রাজউকের সাবেক আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রেতাত্মা চিহ্নিত  রাকিবুল আল মামুন ওরফে আর এ মামুন  অবৈধ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অন্যদের রাখতেন তটস্থ  অবস্থায় 

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি

!!  অবৈধ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে কোটি কোটি টাকার ব্যবসাও বাগিয়ে নেন। এসব ঘটনায় আর এ মামুনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য অভিযোগ বিগত সময়ে জমা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সুকৌশলে তিনি থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে আর এ মামুন ভোল পাল্টে ফের নিজেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ঘনিষ্ঠজন এবং গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ছোট ভাই হিসেবে সর্বত্র পরিচয় দিচ্ছেন এবং যথারীতি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দাপট খাটাচ্ছেন। তার দৌরাত্ম্যে রীতিমতো কাবু রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তারাও। জানা গেছে, আর এ মামুনের পেশা মূলত প্রতারণা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকারের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করাই তার কারবার। তার প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী এখনও প্রতিকারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সূত্রের খবর, আর এ মামুন গুলশান-১ এর ১৫ নম্বর রাস্তার ন্যাম ভিলা প্রকল্পের ২-ডি-১ ফ্ল্যাটটি বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ানক প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। রাজউকের রেকর্ড বলছে, ফ্ল্যাটটির বরাদ্দগ্রহীতা মাহমুদ মামুন। ২০০৬ সালের ৩ নভেম্বর রাজউকের দখলগ্রহণকারী চিঠিতে মাহমুদ মামুনের নাম থাকলেও হঠাৎ করেই সেটি হয়ে যায় আর এ মামুনের নামে। সেখানে রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দায় দেখছেন ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, আর এ মামুন নিজের পরিচয় গোপন করে মাহমুদ মামুনের নামে বরাদ্দ নিয়ে আবার জালিয়াতির মাধ্যমে সেই ফ্ল্যাটের আম-মোক্তারনামা নিজের নামে নিয়ে নেন। জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগে ২০০৯ সালে ৪ সেপ্টেম্বর ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানেও মামুনের অন্যায়ভাবে ক্ষমতার দাপট খাটানোর অভিযোগ তুলে ধরা হয়।এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে আরেক কাণ্ড ঘটান মামুন। রাজউকের ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী ফ্ল্যাটের নির্ধারিত মূল্য চার কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার কথা। তবে তিনি ৩ কিস্তি পরিশোধ করে চতুর্থ কিস্তি পরিশোধ করেননি। কিন্তু দখলে রেখেছেন ফ্ল্যাটটি। ফ্ল্যাটের সমস্ত টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজউক ০১/২০১০ বোর্ড সভায় গুলশান ন্যাম ভিলা প্রকল্পের ১৫ নম্বর রাস্তার ২-ডি-১ ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট ভোগদখলকারীদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কেটে গেছে ১৪ বছর। কিন্তু অদৃশ্য কারণে রাজউক এখন পর্যন্ত দখলদার আর এ মামুনকে উচ্ছেদ করেনি। অথচ দীর্ঘ এ সময়ে তিনি চতুর্থ কিস্তির টাকাও পরিশোধ করেননি   !!


বিজ্ঞাপন
মো : রকিবুল আল মামুন ওরফে আর এ মামুন বৃত্ত চিহ্নিত। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সাক্ষাতের ছবি ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থায় ব্যাপক প্রভাব খাটাতে শুরু করেন।

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক  : মো. রাকিবুল আল মামুন ওরফে আর এ মামুন। একাধিক প্রতিষ্ঠানের এমডি ও চেয়ারম্যান তিনি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলো স্রেফ নামসর্বস্ব। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি নিজেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভাগনে হিসেবে পরিচয় দিতেন। কখনও বলতেন প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর বন্ধু। আবার কখনো গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ছোট ভাই। এসব পরিচয়ে বিভিন্ন অফিস আদালতে বিস্তর প্রভাব খাটাতেন তিনি। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপির সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। শুধু তাই নয়। রানা গ্রুপের চেয়ারম্যান পরিচয়ে আর এ মামুন একসময় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সাক্ষাতের ছবি ব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, সংস্থায় ব্যাপক প্রভাব খাটাতে শুরু করেন তিনি।


বিজ্ঞাপন

অবৈধ ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে কোটি কোটি টাকার ব্যবসাও বাগিয়ে নেন। এসব ঘটনায় আর এ মামুনের বিরুদ্ধে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসংখ্য অভিযোগ বিগত সময়ে জমা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই সুকৌশলে তিনি থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। বর্তমানে আর এ মামুন ভোল পাল্টে ফের নিজেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ঘনিষ্ঠজন এবং গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের ছোট ভাই হিসেবে সর্বত্র পরিচয় দিচ্ছেন এবং যথারীতি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দাপট খাটাচ্ছেন। তার দৌরাত্ম্যে রীতিমতো কাবু রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তারাও।

জানা গেছে, আর এ মামুনের পেশা মূলত প্রতারণা। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকারের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করাই তার কারবার। তার প্রতারণার শিকার বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী এখনও প্রতিকারের আশায় প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সূত্রের খবর, আর এ মামুন গুলশান-১ এর ১৫ নম্বর রাস্তার ন্যাম ভিলা প্রকল্পের ২-ডি-১ ফ্ল্যাটটি বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ানক প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। রাজউকের রেকর্ড বলছে, ফ্ল্যাটটির বরাদ্দগ্রহীতা মাহমুদ মামুন।

২০০৬ সালের ৩ নভেম্বর রাজউকের দখলগ্রহণকারী চিঠিতে মাহমুদ মামুনের নাম থাকলেও হঠাৎ করেই সেটি হয়ে যায় আর এ মামুনের নামে। সেখানে রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার দায় দেখছেন ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বাসিন্দারা। তাদের অভিযোগ, আর এ মামুন নিজের পরিচয় গোপন করে মাহমুদ মামুনের নামে বরাদ্দ নিয়ে আবার জালিয়াতির মাধ্যমে সেই ফ্ল্যাটের আম-মোক্তারনামা নিজের নামে নিয়ে নেন।

জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগে ২০০৯ সালে ৪ সেপ্টেম্বর ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানেও মামুনের অন্যায়ভাবে ক্ষমতার দাপট খাটানোর অভিযোগ তুলে ধরা হয়।এদিকে জালিয়াতির মাধ্যমে ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে আরেক কাণ্ড ঘটান মামুন। রাজউকের ফ্ল্যাট বরাদ্দ নীতিমালা অনুযায়ী ফ্ল্যাটের নির্ধারিত মূল্য চার কিস্তির মাধ্যমে পরিশোধ করার কথা। তবে তিনি ৩ কিস্তি পরিশোধ করে চতুর্থ কিস্তি পরিশোধ করেননি। কিন্তু দখলে রেখেছেন ফ্ল্যাটটি।

ফ্ল্যাটের সমস্ত টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজউক ০১/২০১০ বোর্ড সভায় গুলশান ন্যাম ভিলা প্রকল্পের ১৫ নম্বর রাস্তার ২-ডি-১ ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। একই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট ভোগদখলকারীদের উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর কেটে গেছে ১৪ বছর। কিন্তু অদৃশ্য কারণে রাজউক এখন পর্যন্ত দখলদার আর এ মামুনকে উচ্ছেদ করেনি। অথচ দীর্ঘ এ সময়ে তিনি চতুর্থ কিস্তির টাকাও পরিশোধ করেননি।

এদিকে ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির বাসিন্দারা মামুনের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ হয়ে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেন। রাজউক, গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রীসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো কূলকিনারা করতে পারেননি তারা। উল্টো মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবকে দিয়ে রাজউক চেয়ারম্যানকে ফোন করিয়েছেন আর এ মামুন, যেন তার কিস্তির টাকা নিয়ে বরাদ্দ পুনর্বহাল করা হয়।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, গত সপ্তাহে কোনো একদিন রাজউকের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ছিদ্দিকুর রহমান সরকারকে (অব.) টেলিফোনে এক কর্মকর্তা মামুনের আবেদনের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন। এরপর রাজউকের সংশ্লিষ্ট শাখাকে নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। সেই নির্দেশনা মোতাবেক রাজউকের এস্টেট ও ভূমি-১ শাখা থেকে আইনি মতামত চেয়ে রাজউকের আইন শাখায় পাঠানো হয়েছে। আইন শাখা থেকে যে মতামত দেওয়া হবে সেভাবেই ব্যবস্থা নেবে এস্টেট ভূমি-১ শাখা।

রাজউকের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যম কে  বলেন, আইনগতভাবে তার (মামুন) আর সুযোগ পাওয়ার কথা না। তবে যেহেতু এ বিষয়ে উচ্চমহলের নির্দেশ রয়েছে, তাই আমরা কিছু বলতে পারব না। আইন শাখা যেভাবে মতামত দেবে সেভাবেই হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজউকের পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-১) মো. কামরুল ইসলাম গণমাধ্যম কে  বলেন, আইনগতভাবে এখন আর বাকি কিস্তির টাকা আর পরিশোধের সুযোগ পাওয়ার কথা নয়। তবে সেই সিদ্ধান্ত বোর্ড নেবে। বোর্ড যদি বিবেচনা করে তাহলে তো আর কথা নেই। তবে এ রকম নজির নেই। এখন বরাদ্দ বাতিল হলে নতুন করে বরাদ্দের জন্য আবেদন চাওয়া হবে। এটাই নিয়ম।

এ বিষয়ে জানতে রাকিবুল আল মামুনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায় বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।

ন্যাম ভিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একাধিক বাসিন্দা গণমাধ্যম কে  বলেছেন, ২-ডি-১ ফ্ল্যাটে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ হয়। আমরা প্রতিবাদ করলে হুমকি দেয়। মামুন সাহেব একাই অবৈধভাবে ৬টি পার্কিং দখল করে রেখেছেন। তিনি পোর্ট থেকে চোরাই গাড়ি এনে এখানে গ্যারেজে রেখে কিছুটা পরিবর্তন করে বিক্রি করে দেন। এর আগে আর এ মামুন একাধিকবার মাদকসহ গ্রেপ্তার হলেও কৌশলে আইনি জালের বাইরে বেরিয়ে আসেন। থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তার ভয়ে অভিযোগকারীরা কেউ নিজ পরিচয় পর্যন্ত দিতে ইচ্ছুক নন।

গত শনিবার গুলশান ন্যাম ভিলা প্রকল্পের ২-ডি-১ ফ্ল্যাটের সামনে দেখা যায় মামুন নিজের মতো করে ফ্ল্যাটের বাইরের অবয়ব পরিবর্তন করেছেন। সেখানে বসার জন্য তিনটি চেয়ার। এ ছাড়া নামফলকে লেখা রয়েছে ‘বেলা শেষে’। সাধারণত সরকারি ফ্ল্যাট বরাদ্দের ক্ষেত্রে কিছু শর্তজুড়ে দেওয়া হয়। এখানেও বরাদ্দপত্রের নবম অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে কোনো ফ্ল্যাটের অবকাঠামো পরিবর্তন করা যাবে না।

এ ছাড়া ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে কোনো অবস্থাতেই ফ্ল্যাটের কমন স্পেস ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু আর এ মামুন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ফ্ল্যাটের পূর্ব, উত্তর এবং পশ্চিম দিকে ৩টি দরজা স্থাপন করেছেন। এত কিছু জেনেও নিশ্চুপ রাজউক। সরকারি এই সংস্থাও মামুনের ক্ষমতার কাছে রীতিমতো কাবু।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *