ঢাকা ওয়াসার পিপিআই প্রকল্পের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ৪৬ কর্মকর্তাকে মামলার আওতায় আনার দাবি

Uncategorized অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক :  ঢাকা ওয়াসার পিপিআই প্রকল্পের লুটপাটে জড়িত ৪৬ জন কর্মকর্তাকে মামলার আওতায় আনয়ন এবং প্রকল্পের শুরু থেকে সম্পৃক্ত সকল কর্মকর্তার দুর্নীতি তদন্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্যে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সমবায় অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর পিপিআই প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন বিগত ১০ মে-২০২৩ তারিখে ২৪৮,৫৫,২২,৯০০ টাকা আত্মসাতের দায়ে দুর্নীতির রাঘব বোয়ালদের অন্তর্ভূক্ত না করে কেবল তিন জনকে (একজন কো-চেয়ারম্যান ও দুই জন নিম্ন স্তরের কর্মচারী) অভিযুক্ত করে মামলা (দুদক,সজেকা,ঢাকা-১,মামলা নং:৫-১০/৫/২০২৩, বাদি-মো: আশিকুর রহমান,সহকারি পরিচালক,প্রধান কার্যালয়) দায়ের করেছে ।


বিজ্ঞাপন

এদিকে সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক ৪৯(১)(ঙ) ধারার তদন্তে প্রমানিত অর্থ লুটপাটে জড়িত আরো ৪৬ জন কর্মকর্তাকে মামলার আওতায় আনার জন্যে চলতি বছরের ১ জানুয়ারী দুর্নীতি দমন কমিশনে আবেদন করেছেন ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি আনিসুজ্জামান খান শাহীন। পাশাপাশি ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত সকলের দুর্নীতির বিষয়ে ৮৩ ধারায় অধিকতর তদন্তের জন্যে একই তারিখে আবেদনকারী সমবায় অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন।

ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: এর ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ব্যবস্থাপনার সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাগণ পারস্পরিক যোগসাজসে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়া, সমিতির ব্যাংকে গচ্ছিত নগদ অর্থ ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ সহ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রক্রিয়া চড়ান্ত করেছে। অন্যদিকে সমবায় অধিদপ্তর ৪৯(১)(ঙ) ধারায় খন্ড তদন্ত করে সমিতির অর্থ লুটপাটে জড়িত আরো ৪৬ জন কে অভিযুক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দিয়েছেন।

উক্ত তদন্ত প্রতিবেদনে সমিতির পিপিআই প্রকল্পের সূচনালগ্ন তথা ১৯৯৭ সাল থেকে সমিতির দায়িত্বে থাকা অনেকের দুর্নীতির বিষয় বাদ পড়েছে। এদিকে সমিতির চলমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আতাউল করিম,সহ সভাপতি শহীদুল ইসলাম ও সেক্রেটারী শাহাবুদ্দিন সরকার গং সমবায় সমিতির ব্যাংকে গচ্ছিত ৮ কোটি টাকা জমি কেনা সহ নানা ছলে আত্মসাত করেছে বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

জানাগেছে, সমিতির সম্পদ আত্মসাত ও দুর্নীতির ভবিষ্যত মামলা থেকে বাঁচার জন্যে সকল লুটপাটকারি জোট বেঁধেছে সমিতির অবসায়ন ঘটানোর জন্যে। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ চাকরি থেকে বরখাস্ত করার ভয় দেখিয়ে সদস্যদের নিকট থেকে অবসায়ন ঘটানোর আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করিয়েছে। এমনকি সমিতির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর; অসদুদ্দেশ্যে সমিতির অবসায়নের জন্যে ১৮ ডিসেম্বর-২০২৩ তারিখে বিশেষ সাধারন সভা করেছে। সমিতির সদস্য সংখ্যা পাঁচ হাজার হলেও সভায় উপস্থিত ছিল সর্বোচ্চ পাঁচ’শ সদস্য।

বিদ্যমান সমবায় আইন ও বিধিমালা অনুয়ায়ী সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের অনুপস্থিতিতে অবসায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন বেআইনী। ওয়াসা কর্তৃপক্ষের এহেন অবৈধ পদক্ষেপের সাথে হাত মিলিয়েছে সমিতির অর্থ আত্মসাতকারি দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাও। অন্যদিকে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত ৪৬ কর্মকর্তা সমবায় অধিদপ্তর কর্তৃক সম্পাদিত ৪৯(১)(ঙ) ধারার তদন্ত প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে যৌথভাবে সমবায় অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। এটাকে সংশ্লিষ্ট মহল ”চুরি আবার সীনা জুড়ি” বলে আখ্যায়িত করেছেন।

পিপিআই প্রকল্পের বড় সুবিধাভোগি ও শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা কো-চেয়ারম্যান হাসিবুল হাসান,জাবের হোসেন ও শহীদুল ইসলাম এবং অন্তর্বর্তি কমিটির(বেআইনী) চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামানও নিজেদের নির্দোষ দাবি করে সমবায় অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। যা নিয়ে ঢাকা ওয়াসায় হাস্যরস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সাধারন সদস্যদের স্বার্থ রক্ষার্থে সমিতির সম্পদ আত্মসাত ও দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচার জন্যে লুটেরাদের গৃহীত বেআইনীভাবে সমিতির অবসায়নের উদ্যেগ বন্ধকরন এবং ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সমিতির(পিপিআই প্রকল্প সহ) দায়িত্বে থাকা সকল কর্মকর্তার(সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটির সকল সদস্য,পিপিআই পরিচালনা কমিটির সকল চেয়ারম্যান,কো-চেয়ারম্যান ও সদস্য এবং পিপিআইভূক্ত ৭টি রাজস্ব জোনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক) জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ ও লুটপাটের বিষয়ে অধিকতর অনুসন্ধান পূর্বক দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানানো হয়েছে আবেদনে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *