!! গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার,এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) শামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন) শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ই/এম) আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মাদ; তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাকির হোসেন; নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নু, নির্বাহী প্রকৌশলী আমানউল্লাহ আমান এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ইএম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মিরাজ আসামির তালিকায় রয়েছেন !!
নিজস্ব প্রতিবেদক : জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ১৬ প্রকৌশলীকে। পাশাপাশি একই অভিযোগে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এসব প্রকৌশলী রয়েছেন গ্রেপ্তার আতঙ্কে।
![](https://ajkerdesh.com/wp-content/uploads/2024/05/WhatsApp-Image-2024-05-31-at-21.07.07_c7f123fd.jpg)
অন্যদিকে দুর্নীতির দায়েও কাউকে কাউকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে জানা গেছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এসব প্রকৌশলী কাজে নিয়মিত নন। এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে অধিদপ্তরজুড়ে। এরই মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে। তাতেও কাজে গতি ফেরেনি।
ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতি করে শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়া এসব প্রকৌশলী জুলাই-আগস্টে আন্দোলন দমনে কোটি কোটি টাকা জোগান দিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ জমা আছে এবং তদন্ত চলছে। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দুর্নীতিতে সামনের সারিতে থাকা এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তখন ব্যবস্থা নেওয়া তো দূরের কথা, অনেককেই বারবার পুরস্কৃত করা হয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় বসার পর আন্দোলন ভণ্ডুল করার চেষ্টাকারীদের দোসর হিসেবে পরিচিত এসব প্রকৌশলীকে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এসব প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন, রামপুরা ও সাভার থানায় পৃথক হত্যা মামলা হয়েছে। মামলা হয়েছে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও। এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সক্রিয় সদস্য।
মামলার কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ছাত্র-জনতা হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ঢাকা জোন) শামছুদ্দোহা, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সংস্থাপন) শহিদুল আলম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ই/এম) আলমগীর হোসেন, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন আহাম্মাদ; তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইলিয়াস আহম্মেদ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সতীনাথ বসাক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাকির হোসেন; নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, নির্বাহী প্রকৌশলী সমিরন মিস্ত্রি, নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুজ্জামান চুন্নু, নির্বাহী প্রকৌশলী আমানউল্লাহ আমান এবং জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ইএম ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মিরাজ আসামির তালিকায় রয়েছেন।
জানা যায়, এদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন, রামপুরা ও সাভার থানায় মামলা হয়েছে। এদিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতেও তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। রাজধানীর ঝিগাতলার বাসিন্দা কে এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আসামির তালিকায় থাকা কয়েকজন প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এসব মামলার সঙ্গে জড়িত কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। তাদের মূল উদ্দেশ্য মামলার আসামিদের বিভিন্ন চাপে রেখে ঠিকাদারি কাজ ও অর্থনৈতিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধাররা এখন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ মামলায় গ্রেপ্তারের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। টাকা দিলেই মামলা থেকে রেহাই পাব বলা হচ্ছে।
তারা আরো জানান, এটা সত্য যে, বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডসহ দলীয়করণ ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। যারা বিগত সরকারের সময় সুযোগ-সুবিধা ভোগ ও দুর্নীতি-অনিয়ম করেছেন, তাদের অবশ্যই বিচার হওয়া উচিত। তা না করে ঢালাওভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে। চাকরি হারানো এবং মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় তো থাকবেই।
প্রকৌশলীদের অভিযোগ, মামলা নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সুরাহা করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। গণপূর্ত অধিদপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কেউ-ই এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রকৌশলী গণমাধ্যমে জানান, এখানে যাদের হাতে ক্ষমতা থাকে তাদের ইচ্ছায় সব হয়। ছাত্র-জনতা হত্যার পাশাপাশি অনেকে দুর্নীতির সঙ্গেও জড়িত। তারা এখন প্রকৌশলী হওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন। এর আগে গণপূর্তের এসব প্রকৌশলী জি-কে শামীমের সঙ্গে সখ্য গড়ে ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
তারা আরো বলেন, কয়েক দিন আগে আশরাফুল আলম গণপূর্ত অধিদপ্তরে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (রিজার্ভ) হয়ে এসেছেন। এর আগেও তিনি গণপূর্তে ছিলেন। তখন তার বিরুদ্ধে বিপুল অনিয়মের অভিযোগ ছিল। দুর্নীতির দায়ে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসেবে বদলি করা হয়।
কিছুদিনের মধ্যে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্ব নেবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে; কিন্তু রহস্যজনক কারণে কোনো মামলা হয়নি। গণপূর্তের সবাই তাকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হিসেবে চেনেন।
অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের মোবাইলে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। পরবর্তীত প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলতে গেলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব হামিদুর রহমান খান গণমাধ্যম কে কে বলেন, যারা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা তাদের তালিকা হচ্ছে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে আদালত থেকে কোনো চিঠি আসেনি। এলে ব্যবস্থা নেব।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ছাড় দেওয়া যাবে না। যারা দুর্নীতি করেছেন এবং জড়িত আছেন, দ্রুত তদন্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।