩১৩) তখন সারাদেশের বৈধ কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের বিএড সনদের বিপরীতে উচ্চতর বেতনস্কেল প্রাপ্তি নিয়ে বেশ জটিলতা তৈরি হয়। এহেন প্রেক্ষাপটে বিগত ২৩/১১/২০২২ তারিখ বিষয়টি শিক্ষা সচিব এর  নজরে আনা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত অবগত হয়ে আইন শাখা থেকে পূর্বে জারিকৃত ২টি আদেশই বাতিল করেন। যার স্মারক নং শিম/আইন সেল (রীট)-৬/সাতক্ষীরা/২০০৯/২৩, তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ এমতাবস্থায়  অতীব পরিতাপের বিষয় এইযে, উক্ত আদেশ ২টি বাতিল হওয়ার পরও জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ বাস্তবায়নে গড়িমসি করছে। ক্ষেত্রবিশেষ বিএড স্কেল প্রত্যাশীদের আবেদনগুলো সেই লাল তালিকাভুক্ত ২৩টি কলেজের অন্তর্ভুক্ত নয় বলে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন মানসম্পন্ন কলেজ থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীরা।সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা, উপজেলা/থানা শিক্ষা অফিসের এরূপ অনৈতিক আচারণের তীব্র প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই আদেশ বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *