কথিত সাংবাদিক প্রতারক হারিজের কারখানায় ভেজাল সার উৎপাদন : ব্যহত হচ্ছে ফসলের উৎপাদন, জমি হারাচ্ছে উর্বরতা,  লাখো কৃষক নিঃস্ব

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি (সিরাজগঞ্জ)  :  সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলার গাঁড়াদহ ইউনিয়নের মশিপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামে অবস্থিত হারিজ এগ্রো কেয়ার নামক একটি প্রতিষ্ঠানে ভেজাল উপকরণে উৎপাদন করা হচ্ছে নকল সার!


বিজ্ঞাপন

হারিজ এগ্রো কেয়ার নামক প্রতিষ্ঠানে ভেজাল সার উৎপাদনের তথ্য পাওয়া যায় একটি গোপন সংবাদের মাধ্যমে।


বিজ্ঞাপন

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হারিজ এগ্রো কেয়ার কারখানায় সাংবাদিকদের  অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে হারিজ এগ্রো কেয়ার এর ভেজাল উপকরণে উৎপাদন করা নকল সারের তথ্য প্রমাণ।
কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা করছে না। অনুমোদনহীন ভাবে চালাচ্ছে এগ্রো কেয়ার!

সরজমিনে কারখানা ও গোডাউনের ভিতরে দেখা যায়, বস্তায় বস্তায় রাখা পথর, চুন,মাটি ও সিমেন্ট যা দিয়ে উৎপাদন করা হচ্ছে ডিএসপি ও কীটনাশকসহ বিভিন্ন সার,দেশের নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোড়ক ব্যবহারে,দেখতে একবারে অরিজিনাল মত এরপর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বাজারে।

লোক-চোখের অন্তরালে হারিজ এগ্রো কেয়ার এমন অনিয়ম ও প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।সার উৎপাদন করার আড়ালে চলছে কৃষকের কষ্টের আবাদি জমির ফসল ধ্বংস করার মহা উৎসব।

পাথর,মাটি,চুন ও সিমেন্ট এইসব ভেজাল উপকরণ দিয়ে উৎপাদন করা নকল সার সহজ সরল কৃষকেরা তাদের ফসলি জমিতে ব্যবহার করেছে। এতে করে ক্ষতি হচ্ছে কৃষকের জমিতে কষ্টে ফলানো সোনার ফসল।

অন্যদিকে কারখানাটির গোডাউনের গেইটে গাড়ীতে করা হচ্ছে প্যাকেট,কাটুন, ও প্লাস্টিক বস্তা লোড হচ্ছে ভেজাল উপকরণে উৎপাদন করা নকল সার যা দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বাজারজাত করার জন্য।

গোডাউনে থেকে ভেজাল সার গাড়ীতে লোড দেওয়ার সময় একজন লোডারের সাথে কথা বলে জানা যায়,এক-দুই পর পরই গাড়ীতে করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয় সার।এইসব ভেজাল সার! এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,ভেজাল হলেও কোন সমস্যা হয় না কারণ এসব সার মূর্খ কৃষকরা ফসলি জমিতে ব্যবহার করে এর জন্য তারা আসল ভেজাল বুঝার মত ক্ষমতা রাখে না।

অন্য একজন শ্রমিক কাছে ভেজাল সার উৎপাদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভেজাল সার এটা বুঝার উপায় কারো নাই। শুধু আমরা কয়েকজন শ্রমিক ছাড়া! তাহলে ভেজাল সার বুঝবে কিভাবে কৃষকরা।এছাড়াও তাকে জিজ্ঞেস করা হয় এই ভেজাল সার ব্যবহার করলে তো কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি বলেন,কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকলে তো আর কারখানার মালিক ব্যবসা চলবে না।

এই ভেজাল সার উৎপাদনকারী কারখানার বিষয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাথে কথা হলে নাম প্রকাশ না করা শর্তে তিনি বলেন,হারিজ এগ্রো কেয়ার এর মালিক মোঃ হারিজ উদ্দিন তার এই প্রতিষ্ঠানের সব প্রতারণার তথ্য অনেকেরই জানা কিন্তু স্থানীয় কিছু অসাধু কৃষি কর্মকর্তা, প্রশাসন,সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মেনেজ করেই চলছে তার প্রতারণা।

এছাড়াও সারের পেকেটের গায়ে ঠিকানা দিয়েছে ভুলে যেনো কখনো তাকে পাওয়া না যায়। পেকেটের গায়ে ঠিকানা দিয়েছে দক্ষিণ রাজাশন,সাভার,ঢাকা। যে ঢাকায় হারিজ এগ্রো কেয়ার নামের কোন প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

কারখানার ভিতরে বাহিরের লোকজন প্রবেশ নিষেধ।খুব সতর্কতার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছে কারখানা। এই ভেজাল উপকরণে সার উৎপাদন করে হারিজ বনে গেছে কোটি কোটি টাকার মালিক! অন্য দিকে হারিজ এগ্রো কেয়ার এর ভেজাল সার ব্যবহারে লাখো কৃষক নিঃস্ব। এছাড়াও তিনি আরো বলেন, ৫/৬ মাস ধরে শুনছি ভেজাল সার উৎপাদনে সুযোগ সুবিধা নিতে প্রতারক হারিজ এখন নিজে কে পরিচয় দেয় সাংবাদিক হিসেবে!

ভেজাল সার উৎপাদনের কারখানা শেল্টার দিতেই নাকি প্রতারক হারিজ হয়েছে কথিত সাংবাদিক! দেশের গণমাধ্যম কে বলে হয় সমাজের আয়না,জাতির বিবেক ও রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ।
এমন পেশায় ইচ্ছে করলেই কি যুক্ত হওয়া যায়?

এই বিষয়ে জানতে, ভেজাল সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক কথিত সাংবাদিক মোঃ হারিজ উদ্দিন সাথে কথা হলে তিনি গণমাধ্যম কে  বলেন, আমি নিজেই সাংবাদিক আমার প্রতিষ্ঠানের কোন বিষয়ে সাংবাদিকরা কখনো সংবাদ প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে না! এমন কথায় প্রতিবেদক জানতে চায় আপনি কোন মিডিয়ায় আছেন? কথিত সাংবাদিক হারিজ উদ্দিন বলেন, দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার সিরাজগঞ্জ জেলার ক্রাইম রিপোর্টার!!

এছাড়াও আমার অনেক বন্ধুবান্ধব সাংবাদিকতায় যুক্ত!ক্রাইম রিপোর্টারের কাজ কি? প্রশ্নের উত্তরে প্রতারক হারিজ উদ্দিন বলেন,সাংবাদিকতায় আমি নতুন এসেছি তাই সঠিক জানা নাই।
সাংবাদিকতার কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও নিজেকে একাধারে পরিচয় দেয় তিনি একজন ক্রাইম রিপোর্টার!  ভেজাল সার উৎপাদন করার বিষয়ে জান চাইলে,কফি খাওয়ার অফার দেয় এবং পকেটে জোরপূর্বক টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা ও করে।

প্রতারক হারিজ উদ্দিনের মত কথিত সাংবাদিক অসংখ্য রয়েছে অনেক এদের কারণে দেশের মূলধারার সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

এই বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কামরুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, হারিজ এগ্রো কেয়ার প্রতিষ্ঠানের ভেজাল সার উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমি অবগত ছিলাম না।এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে,দ্রুত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ভেজাল সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করবো।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *