আজকের দেশ ডেস্ক : চীনের উহান শহর থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৩২ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা পৌনে সাত লাখের কাছাকাছি। এক ইতালিতেই ১০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। স্পেনে সেই সংখ্যাটা ৫ হাজারের বেশি। আর আক্রান্তের দিক দিয়ে সবার ওপরে আছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীনের বাইরে ২শ’ টি দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে। চীন থেকে ছড়ালেও এখন নভেল করোনাভাইরাস মহামারী কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ইউরোপ।
মহাদেশটির ইতালি মৃত্যু সংখ্যায় সবাইকে ছাড়িয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন রেকর্ড তৈরি করে ভাইরাসটি কতোটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।
বিশ্বে ইতালিতেই এখন করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ইতালিতে মৃতের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে এখন মোট মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ২৩ জন। এর মধ্যে মেডিকেল টিমের সদস্য রয়েছেন ৫১ জন। শনিবার একদিনেই মারা গেছেন ৮৮৯ জন।
এছাড়া একদিনে নতুন আক্রান্ত পাঁচ হাজার ৯৭৪ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯২ হাজার ৪৭২ জন।
মৃতের সংখ্যায় ইতোমধ্যে চীনকে ছাড়িয়ে ইতালির পরেই স্থান নিয়েছে স্পেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মারা গেছেন ৮৩২ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৬৯০ জনে।
ফ্রান্সের অবস্থাও বেশ নাজুক। মৃত্যু ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে দেশটি। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৩১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী মারা গেছেন।
এছাড়া আক্রান্তের দিক থেকে মহামারীর নতুন উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিনই আসছে নতুন আক্রান্তের খবর। আক্রান্তের দিক থেকে ইতোমধ্যে সবার উপরে অবস্থান করছে দেশটি।
গত দিনে করোনাভাইরাসে নতুন যতজন আক্রান্ত হয়েছেন তার এক তৃতীয়াংশই যুক্তরাষ্ট্রের। সেখানে নতুন ১৫ হাজার মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২২ হাজার আক্রান্ত মানুষের মধ্যে ২ হাজার ৪৭ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
করোনার কারণে ইউরোপের প্রায় সব দেশ লকডাউন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি মানুষ ঘরবন্দী। এরকম লকডাউন চলছে এশিয়া ও আফ্রিকাসহ অন্যানা মহাদেশেও। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের উত্তরাধিকার প্রিন্স চার্লসও।
প্রাণসংহারী করোনার কারণে নাজুক অবস্থা এশিয়াতেও। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে এশিয়াকে সতর্ক করে দিয়েছে। ইরানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৯সহ সেখানে মৃত্যু হয়েছে আড়াই সহস্রাধিক মানুষের। প্রতিদিন আরও হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্টসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। দেশটির অনেক আইনপ্রণেতা করোনায় আক্রান্ত। এরমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রীও রয়েছেন।
প্রতিবেশী ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছুঁই ছুঁই। দেশটিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন মারা গেছেন। করোনার বিস্তার ঠেকাতে ২১ দিন দেশ লকডাউন করে রেখেছে মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। পাকিস্তানে আক্রান্তের প্রায় ১৫শ পেড়িয়েছে। মারা গেছেন ১২ জন।
করোনা ছোবল থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাদেশেও। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ৪৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজন মারা গেছেন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন।