মো: রফিকুল ইসলাম (নড়াইল) : “দালাল মুক্ত কালিয়া থানা, জনগণের আস্থার ঠিকানা”- এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে, পুলিশি সেবা জনগণের দ্বারগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নড়াইল কালিয়া থানার আয়োজনে ‘ওপেন হাউজ ডে’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার ১৫ জুলাই বিকেলে এ উপলক্ষে কালিয়া থানার অডিটরিয়ামে ওপেন হাউজ ডে’র আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোসাঃ সাদিরা খাতুন, পুলিশ সুপার, নড়াইল।
কালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাবু কৃষ্ণপদ ঘোষ, কালিয়া পৌরসভা মেয়র ওয়াহিদুজ্জামান হীরা, সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হক টুকু, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সোহেলী পারভীন নিরি, উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান শেখ ইব্রাহিম, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারবৃন্দ, স্কুল- কলেজের শিক্ষকবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, ব্যবসায়ীগণ, মসজিদের ইমামগণ, গ্রাম পুলিশ, প্রেস ক্লাবের সভাপতিসহ ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ উপস্থিত ওপেন হাউজ ডে’তে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার মোসা: সাদিরা খাতুন অনুষ্ঠানে উপস্থিত সুধীবৃন্দ ও ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও জনগণের দোরগোড়ায় পুলিশি সেবা পৌঁছে দিতে নড়াইল জেলা পুলিশ বদ্ধপরিকর।
পুলিশি সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য চলমান রয়েছে বিট পুলিশিং ও কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা।তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতার লাল সূর্য। এই শান্তির দেশে কেউ মারামারি হানাহানি করতে পারে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা ভিশন-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক হবো।স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চাই, মারামারি-হানাহানি, কাইজ্যা চাই না। আপনারা ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি জেলার নাগরিক হয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কেন অশান্তি সৃষ্টি করবেন। নড়াইল বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দেয়, সেখানে আপনারা বর্বরতার যুগে পড়ে আছেন।
কাইজ্যা, মারামারি করে কোন লাভ নেই, এতে নিজ সন্তান, মানুষ ও সমাজের ক্ষতি হয়।আমরা নিরাপদে বাস করতে চাই, আর এই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শান্তিপূর্ণ সমাজ ব্যবস্থার জন্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। আর এই পরিবর্তনে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নড়াইলকে আমরা সম্প্রীতির আদর্শ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, জিডি, মামলা তথা পুলিশের কোন সেবা নিতে টাকা লাগে না। আপনারা দালালের প্রভাবমুক্ত থাকুন। আমি থানাকে জনগণের আস্থার আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, আপনারা নির্ভয়ে থানায় আসুন, পুলিশি সেবা গ্রহণ করুন।
এছাড়া পুলিশ সুপার নিম্নোক্ত বিষয়ের উপরও গুরুত্বারোপ করেন, জিডি, মামলা ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অনলাইন প্রতারক ,নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায়, মাদক, জুয়া ও ইভ টিজিং, ডমেস্টিক ভায়োলেন্স, কিশোর গ্যাং, ইমামসহ অন্যান্য ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের দায়িত্ব ও কর্তব্য, নারীর ক্ষমতায়ন বাস্তবায়ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি
এছাড়া তিনি ভুক্তভোগী, সেবাপ্রার্থী, ভিকটিমসহ কেউ যাতে সেবা বঞ্চিত না হয় বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ প্রদান করেন।