নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎকালে আইএমও নির্বাচনে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর সমর্থন চাইলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা

Uncategorized অর্থনীতি জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : বাংলাদেশ ২০২৪-২৫ মেয়াদে আন্তর্জাতিক মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের সি-ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত হয়ে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে। এরই ধারাবাহিকতায় আসন্ন (২০২৬-২৭ মেয়াদে) আইএমও কাউন্সিলের নির্বাচনে ক্যাটাগরি ‘সি’-এর সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিদ্বন্দিতা করছে উল্লেখ করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোর সমর্থন কামনা করেছেন নৌপরিবহন ও শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।


বিজ্ঞাপন

তিনি গতকাল  মঙ্গলবার সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হাকন আরাল্ড গুলব্রান্ডসেন এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ আহবান জানান।

এ সময় নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও ভুক্ত সকল সদস্য রাষ্ট্রের মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে বাংলাদেশের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন এবং নরওয়ের পক্ষেও আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের সমর্থন কামনা করেন। জবাবে উপদেষ্টা নরওয়ের প্রতি বাংলাদেশের অকুন্ঠ সমর্থন থাকবে মর্মে রাষ্ট্রদূতকে জানান।


বিজ্ঞাপন

সাক্ষাৎকালে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত শিপিং সেক্টরে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে প্রণীত আইএমও নেট জিরো ফ্রেমওয়ার্ক বাস্তবায়ন বিষয়ে আলোকপাত করেন।


বিজ্ঞাপন

নৌপরিবহন উপদেষ্টা আইএমও কনভেনশন বাস্তবায়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং সমুদ্র দূষণ রোধে বাংলাদেশের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।

মেরিটাইম সেক্টরে কার্বন নিঃসরণ কমাতে বর্তমান সরকার যুগোপযোগী ও কার্যকর নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়ে

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম মেরিটাইম কান্ট্রি। এদেশের প্রায় দুই তৃতীয়াংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মেরিটাইম সেক্টরের উপর নির্ভরশীল। মেরিটাইম সেক্টরকে কার্বন মুক্ত করতে বন্দরগুলোতে অটোমেশন ও আধুনিক প্রযুক্তি চালু করা হচ্ছে। জাইকার সহযোগিতায় ন্যাশনাল পোর্টস স্ট্রাটেজি প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মোংলা বন্দরসহ অন্যান্য বন্দর গুলোকে পর্যায়ক্রমে গ্রীন পোর্ট এর রুপান্তর করা হচ্ছে।

জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন নিজস্ব অর্থায়নে চীন থেকে দ্বৈত জ্বালানি ব্যবহারে সক্ষম দুইটি জাহাজ ক্রয় করা হচ্ছে। আরো তিনটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব জাহাজ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে সরকার অভিযান পরিচালনা করছে।

তিনি আরও বলেন, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বাংলাদেশ পরিবেশগত, পেশাগত সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। ঢাকার অদূরে বুড়িগঙ্গা নদীকে দূষণমুক্ত করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমে নরওয়েসহ অন্যান্য স্ক্যানডেভিয়ান দেশগুলোর প্রযুক্তিগত ও আর্থিক সহায়তা কামনা করেন উপদেষ্টা। এছাড়াও তিনি নরওয়ে সরকারকে নরওয়ের মেরিন ইনস্টিটিউটগুলোতে বাংলাদেশের মেধাবী মেরিনার ও প্রকৌশলীদের আধুনিক ও উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা বিশ্বের মেরিটাইম সেক্টরে পরিবেশ দূষণ রোধে উন্নত বিশ্বের রাষ্ট্র সমূহকে জীবাশ্ম জ্বালানির সাহায্যে চালিত মেরিন ইঞ্জিন বা অন্যান্য যন্ত্রাংশ উৎপাদন থেকে বিরত থাকার আহবান জানান।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের শিপ রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে ধারাবাহিকভাবে সহযোগিতা করে আসছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তিনি এ শিল্পের আধুনিকায়ন এবং সমুদ্র ও শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। তিনি জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণ কাজে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়নের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আইএমও’র কার্বনমুক্ত ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বাস্তবায়নে বাংলাদেশের দৃঢ় সমর্থনের কথা জানান।

সাক্ষাৎকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *