নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ব্যাংকের দেয়া প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিটি বাণিজ্যিক ব্যাংক বাড়তি ২০০ কোটি টাকা করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ পেয়েছে। সেই সঙ্গে ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানগুলো পাচ্ছে ৭ শতাংশ সুদে ঋণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব নীতির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়বে যা পুঁজিবাজারমুখী করবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও। তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মৌলিক বিষয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন না এনে, কেবল বাজারে তারল্য সরবরাহে দীর্ঘমেয়াদি সুফল আসবে না।
বছরের শুরুতে ধারাবাহিক পতনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক কমে ৯ শতাংশ। লেনদেন নেমে আসে আড়াই থেকে ৩০০ কোটির ঘরে। পরিস্থিতির বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সরকারি প্রতিষ্ঠান বাজারে তালিকাভুক্তি, আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়ানোসহ বেশকিছু দিকনির্দেশনা আসে। এর ধারাবাহিকতায় গেল সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংককে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে ২০০ কোটি টাকার তহবিল গঠনের সুযোগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। একই সঙ্গে দেয়া হয়, ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে ৭ শতাংশ সুদে ঋণ নেয়ার সুযোগ।
বাংলাদেশ মার্চেট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান বলেন, যেহেতু আমরা মার্কেটকে সাপোর্ট দেব। মার্কেটে টাকা আসলে বিনিয়োগ বাড়বে। সে সময়ে বাজারের প্রতি সবার আগ্রহ বাড়বে, ইনডেক্স বাড়বে এবং শেয়ারের দামও বাড়বে। কেননা সবাই লাভ করতে চায়। যখনই নি¤œমুখী হয়, তখনই আগ্রহ কমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারির পর তিন কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ১৭৯ পয়েন্ট। দৈনিক লেনদেনও দীর্ঘদিন পর ছাড়িয়েছে ৭০০ কোটি টাকা। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করেন বাজারের এ গতি টেকসই হবে না।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এ ধরনের ইন্টারভেনশ কয়েক সপ্তাহ থাকবে। পরে আবার যেখানে ছিল সেখানে চলে যাবে। যদি না ইকোনোমিক ফান্ডামেন্টালগুলো ইকোনোমিভাবে পরিবর্তন না করি। অর্থাৎ মানি মার্কেট ব্যাংকিং খাত, ব্যাংকি খাত এবং অন্যান্য লাভজনকপ্রতিষ্ঠানের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি। তাহলে বাজার আবার ঘুরে দাঁড়াবে।
এরই মধ্যে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও রাষ্ট্রীয় জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সাত প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।