শারদীয় দুর্গা পূজা-২০২৩ এর অষ্টমী পূজা উপলক্ষে পুলিশ কমিশনার কর্তৃক  দক্ষিণ বিভাগের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ

Uncategorized আইন ও আদালত খুলনা জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

মামুন মোল্লা (খুলনা) : শারদীয় দুর্গা পূজা-২০২৩ এর অষ্টমী পূজার সন্ধ্যায় খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মো : মোজাম্মেল হক বিপিএম (বার) পিপিএম সেবা, খুলনা মহানগরীর দক্ষিণ বিভাগের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন,  এ খবর সংশ্লিষ্ট সুত্রের।


বিজ্ঞাপন

জানা গেছে,  গতকাল রবিবার  ২২ অক্টোবর, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ  কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক, বিপিএম (বার), পিপিএম-সেবা, শারদীয় দুর্গাপূজা-২০২৩ এর মহাঅষ্টমী পূজার সন্ধ্যায় নগরীর দক্ষিণ জোনের লবণচরা থানাধীন নিজ খামার ঠিকরাবাঁধ সার্বজনীন মন্দির, হরিণটানা থানাধীন কৈয়া বাজার মিলন মাতৃ মন্দির, সোনাডাঙ্গা মডেল থানাধীন ছোট বয়রা কালীবাড়ি সার্বজনীন পূজা মন্দির, বানরগাঁতি সর্বজনীন হরশিত শিবাশ্রম পূজা মন্ডপ, বানিয়াখামার বানরগাঁতি সর্বজনীন মন্দির এবং শিববাড়ি শ্রী শ্রী কালিমন্দির পরিদর্শন করেন।


বিজ্ঞাপন

পরিদর্শন কালে তিনি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার সামগ্রী বিতরণ করেন। নগরীর দক্ষিণ জোনের পূজা মণ্ডপ পরিদর্শন কালে পুলিশ কমিশনার পূজা উদযাপন কমিটি ও মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দের নিকট হতে সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নেন এবং মণ্ডপ প্রাঙ্গনে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বী দর্শনার্থীদের সাথে শারদীয় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এসময় তিনি পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের হাতে বিভিন্ন প্রকারের ফলে সুসজ্জিত ফলের ঝুড়ি তুলে দেন।

কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার এর আগমনে পূজা উদযাপন কমিটি ও মণ্ডপ কমিটির নেতৃবৃন্দ সন্তোষ প্রকাশ করে পুলিশের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। পরিদর্শন কালে কমিশনার এর  সামনে শিশু শিল্পী নৃত্য পরিবেশন এবং আরতি উপস্থান করেন।

পূজা মন্দির পরিদর্শন কালে কেএমপি’র পুলিশ কমিশনার  মন্দির প্রাঙ্গণে আগত ভক্ত এবং পূজারীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি উপস্থিত সকলকে শারদীয় শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনা সম্পন্ন একটি দেশ।

হাজার বছর ধরে এই ভূখন্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের সাথে সকল ধর্ম মতের মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক ত্যাগ তিতীক্ষার বিনিময়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।

জাতির জনকের নেতৃত্বে যখন মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয় তখন কোন ধর্ম পরিচয় মূখ্য ছিল না। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিল একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য। সনাতন ধর্মলম্বী যারা আছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের ভূমিকা ছিল সবচেয়ে অগ্রগণ্য। আপনারা নিজেদেরকে এই দেশে কখনোই সংখ্যালঘু ভাববেন না।

সনাতন ধর্মলম্বী মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে অনেক বেশি জীবন দিয়েছেন, বেশি রক্ত দিয়েছেন। আর এ কারণেই আপনাদেরকে বলব, আপনারা এই দেশে কখনোই সংখ্যালঘু নন। এই দেশের স্বাধীনতার সাথে আপনাদের পূর্বপুরুষরা জড়িত ছিল। সুতরাং গর্বিত নাগরিক হিসেবে আপনারা মাথা উঁচু করে বসবাস করবেন।

তিনি আরো বলেন, শারদীয় দুর্গা উৎসবের মহা অষ্টমী আজ। আমরা জানি দেবী দুর্গা কৈলাশ সরোবর থেকে তাঁর দুই কন্যা লক্ষ্মী, স্মরস্বতী এবং পুত্র গণেশ, কার্তিককে নিয়ে কৈলাস ধরাধামে আসেন এবং মর্তের সন্তানদের বর দিয়ে আবার বিসর্জনের মাধ্যমে বিজয়া দশমীতে স্বর্গে ফিরে যান, যাতে করে সারা বছর সন্তানগণ সুখে শান্তিতে থাকে।

এসময় দেবী দুর্গাকে তিনি বহুভুজা বা কাত্যয়নি শক্তির প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে বলেন, দেবী দুর্গা যেমন অশুভ শক্তি প্রতীক মহিষাসুরকে প্রতিহত করেন তেমনি আমরা পুলিশ সদস্য যারা আছি, আমরাও সমাজে অন্যায় তিরোহিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে বদ্ধপরিকর।

এরপর উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের পূজা উৎসব আনন্দের সঙ্গে এবং ধর্মীয় আবেগ দিয়ে ভক্তি সহকারে পরিচালিত হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। আপনাদের এই অঞ্চলকে আমরা সকল প্রকার সন্ত্রাসমুক্ত, জঙ্গিবাদ মুক্ত, সকল প্রকার নাশকতা মুক্ত, সকল প্রকার মাদকমুক্ত, সকল প্রকার ফৌজদারী অপরাধমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ এলাকায় পরিণত করতে চাই। যেখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সকলে মিলে একত্রে বসবাস করবে।

পুলিশ কমিশনার এর  পূজা মন্ডপ পরিদর্শন কালে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কেএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (এএন্ডও)  সরদার রকিবুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক এন্ড প্রটোকল)  মোছাঃ তাসলিমা খাতুন, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)  মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (এফএন্ডবি)  শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু, ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মনিরা সুলতানা,অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সদর এন্ড মিডিয়া)  মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছান, অতিঃ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)  এ.জেড.এম তৈমুর রহমান, সহকারি পুলিশ কমিশনার মো: আবু নাসের আল-আমিন, সোনাডাঙ্গা জোন-সহ অফিসার ইনচার্জ সোনাডাঙ্গা মডেল থানা, অফিসার ইনচার্জ লবণচরা থানা, অফিসার ইনচার্জ হরিণটানা থানা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ,সকল পূজা মন্ডপের সভাপতি ও সেক্রেটারি, হরিণটানা থানা কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সভাপতি আজগর বিশ্বাস তারা এবং মন্দির প্রাঙ্গনে আগত সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্ত ও পূজারীগণ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *