কর অঞ্চল -৯ এর আলোচিত ৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর অঞ্চল-৯এর উত্তরা এলাকায় পাঁচ সিন্ডিকেট মিলে অবৈধভাবে করদাতাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা । এই অভিযোগগুলো পাওয়া গেছে দুর্নীতি দমন কমিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগকারীর মাধ্যমে। এই দুর্নীতিবাজরা হলো ৪ নাম্বর রেঞ্জের করঅঞ্চল – ৯, সার্কেল-১৮২ ও ১৯১ এর উচ্চমান সহকারী মো .ফয়সাল আহমেদ , অফিস সহকারী মো. শরিফুল ইসলাম , সার্কেল-১৮৬, অফিস সহকারী মো. আল আমিন, সার্কেল-১৭৭, এরিয়ার সুপারভাইজার চঃদাঃ (অফিস সহকারী) শাহিনুজ্জামান শাহিন ও সার্কেল-১৯১, অফিস সহকারী মো. আল-আমিন ওরফে ছোট আল আমিন । তারা সবাই ওইকর অঞ্চলে কর্মরত আছেন। তারা সিন্ডিকেট করে অফিসকে ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি ও অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তারা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঢাকার শহরে আলিশান ফ্ল্যাটও প্লট ক্রয় করে আলিশান ভাবে দিন যাপন করছেন। অভিযোগ পাওয়া গেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই করদাতাদের বিভিন্ন ধরনের প্যাঁচ ফেলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে তারা ।
তারা যৌথভাবে মিলি আয়কর দাতাদের হয়রানি করার জন্য তাদের কাছে ফোন করে বলে আপনাদের আয়কর নথির ভুল রয়েছে । এইজন্য আপনাদের কাছে নোটিশ পাঠানো হবে এই বলে তাদের কাছে ফোন করে বলে আপনারা যদি টাকা দেন তাহলে নথির ঠিক করে দিব । করদাতারা টাকা দিতে অসুবিধা জানালে তখন ওই সিন্ডিকেটরা বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হয়রানি মাধ্যমে টাকাগুলো হাতিয়ে নেন।
ওই সিন্ডিকেটের প্রধান মো. ফয়সাল আহমেদসহ ওই চারজনকে নিয়ে তাদের সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। সবারই একই প্রশ্ন ছোট একটি চাকরি করি কিভাবে এত সম্পত্তির মালিক হইলেন। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের ব্যাপারে যেন দেখার কেউ নেই ! সিন্ডিকেটের সদস্যদের ব্যাপারে উত্তরায় বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট, জমি ক্রয় করেছেন বলে অভিযোগও পাওয়া গেছে। এমনকি ঢাকার আশপাশে সিন্ডিকেট মিলে জমি ক্রয় করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। তাদের এই অপকর্ম কাণ্ডে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাও কর্মচারীদের মধ্যে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
ফয়সাল আহমেদের নরসিংদী জেলা হওয়ার কারণে অটল সম্পত্তির মালিক মতিউর রহমানের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ফয়সাল তার সিন্ডিকেট বাহিনী দিয়ে একের পর এক দুর্নীতি ও অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার দক্ষিণ খানের বাসিন্দা মাকসুদ হোসেন পাটোয়ারী লিখিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ করেন। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন ফয়সাল আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সিন্ডিকেট মিলে উত্তরার রেঞ্জ চারের কর অঞ্চল – ৯ এর ওইসব সার্কেলে করদাতাদের হয়রানিও সুকৌশলী তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সিন্ডিকেটটি।
তিনি অভিযোগ দুইটি দাখিল করেছেন চলতি বছরের জুন মাসের ২৫ তারিখে ।তিনি অভিযোগে আরো উল্লেখ করছেন ফয়সাল আহমেদের অবৈধ সম্পত্তির বিবরণী- প্লট নাম্বার ৪, রোড নাম্বার ২, ঝিলমিল আবাসিক এলাকা কেরানীগঞ্জ। উক্ত প্লটটি তিনি আড়াই কোটি ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। প্লট নাম্বার ৬০ রোড নাম্বার ৫ ব্লক সি পিয়াংকা সিটি উত্তরা উক্ত প্লটটি তার স্ত্রী নামে দুই কোটি ৪০ লাখ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। এছাড়াও উত্তরার ১৮ নম্বর সেক্টরে পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে একটি প্লট ক্রয় করেছেন সেই প্লটে সাত তলা বাড়ি নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন বল অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার নামে বে নামে অনেক সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
একইভাবে মো. শরিফুল ইসলাম উত্তরার ১ ও ৩ নাম্বার রোডে প্রিয়াঙ্কা সিটি টে প্রায় ৬ কোটি টাকা দিয়ে দুইটি প্লট কিনেছেন। এবং উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরে চার কোটি টাকা দিয়ে একটি প্লট কিনে পাঁচ তলা নির্মাণাধীন ভবনের কাজ শুরু করেন বলে অভিযোগে রয়েছে। এছাড়াও সবাই মিলে গাজীপুর আশুলিয়া ও সাভারে অনেক জমি ক্রয় করেছেন।অভিযোগে বলা হয়েছে তারা দুর্নীতি ও অপকর্ম করে বিলাসবহুল ভাবে জীবন যাপন করছেন।
এ ব্যাপারে ফয়সাল আহমেদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমরা ছোটখাটো চাকরি করি আমাদের এত সম্পদ নেই। আমাদেরকে হয়রানি করার জন্য এসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তাদের বিষয়ে তদন্ত করলে সবকিছু বেরিয়ে আসবে। ভুক্তভোগী করদাতারা ও অভিযোগকারী দাবি সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের কাছে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চেয়ে আহ্বান জানান ।