নিজস্ব প্রতিনিধি : রংপুরে এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, বাংলাদেশ পুলিশ এর আয়োজনে উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা শীর্ষক সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে, এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার ৭ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০ টায়, রংপুর-এ এন্টি টেরোরিজম ইউনিট, বাংলাদেশ পুলিশ এর আয়োজনে ও জেলা পুলিশ রংপুর এর সহযোগিতায় পুলিশ লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে, “উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ ও সহিংস চরমপন্থা প্রতিরোধে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোঃ আব্দুল বাতেন, বিপিএম, পিপিএম, ডিআইজি, বাংলাদেশ পুলিশ, রংপুর রেঞ্জ, রংপুর। অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এস এম রুহুল আমিন, অ্যাডিশনাল আইজি, এন্ট্রি টেররিজম ইউনিট, বাংলাদেশ পুলিশ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক মোঃ মনিরুজ্জামান, বিপিএম-বার, পিপিএম-বার, পুলিশ কমিশনার৷ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, রংপুর। বাসুদেব বণিক, কমান্ড্যান্ট (ডিআইজি), পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, রংপুর। মোঃ ফেরদৌস আলী চৌধুরী, পুলিশ সুপার, রংপুর।
আলোচনায় বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে বলেন যে, বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ। প্রাচীনকাল থেকে এদেশে বসবাসকারী লোকজন সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার ভিত্তিতে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে একে অপরের সাথে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ইসলামে জঙ্গিবাদ, উগ্রবাদের কোন ভিত্তি নেই।
এদেশে জঙ্গিবাদের প্রথম সূচনা হয় ১৯৮৯ সালে সেই সময় আফগানিস্তানের তালেবান সরকার সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বিজয় লাভ করলে সেই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী মুজাহিদরা এদেশে ফিরে এসে জঙ্গিবাদের সূচনা ঘটান। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে মুফতি হান্নানের নেতৃত্বে হরকাতুল্লাহ জিহাদ এবং ১৯৯৮ সালে জেএমবি প্রতিষ্ঠিত হয়।
তারা ২০০১ সালে রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালে দেশের ৬৩ টি জেলায় সিরিজ বোমা হামলা সহ বিভিন্ন সময়ে এদেশের নিরীহ মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করেছেন। ইসলামে মানুষ হত্যা মহাপাপ।
তারা নিরীহ ইসলাম মুখী যুবকদের ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদের দিকে ধাবিত করে কথিত জান্নাত পাওয়ার লোভ দেখিয়ে এদেশের শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষদের হত্যা করেন।
এক সময় ধারণা করা হতো শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাই জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত। পরবর্তীতে এক সমীক্ষায় দেখা যায় জঙ্গিবাদে গ্রেফতার ২২% ছাত্র মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বাকি ৫৬% শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়, ইংলিশ মিডিয়াম সহ সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত।
এরপরে আমাদের রাষ্ট্রীয় পলিসিতে পরিবর্তন আসে। ফলে মাদ্রাসা শিক্ষা বাদ দিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষার্থীদের নিয়েও আলোচনা হয়। প্রত্যেক বক্তাই সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ইসলামের সঠিক জ্ঞানকে যথাযথ অনুশীলনের মাধ্যমে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রংপুর অধ্যাপক ডাঃ বিমল চন্দ্র রায়, প্রিন্সিপাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ, রংপুর, ড. তুহিন ওয়াদুদ, ডিন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর, মোহাম্মদ আসগার আলী, প্রধান মুফাসসির, রংপুর কারামতিয়া কামিল মাদ্রাসা, রংপুর, মেট্রোপলিটন পুলিশ; রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়, রংপুর ও জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা সহ রংপুর শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকবৃন্দ।