সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জে টেন্ডার আহবান না করে অবৈধ পন্থায় হাটের চান্দিনা ঘর বিক্রির মতো গুরুতর এক অভিযোগ উঠেছে এফ এম মারুফ রেজা নামের এক ইউ’পি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। মারুফ রেজা গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১নং জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। সে ইসাখালী গ্ৰামের মৃত শাহদাত আলী ফকিরের ছেলে। গত ২০২২ সালে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হেমায়েত উদ্দিন মোল্লা ও এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৯ বছর পূর্বে ১নং জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের মধুমতি হাট/বাজারে কেয়ার বাংলাদেশের গ্ৰামীন বাজার উন্নয়ন প্রকল্প-২০০৪ এর আওতায় (ইউ এস এ আই ডি)’র অর্থায়ন ও গোপালগঞ্জ এলজিইডির তত্ত্বাবধানে ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মজবুত টিন, লোহার পাত দিয়ে সেমি পাকা ৫ টি চান্দি ঘর তৈরি করা হয়। যেখানে প্রতি সাপ্তাহে নিরাপদে অন্তত দুই দিন হাট বাজার বসে।
কয়েকদিন আগে চেয়ারম্যান এফ এম মারুফ রেজা সরকারি এ সম্পদ আত্মসাৎ করা ও ব্যক্তিগত ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ওই চান্দি ঘর গুলোকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। পরে কৌশল করে উপজেলা নিবার্হী অফিসারকে ভুল বুঝিয়ে টেন্ডার বিহীন ভাবে গোপনে নাম মাত্র টাকায় নিলামে বিক্রি করে দেন।
গোপালগঞ্জ শহরের মিজান নামের এক ভাঙ্গাড়ী ব্যবসায়ী বড়গোপালগঞ্জে টেন্ডার ছাড়া-ই হাটের চান্দি ঘর বিক্রি করলেন ইউ’পি চেয়ারম্যান অংকের টাকা দিয়ে উক্ত ঘর ক্রয় করেন। এসকল অভিযোগের সত্যতা জানতে সরেজমিনে মধুমতি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গাড়ী ব্যবসায়ী মিজান লেবার খাটিয়ে চান্দি ঘরে টিন, লোহার পাত ও ইট তুলে নিচ্ছেন।
বেশ কিছু লোহার পাত ও টিন আগে বিক্রয় করেছেন। সরকারি চান্দি ঘর কেনার বিষয়ে ব্যবসায়ী মিজান সাংবাদিকদের জানান, আমার কি দোষ? আমি মারুফ চেয়ারম্যানের কাছে থেকে নগদ টাকায় কিনেছি। সরকারি চান্দি ঘর হলে সরকার চেয়ারম্যানের সাথে বোঝাবুঝি করুক।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান এফ এম মারুফ রেজার মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে জালালাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়েও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না ।
এবিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার মহসিন উদ্দিন জানান, তিনি অপসারণের জন্য মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি অবকাঠামো টেন্ডার/ নিলাম বিহীন ভাবে মৌখিক নির্দেশে বিক্রি করা যায় কি-না জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য পূর্বেও এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি করার অভিযোগ এনে পরিষদের অধিকাংশ সদস্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাথিল করেন।