বিশেষ প্রতিনিধি : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে বেপরোয়া চোরাকারবারিরা। অর্ধশতাধিক চোরাকারবারি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা এলাকা। প্রতিনিয়ত চিনি, মাদক ও গরুসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ভারত থেকে নিয়ে আসছে এরা। অবৈধভাবে নিয়ে আসা এসব পণ্য সড়ক ও নৌপথে সিলেট শহর, কোম্পানীগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজার ও ছাতক উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের সীমান্ত লাগোয়া তুরং, মাঝেরগাঁও, বরমসিদ্ধিপুর, মাঝেরটুক, নাজিরেরগাঁও, উৎমা, লামাগ্রাম ও কালাইরাগ পয়েন্ট দিয়ে চোরাকারবার হয়।
উপজেলার ৫নং উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের তুরুং, উৎমা, মাঝেরগাঁও ও বরমসিদ্দিপুর এবং কালাইরাগসহ সীমান্ত এলাকা হওয়ায় সেখান থেকে নিয়মিত ভারতীয় অবৈধ চিনি, ভারতীয় অবৈধ নাছির বিড়ি, মদ, ফেন্সিডিল সহ মাদকদ্রব্য বাংলাদেশে আসছে। আর এসবের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাকিম আহমদ ফরহাদ ও তার গড়া নিজস্ব বাহিনী।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাকিম আহমদ ফরহাদ, যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন, আবু বকর, আলা উদ্দিন, ওসমান গনি, শাহাব উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, রফিক আহমদ, আওয়ামী লীগ নেতা আলী নুর এর নেতৃত্বে চলছে পুলিশ ও বিজিবির নামে টাকা উত্তোলন এবং চাঁদা আদায় করছে। অবৈধভাবে ভারতের চিনি ও মাদকদ্রব্য অবৈধ ব্যবসা থেকে পুলিশ বিজিবির নাম ভাঙ্গিয়ে এদের সিন্ডিকেট প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এবং জাতীয়তাবাদী যুবদলের সুনাম বিনষ্ট করে ফায়দা লুটছে এই সিন্ডিকেট।
৫নং উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জানান, উল্লেখিত যুব নেতারা চাঁদা বাণিজ্য করে দলের ইমেজ ধ্বংস করছে এদের বিরুদ্ধে কঠিন সাংগঠনিক ব্যবস্হা নেওয়া জরুরি দরকার।
কিছুদিন আগে চিনি এবং চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের ভিডিও প্রকাশ করতে গিয়ে সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুক পেইজ “ম্যাসেজ টিভির” আব্দুল গফফার সহ কয়েকজন আহত হন, পরে আব্দুল গফফার বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
১৪ সেপ্টেম্বর চাঁদা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে একটি মারামারি সংঘটিত হয়। এতে উত্তর জাঙ্গাইলের আইয়ুব আলী বাদী হয়ে যুবদল কর্মী নিজাম উদ্দীন, আবু বক্কর সহ ১৩ জনকে আসামি করে সিলেট জজকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য যে, ২০১৩ সালে ছাত্রলীগ থেকে যুবদলে যোগদানকৃত নিজাম উদ্দিন, আবু বক্কর নিজেকে এখন স্বঘোষিত নেতা দাবি করছে জাতীয়তাবাদী যুবদলের নাম ব্যবহার করে এই সক্রিয় সিন্ডিকেট ৫নং উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের তুরুং, উৎমা, নাপিতকাল ও মাঝেরগাঁও এবং বরমসিদ্দিপুর, কালাইরাগ এলাকায় ভারতীয় চিনি ও মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রতিদিন পুলিশ ও বর্ডার গার্ড বিজিবির নাম ব্যবহার করে চাঁদা উত্তোলন করছেন বলে তথ্যে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতি ৫০ বস্তা চিনি হইতে তাহারা ৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন বলে একটি সূত্রে জানা যায়। আগষ্টের ৫ তারিখের পরবর্তী সময়ে সুযোগ কাজে লাগিয়ে যুবদলের নাম ভাঙ্গিয়ে অনেক টাকা উত্তোলন করেন এবং টাকা উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে বড় ধরনের মারামারি ও সংঘটিত হয়।(