এলজিইডি’র ভবনের ইনসেটে তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী মমিন মুজিবুল হক সমাজী ওরফে টুটুল সমাজি।
নিজস্ব প্রতিবেদক : মমিন মুজিবুল হক সমাজী ওরফে টুটুল সমাজি। তিনি এলজিইডির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক এবং একজন ইউ টিউবার ছাড়াও ডার আরেকটি পরিচয় ও মিলেছে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এর একান্ত আস্থাভাজন। তিনি টেন্ডারের বেলায় মি: ৫%, নিয়োগ বানিজ্যে ৫০% আর ঘুষের বেলায় সিদ্ধহস্ত।
তাকে নিয়ে আজ সাজানো হয়েছে আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। এলজিইডির সংশ্লিষ্ট সুত্রের দাবি ধনাঢ্য, ঘুষ দুর্নীতিতে সিদ্ধস্হ ও তার নির্মিত বিভিন্ন কনটেন্টে অন্যদের ঘুষ গ্রহণে উৎসাহিত করার ঘটনায় তিনি বেশ আলোচিত ও সমালোচিত।
এলজিইডি’র একাধিক সূত্র জানায়, মমিন মুজিবুল হক পাবনা অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও উইকেয়ার নামের একটি প্রকল্পের পিডি। ইতিপূর্বে তিনি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প ও ভোলা জেলা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি ছিলেন।
ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করা ও পরবর্তীতে সরকারি চাকরির পাশাপাশি প্রত্যক্ষ ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।অতিধুরন্ধর ও দুর্নীতিবাজ এই প্রকৌশলী চাকুরী জীবনের শুরুতেই ব্যাপকভাবে ঘুষ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
সহকারী প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক সবখানে তিনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সুচারুভাবে পালনের থেকেও ঘুষ গ্রহনের দিকে নজর দিতেন। তিনি সহকারী প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় ধানমন্ডির মতো অভিজাত এলাকায় ৫টি ফ্ল্যাট কিনেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের পিডি থাকা অবস্থায় বিভিন্ন জেলা উপজেলায় যে কয়টি স্মৃতি স্তম্ভ গুলো নির্মাণ করে ছিলেন তার ৮০ ভাগ টাকা তার পকেটে গেছে।
জানা গেছে , তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীকে অনুমোদনের চিঠি পাঠিয়ে বলে দিতেন তাদের টাকা দিয়ে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করতে এবং পরবর্তিতে ভুয়া টেন্ডার দেখিয়ে সমুদয় অর্থ লুটপাট করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর ভোলা জেলা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পিডির দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে তার অনিয়ম দুর্নীতি আরো বেড়ে যায়।
সূত্রটি আরও জানায়, ৫ % ঘুষ নিয়ে রাস্তা ও ব্রীজের অনুমোদন দিতেন আবার ফান্ড আসলে ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়ে দিতেন ঠিকাদার থেকে ২% টাকা আদায় করতে এবং তার কাছ থেকে কড়ায়গণ্ডায় ঘুষের টাকা আদায় করতেন। বর্তমানে সমাজি উইং কেয়ার নামে একটি প্রকল্পের পিডি। সেই প্রকল্পের জনবল নিয়োগ ও কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগে মোটা অংকের ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা নগ্নভাবে রাজনীতি করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সমাজি নগ্নভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন এবং বলতেন অবসরে গেলেই পাবনার নিজ এলাকা থেকে এমপি নির্বাচন করবেন তাই অনেক গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করছেন।
সূত্র জানায়, জুলাই -আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন সংগ্রামের ফলে ৫ আগষ্ট আ’ লীগ সরকারের পতনের পর কয়েকদিন গা ঢাকা দেন টুটুল সমাজি। এখন অফিসে আসলেও খুব কম সময় অফিসে থাকেন। জানা যায় বিগত ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকারের সময় টুটুল সমাজি দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন।
সূত্র আরো জানায়, শেখ মহসিন যখন এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী তখন প্রায় ২ হাজার জনবল নিয়োগ দেয়। জিবির এই নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়। সমাজি প্রায় ৫০ জন লোক নিয়োগের চুক্তি করে এবং শেখ মহসিনের সাথে ওই নিয়োগে মাথাপিছু ১০ লাখ টাকা হারে ঘুষ নেন, যার অর্ধেক টাকা সমাজি বাকি অর্ধেক টাকা শেখ মহসিনকে দেয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
টুটুল সমাজির অঢেল সম্পদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে আগামীতে টুটুল সমাজির অঢেল সম্পদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে, এ বিষয়ে আজকের দেশ ডটকম পরিবারের সদস্যরা তাদের তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন।