বিনোদন প্রতিবেদক : শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ, সঙ্গীতশিল্পী রুবিয়া মল্লিকা গজারিয়া উপজেলার গোসাইর চর গ্রামের একজন কৃতিমুখ। তিনি ভারতের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সঙ্গীত বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন। তার গানের প্রথম ও অনেকগুলো অ্যালবাম প্রকাশিত হয় কলকাতা থেকে। তিনি সেই সৌভাগ্যবান শিল্পীদের একজন, যিনি কলকাতায় এক মঞ্চে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী নচিকেতা ও শুভমিতার সঙ্গে গান পরিবেশন করেছেন। প্রয়াত বরেণ্য সঙ্গীত ব্যক্তিত্ব আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এর কথা ও সঙ্গীতায়োজনে তার একটি অ্যালবামও প্রকাশিত হয়েছে। এখন তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিয়মিত একক ও যৌথ সঙ্গীত পরিবেশন করছেন।
সঙ্গীতশিল্পী রুবিয়া মল্লিকা প্রথম ‘সোনারং তরুছায়া’য় ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে সঙ্গীত পরিবেশন করে দর্শকের মনে যায়গা করে নেন। গত ১৯ অক্টোবর ‘গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার প্রাঙ্গণ’ এ ‘গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার’ এর একটি ম্যুরাল উন্মোচন করেন তাঁর সহধর্মিনী জোহরা গাজী। সঙ্গীতশিল্পী রুবিয়া মল্লিকার উপস্থিতিতে ওই অনুষ্ঠানটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে গাজী মাজহারুল আনোয়ার এর ৮১তম জন্মবার্ষিকীতে রুবিয়া মল্লিকাকে ‘গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার সোনারং তরুছায়া সঙ্গীত সম্মাননা ২০২৪ প্রদানের ঘোষণা দেন।
গজারিয়ার বাঁশগাঁও গ্রামের ঈদগাহের পার্শ্ববর্তী তার দৃষ্টিনন্দন বাড়ি ‘চন্দ্রমল্লিকা’তে আলাপচারিতায় তাকে একটুখানি তুলে ধরার প্রচেষ্টা, তার সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেন, আসসালামু আলাইকুম! আমি গান করি।
আমি একজন কণ্ঠশিল্পী। আমার নাম রুবিয়া মল্লিকা। আমি ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতচর্চা করে আসছি। আমার হাঁটি হাঁটি পা পায়ের পর থেকে, সাত বছর বয়স থেকেই সঙ্গীত শেখা শুরু হয়েছে। এখনও শিখছি। ভবিষ্যতে আরও শিখে যাবো। এটাই সঙ্গীত নিয়ে আমার ভাবনা। বিশেষ করে আমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতচর্চা করে থাকি।
যা আমার বিশ্বভারতী থেকে শেখা। সব ধরনের গান করতেই আমি চেষ্টা করি। নজরুল সঙ্গীত, ঠুমরি, ভজন, গজল, পুরোনো দিনের গান~সবকিছু মিলিয়েই আমি করে থাকি।
আমার সঙ্গীতচর্চার পেছনে, আমার আজকের এই পর্যন্ত আসার পেছনে যিনি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছেন, তিনি আমার মা। মা আমার জন্য অনেক যুদ্ধ করেছেন। কষ্ট করেছেন। মায়ের জন্যই আমার এই পর্যন্ত আসা। আমি বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে গান করে থাকি। যতদিন বাঁচবো গান করে যাবো। সবার সহযোগিতা পেলে আরও ভালোভাবে করবো।
আমি যাঁদের গান পছন্দ করি তাঁদের মধ্যে শ্রদ্ধেয় রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন, ওপার বাংলার লতা মুঙ্গেশকর, আশা ভোঁসলের গান আমি করে আসছি। ভবিষ্যতেও করে যাবো এটাই আমার আশা।
পুরোনো দিনের গান আমার ভীষণ ভালো লাগে। আমি সেই ভালো লাগা থেকেই সব সময় গেয়ে থাকি। আমার সঙ্গীতের আরেকটি অর্জনের কথা না বললেই নয়। শ্রদ্ধেয় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আমার গুরুজি এবং আমার অতি শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্ব। তাঁর লেখা এবং সুর করা আমার একটি অ্যালবামও রয়েছে।
আসলে আমার গান শিক্ষা বিশ্বভারতী থেকে। আমার পণ্ডিতজী’র নাম সুনীল চক্রবর্তী। তাঁর অনেক অবদান রয়েছে আমাকে তৈরি করার ক্ষেত্রে। আমাকে অনেক কষ্ট করে শিখেয়েছেন। আমিও রপ্ত করতে পেরেছি। বেশিরভাগ ক্লাসিক্যাল উচ্চাঙ্গ গান তাঁর কাছ থেকে শেখা।
আর আমার জীবনের প্রথম সিডি ইন্ডিয়ার সাগরিকা কমপ্লেক্স থেকে বের হয়েছে। আমার জীবনের প্রথম রেকর্ডিংও সেখানে হয়েছে। কলকাতায় রেকর্ডিস্ট ছিলেন শ্রদ্ধেয় রুদ্র দত্ত। রুদ্র দত্ত দাদার সুরেও আমি গান করেছি। ইন্ডিয়া থেকে আমার আরও তিন চারটি অ্যালবাম বের হয়েছে। আমি গান করে যাচ্ছি। চিরকাল গান করে যাবো। সবাইকে ধন্যবাদ ও অনেক অনেক শুভেচ্ছা।