!! প্রসঙপূর্বক উল্লেখ করা যায় কোম্পানিটি ৪৫০ টাকার ওমিপ্রাজল -২০ যদি ৯০ টাকায় বিক্রি করে তাহলে কি পরিমাণ কাস্টমসে ভ্যাট পরিশোধ করে? কারণ ৪৫০ টাকার ১৫ % ভ্যাট ই আসে ৬৭টাকা ৫০ পয়সা ১০০ টির ১ বক্স ওমিপ্রাজলের ৯০ টাকায় বিক্রি করলে (৯০.০০-৬৭.৫০)=২২.৫০ ওই হিসেবে প্রতি ১০০ টির ১ বক্স ওমিপ্রাজল ক্যাপসুলের দাম পড়ে সাড়ে ২২ টাকা। তাহলে ১ কেজি ওমিপ্রাজলের কাঁচামালের দাম কতো? আর ১ কেজি ওমিপ্রাজলে কতো পিস ক্যাপসুল তৈরি করা হয়, ওমিপ্রাজল -২০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুলের ওজন কি ২০ মিলিগ্রাম আছে? !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : মেসার্স প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, অবস্থান টেপির বাড়ি শিশু পল্লী রোড গাজিপুর। উৎপাদন লাইসেন্স নাম্বার জৈব -২২৫ এবং অজৈব -৪৫৪। পূর্বের অফিসের ঠিকানা বাড়ি নাম্বার -৩৫, ( দ্বিতীয় তলা) রোড নাম্বার -৭ ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ঢাকা। বর্তমান অফিসের ঠিকানা :প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যাল লি. হাউজ নং-১৭,রোড নং-৭১/ এ,ব্লক-ই,বনানী,ঢাকা-১২১৩।
উক্ত কোম্পানির মালিক মো: হালিম তিনি বিদেশ থেকে বিভিন্ন প্রকার ঔষধ তৈরির র-মেটেরিয়াল (কাঁচামাল) প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি আমদানি করে তা মিটফোর্ড সহ বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানিতে সরবরাহ করে থাকেন। আবার অনেক সময় তিনি নিজেও মিটফোর্ডের ক্যেমিকেল ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে র-মেটেরিয়াল নিয়ে ফিনিস প্রডাক্ট সরবরাহ করেন। তার কোম্পানির উৎপাদিত ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধ মিটফোর্ডের ঔষধের পাইকারী বাজারে আন্ডার রেটে বিক্রির কারণে সারাদেশের ঔষধের পাইকারী ও খুচরা বাজারে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি করে নিজের পকেট ভারি করলেও বিতর্কিত ও নিম্নমানের ঔষধ কিনে প্রতারিত হচ্ছে জনগণ।
প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর তৈরি করা পিয়ার – ২০ ( ওমিপ্রাজল বিপি-২০ মি.গ্রা) নামক ১০০ টির ১ বক্স গ্যাস্টিকের ক্যাপসুলের মুল্য মোড়কের গায়ে ৪৫০ টাকা মুদ্রিত আছে অথচ ওই ১০০ টির ১ বক্স পিয়ার -২০ মিটফোর্ডের পাইকারী বাজার সহ সারাদেশের পাইকারী ও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৯০ টাকায়। তাহলে ঔষধের নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক এসব কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধের মুল্য নির্ধারণ করে কি লাভ?
পিয়ার -২০ নামক ক্যাপসুল এর ব্যাচ নাম্বার -০০৬, ডিএআর নাম্বার -৩১৩-২০-২৯, উতপাদন তারিখ -ফেব্রুয়ারি-২০২৩, মেয়াদ উত্তির্নের তারিখ -ফেব্রুয়ারি- ২০২৫।
এছাড়াও প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ট্যাবলেট সেনক্যাল-ডি (ক্যালসিয়াম), নিউরো -পি ( ভিটামিন বি১, ভিটামিন -বি৬, এবং ভিটামিন -বি১২) পিট্রোলাক ( ক্যাটোরোলাক ট্রমিথামন-২০ মি.গ্রা), প্রিজিথ-৫০০ এম জি( এরিথ্রোমাইসিন -৫০০ মি গ্রা), প্রিডন -১০ ( ডমপ্রিডন-১০ এম জি), জোকন ৫০ এম জি ( ফ্লুকোনাজল-৫০ এম জি) ক্যাপসুল, প্রিটল -৫ এম জি ( লিভোকট্রাইজিন-৫ এম জি) ট্যাবলেট, ডায়ালাক্স -৮০ এম জি ( গ্লিক্লাজাইড-৮০ এম জি) ট্যাবলেট, গ্রোফেনাক-১০০ এম জি ( এসিক্লফেনাক বিপি -১০০ এম জি) ট্যাবলেট, প্যান্টাপ্রাজল পিপিএল -২০ (প্যান্টাপ্রাজল বিপি-২০ এম জি) ট্যাবলেট এবং ডায়াফরমিন-৫০০ ( ডায়াফরমিন এইচসিএল – ৫০০ এম জি) ট্যাবলেট। এসব ঔষধ মিটফোর্ডের ঔষধের পাইকারী বাজার সহ সারাদেশের পাইকারী ও খুচরা বাজারে আন্ডার রেটে বিক্রি হচ্ছে।
প্রসঙ্গ পূর্বক উল্লেখ করা যায় কোম্পানিটি ৪৫০ টাকার ওমিপ্রাজল -২০ (১ বক্স ১০০ টি ক্যাপসুল) যদি ৯০ টাকায় বিক্রি করে তাহলে কি পরিমাণ কাস্টমসে ভ্যাট পরিশোধ করে? কারণ ১৫% ভ্যাট দিতে হলে ৪৫০ টাকার ভ্যাট ই আসে ৬৭ টাকা ৫০ পয়সা ১০০ টির ১ বক্স ওমিপ্রাজলের ৯০ টাকায় বিক্রি করলে (৯০.০০-৬৭.৫০)=২২.৫০ ওই হিসেবে প্রতি ১০০ টির ১ বক্স ওমিপ্রাজল ক্যাপসুলের দাম পড়ে সাড়ে ২২ টাকা। তাহলে ১ কেজি ওমিপ্রাজলের কাঁচামালের দাম কতো? আর ১ কেজি ওমিপ্রাজলে কতো পিস ক্যাপসুল তৈরি করা হয়। ওমিপ্রাজল -২০ মিলিগ্রাম ক্যাপসুলের ওজন কি ২০ মিলিগ্রাম আছে?
