জামালপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের স্মারক লিপি প্রদান

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সংগঠন সংবাদ সারাদেশ স্বাস্থ্য

মাসুদুর রহমান  : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রনাধীন মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগের যোগ্যতা স্নাতক পাশ করে বেতন স্কেল ১৩ তম গ্রেড প্রদান ও ইনসার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১১ তম গ্রেডে উন্নীতকরণ সহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর বেতন গ্রেড প্রদানের দাবীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর জেলা সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্মারক লিপি প্রদান করেছেন কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীরা । বাংলাদেশ হেলথ এসিষ্ট্যান্ট এসোসিয়েন জামালপুর জেলা শাখার আয়োজনে গত  বৃহস্পতিবার ( ২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ২ টায় জামালপুর জেলার সিভিল সার্জন ফজলুল হকের হাতে স্মারক লিপি তুলে দেন সংগঠনটির নেতারা ।
এ সময় কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সম্মানিত সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক  মোহাম্মদ শহিদুর রহমান, জামালপুর জেলার আহবায়ক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান , হুমায়ুন কবির,আল-আমিন,মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, মোঃ মতিউর রহমান,মনজুরুল ইসলাম, মোঃ হাফিজুর রহমান,মোছাঃ নাজনীন আক্তার,আঃ হাই, কামরুল ইসলাম সহ সংগঠনের বিভিন্ন নেতা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলার স্বাস্থ্য সহকারীরা উপস্থিত ছিলেন।  একটি স্মারক লিপি পেয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার  বিকেল ৫ টায়  জানিয়েছেন  জামালপুর সিভিল সার্জন ফজলুল হক জানান ।
কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন সমন্বয় পরিষদের সম্মানিত সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ হেলথ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন জামালপুর জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক  মোহাম্মদ শহিদুর রহমান জানান , মাঠ পর্যায়ে কর্মরত স্বাস্থ্য সহকারীদের জীবনমান উন্নয়নে আমাদের দাবীসমূহ বাস্তবায়নে সুবিবেচনা পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য স্মারক লিপি পেশ করছি।
কর্তৃপক্ষ আমাদের দাবী দাওয়া মেনে না নেওয়ায় ও অনলাইন জি আর কার্যক্রমে আমাদের দক্ষতা উন্নয়নে দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষণ, সরঞ্জামাদি এবং যথোপযুক্ত সম্মানির ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আমরা আগামী ১ জানুয়ারী হতে অনলাইন জি আর কার্যক্রম বাস্তবায়ন থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকবো। তিনি আরো বলেন , তারপরেও দাবি বাস্তবায়ন না হলে পর্যায়ক্রমে মানব বন্ধন, সমাবেশ ও সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) সহ স্বাস্থ্য বিভাগীয় মাঠ পর্যায়ের সকল কার্যক্রম বর্জন করে লাগাতার কর্মবিরতি ঘোষণা করবো।
এদিকে বাংলাদেশ হেলথ এসিষ্ট্যান্ট এসোসিয়েন জামালপুর জেলা শাখার প্যাডে উল্লেখ্য করা হয় , সমগ্র বাংলাদেশে ১,২০,০০০ (এক লক্ষ বিশ হাজার) অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহ বিভিন্ন অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচী (ইপিআই) এর মাধ্যমে শিশু ও মহিলাদের টিকা প্রদান কাজে নিয়োজিত থাকেন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মীরা ।
১৯৭৯ সালের ৭ই এপ্রিল শুরু হওয়া ইপিআই কর্মসূচীর মাধ্যমে তারা তৃণমূল পর্যায়ে উদ্দিষ্ঠ জন গোষ্ঠিকে ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগ শিশুদের যক্ষা, পোলিও, ডিফথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোককাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা এবং ১৫-৪৯ বছর বয়সী মহিলাদের ৫ (পাঁচ) ডোজ টিটি/টিডি টিকা প্রদান করে। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে জন্ম, মৃত্যু, নবজাতক শিশু, গর্ভবতি মহিলা এবং কিশোর কিশোরিদের রেজিস্ট্রেশন করে ও আমরা মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করে।
৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন পোগ্রামে ভিটামিন এ খাওয়ানো, কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো, যক্ষা রোগি অনুসন্ধান, ডটস পদ্ধতির মাধ্যমে যক্ষা রোগীদের ঔষধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান ও কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করে সহকারী স্বাস্থ্য কর্মীরা । মাঠ পর্যায়ে কোভিড-১৯-এর টিকা ও মহিলাদের জরায়মুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের টিকা তারাই প্রদান করে।
কোভিড-১৯ মহামারীর মত রাষ্ট্রীয় সকল দুর্যোগে স্বাস্থ্য সহকারীগন সর্বদাই অগ্রনী ভূমিকা পালন করে থাকেন। স্বাস্থ্য সহকারীগনের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছে বিভিন্ন ধরনের পুরস্কার। তাদের সমপদমর্যাদায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তওে কর্মরত ব্যাক্তিরা সরকারের নির্বাহী আদেশের কর্মরত গ্রেড থেকে উচ্চ গ্রেডে আসিন হয়েছে অথচ স্বাস্থ্য সহকারীগণ মাঠ পর্যায়ে টেকনিক্যাল কাজ করে কর্তৃপক্ষের বারবার আশ্বাসের পরেও তাদের গ্রেড উন্নীতকরণের যথাযথ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে তারা দাবী করে ।
তারা প্রায় গত ১০ বছর ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আবেদন নিবেদন করার পরেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অজ্ঞাত কারণে নিষ্ক্রীয় ভূমিকা পালন করে আসছে বলে দাবী  করা হয় । এ ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে গেলে বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা যখন একই পদ থেকে বর্তমানে উন্নীত গ্রেডে কাজ করছে তখন স্বাস্থ্য সহকারীদের পদমর্যাদা ও গ্রেড উন্নীত না হওয়ায় নানামুখী বৈষম্য, হীনমন্যতার শিকার হতে হচ্ছে। এটা স্বাস্থ্য সহকারী তথা স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য লজ্জাজনক একটি বিষয় বলে জানান জামালপুর জেলা স্বাস্থ্য সহকারীগণ ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *