নিজস্ব প্রতিবেদক : গুরুতর অসদাচরণের দায়ে বাংলাদেশ দন্ড বিধি ৫০৬ ধারার বিধান অনুযায়ী অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হওয়ার প্রেক্ষিতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার নন এফআইআর নং-৭৯২/২০২৪ প্রেক্ষিতে ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৮ ধারা মতে বিসিকের নিরীক্ষা সহকারী জান্নাতুল নাইম নামক একজন কর্মচারীর প্রতি আসামীর প্রতি সমন জারী করা হয়েছে। জারীকৃত সমনটিতে স্বাক্ষর রয়েছে আরফাতুল রাকিব, মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট, ঢাকা এর।
আদালতের জারীকৃত সমন এবং মামলা সংশ্লিষ্ট অভিযোগ, তদন্ত প্রতিবেদনও স্বাক্ষীদের স্বাক্ষরযুক্ত স্বাক্ষীনামা সংযুক্ত করে ফরওয়ার্ডিং দিয়ে ঢাকা জর্জকোর্ট এর এডভোকেট আমজাদ হোসেন কর্তৃক স্বীয় স্বাক্ষরে বিসিক চেয়ারম্যান, বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে কুরিয়ার সার্ভিসযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।
যার রিসিট নম্বর যথাক্রমে সি এন নং ৯১৯১৩৮, ৯১৯১৩৭ এবং ৯১৯১৩৬, তারিখঃ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪। বিসিক চেয়ারম্যান এবং বিসিকের পরিচালক (প্রশাসন) পত্রটির বিষয়ে অবগত হয়েছেন মর্মে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফৌজদারী মামলার আসামী হিসেবে সমন প্রাপ্ত সরকারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে সমন জারীর বিষয়টি অবগত হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে চাকুরী হতে সাময়িক বরখাস্ত করার বিধান বিধৃত আছে সরকারী চাকরি আইন-২০১৮ এর ৩৯ ধারার (২) নং উপধারায়। ফৌজদারী মামলা হতে খালাস প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্তসাময়িক বরখাস্ত থাকারও বিধান আছে।
আদালত কর্তৃক অভিযোগ আমলে নিয়ে ফৌজদারী মামলার আসামী জান্নাতুল নাইম, নিরীক্ষা সহকারী, নিরীক্ষা বিভাগ, বিসিক, ঢাকা এর প্রতি সমন জারী করার কারণে সরকারী চাকরি আইন ২০১৮ এর ধারা নং-৩৯ এর উপধারা (২) মতে সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার বিধান থাকলেও গত ৩ অক্টোবর বিষয়টি অবগত হওয়া সত্ত্বেও প্রতিবেদন প্রকাশের দিন (১০ নভেম্বর ২০২৪) পর্যন্ত সরকারী চাকরি আইন-২০১৮ এর বিধান অনুযায়ী আইন সংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে জানা গেছে যে, জান্নাতুল নাইম এর বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে অনীহা রয়েছে বিসিক পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবীর। জান্নাতুল নাইমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপনকারী মোঃ আবুল কালামের দাখিলকৃত অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন শৃংখলা শাখার উপ-ব্যবস্থাপক মোঃ আসিফ উল হাসান এবং পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী। যার কারণে থানা পুলিশের ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন অভিযোগকারী।
অভিযোগকারী কর্তৃক বিগত ১২ আগষ্ট ২০২৪ তারিখে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে একখানা আবেদন দাখিল করা হয়েছিল। উক্ত অভিযোগের প্রতিকার না পেয়ে ১লা সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে স্থানীয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় সাধারণ ডাইরী নং-২৫ দায়ের করা হয়।
এ ক্ষেত্রে শৃংখলা শাখার উপব্যবস্থাপক এবং পরিচালক (প্রশাসন) পারস্পারিক যোগসাজশে অভিযোগকারীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে বিসিকের কর্মচারীদের মাঝে বিবাদ সৃষ্টির মাধ্যমে অরাজক পরিস্থিতি তৈরীর পক্ষে কাজ করেছেন এবং প্রত্যক্ষভাবে জান্নাতুল নাইম এর পক্ষ অবলম্বন করেছেন।
ফৌজদারী মামলার আসামী জান্নাতুল নাইম এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিকের পরিচালক (প্রশাসন) শ্যামলী নবী এই প্রতিবেদককে জানান যে, আদালতের জারীকৃত সমন তার নজরে এসেছে এবং জান্নাতুল নাইমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
সরকারী চাকরি আইন-২০১৮ এর বিধান অনুযায়ী জান্নাতুল নাইমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হবে নাকি তার পক্ষ অবলম্বন করে ভিন্ন কিছু করা হবে এ প্রশ্নের জবাবে পরিচালক (প্রশাসন) কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি।
নথি উপস্থাপনে দীর্ঘ বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে পরিচালক (প্রশাসন) মতামত প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করেন। ফৌজদারী মামলার আসামী বিসিকের নিরীক্ষা সহকারী জান্নাতুল নাইম এর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণে আপনি অনাগ্রহী-এ প্রশ্নের জবাবে শ্যামলী নবী জানান যে, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়।
আদালত কর্তৃক অভিযোগ পত্র গৃহীত হওয়ার কারণে জান্নাতুল নাইম, নিরীক্ষা বিভাগ, বিসিক, ঢাকা ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখ হতে সাময়িক বরখাস্ত আদেশ জারী করা এবং মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব বিসিক কর্তৃপক্ষের। একই সাথে শৃংখলা শাখার উপব্যবস্থাপক এবং পরিচালক (প্রশাসন) এর পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের বিষয়েও ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন মনে করেন প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।