মিটফোর্ডের একটি সুত্রের দাবি পূর্বে প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ১০/১২ জন ব্যাবসায়ীক অংশীদার থাকলেও বর্তমানে টিকে আছে ১ জন। বর্তমানের ব্যাবসায়ীক অংশীদার কে কোম্পানির ব্যাবসায় লোকসান দেখাচ্ছেন তিনি নতুন করে ব্যাবসার জন্য অর্থ দেওয়ার প্রস্তাব করলেও রহস্যজনক কারণে হালিম টাকা না নিয়ে নানাবিধ তালবাহানা করে মিটফোর্ডে আন্ডার রেটে প্রতিমাসেই প্রায় ২ কোটি টাকার ঔষধ বিক্রি করছেন। এতে করে তার নিজস্ব আয় হচ্ছে প্রায় ৫০ লাখের মতো।
গত ২০/০৪/২০২১ তারিখে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ অনুযায়ী জানা গেছে, ওয়ার্ল্ড হেল্থ অরগানাইজেশান (ডব্লিউ এইচ ও) এর নিয়মানুসারে গুড ম্যানুফেক্সারিং প্রাক্টিস ( জিএমপি) এর গাইডলাইন অনুসরণ না করায় প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড সহ বেস কয়েকটি কোম্পানির কারখানায় ঔষধ সামগ্রীর উতপাদনের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় ওই সকল ঔষধ কোম্পানির ঔষধের কারখানায় সকল প্রকার ঔষধ প্রস্তুত ও বাজারজাত নিনিষিদ্ধ করা হয়। উক্ত পত্রের স্মারক নং-ডিজিডিএ/২৯-২/০৯/৭৭৬২।
এছাড়াও মেসার্স প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড টেপির বাড়ি শিশু পল্লী রোড গাজিপুর প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের স্মারক নং-ডিএ/এমএল-৩১৩/৯৯/১৭৪৫ মোতাবেক সেফালোস্পোরিন জাতীয় পদ ব্যাতিত প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন লাইসেন্স (অজৈব-৪৫৪ ও জৈব-২২৫) এর আওতায় সকল প্রকার ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাতকরন সাময়িক বাতিল করা হয়।উক্ত অফিস আদেশে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান ২০ এপ্রিল ২০২১ সালে স্বাক্ষর করেন।
মেসার্স প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর বিরুদ্ধে ড্রাগ কোর্টে মামলা চলমান। ২০২১ সালে কোম্পানির কারখানায় কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা শাখা অভিযান পরিচালনা করে।
এছাড়া প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর ম্যানুফেক্সার লাইসেন্স নবায়ন নাই এবং ওই কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধের পদও নবায়ন নাই, তাহলে কোম্পানিটি ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঔষধের উৎপাদন তারিখ, ভিএআর নাম্বার, ব্যাচ নাম্বার ও মেয়াদ উত্তির্নের তারিখ ব্যাবহার পূর্বক ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাত করছে কোন প্রক্রিয়ায়।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে খবর নিয়ে জানা গেছে প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে প্রধান কার্যালয়ে আছেন পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোঃ আশরাফ হোসেন, উপ- পরিচালক আব্দুল মালেক, সহকারী পরিচালক এটিএম গোলাম কিবরিয়া এবং গাজিপুরের স্থানীয় কর্মকর্তা রয়েছেন দুজন একজন সহকারী পরিচালক মোঃ আহসান হাবীব অপরজন উপ-পরিচালক সফিকুর রহমান। সহকারী পরিচালক মোঃ আহসান হাবীব গাজীপুর জেলায় কর্মরত রয়েছেন ১৮ মাস যাবত এবং সফিকুর রহমান ৮ মাস হলো চট্টগ্রাম থেকে গাজীপুর এসেছেন।
তাহলে গাজীপুর বা দেশের আনাচে-কানাচেতে প্রত্যান্ত অঞ্চলের প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর মতো ঔষধ কোম্পানির সংখ্যা ও তো কম নয় তাহলে এই শ্রেণির কোম্পানির দেখভাল করছেন কোন সংস্থা ?
এ বিষয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) আশরাফ হোসেন এর বক্তব্য জানতে তার সেলফোনে কল করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই বলেন যে, তিনি মিটিংয়ে আছেন তার সাথে পরে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। সহকারী পরিচালক এটিএম গোলাম কিবরিয়ার সেলফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করা তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।
প্রাইম ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এর মালিক মোহাম্মদ হালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার অফিসে বসার কথা বলেন, এরপর তিনি বক্তব্য দেওয়ার কথা বলে কোন প্রকার বক্তব্য প্রদান করেন নি।