খাগড়াছড়িতে ত্রিপুরাদের বৈসু উৎসবে ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত

Uncategorized ইতিহাস ঐতিহ্য গ্রাম বাংলার খবর চট্টগ্রাম জাতীয় বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ সাহিত্য-সংস্কৃতি

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি  :  “আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের পরিচয়” এই স্লোগানকে সামনে রেখে বৈসু ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

শুক্রবার(১৮এপ্রিল) বিকালে খাগড়াছড়ি সদরের কুমারধন রোয়াজা পাড়ায় য়াকবাকসা ক্লাবের উদ্যোগে এ মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে য়াকবাকসা ক্লাবের সভাপকি বমিলন ত্রিপুরা’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য শেফালিকা ত্রিপুরা এবং উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য ধনেশ্বর ত্রিপুরা।


বিজ্ঞাপন

ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর অন্যতম প্রধান উৎসব বৈসু। প্রথম দিনকে বলা হয় হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বা শেষ দিনকে বলা হয় বিসিকাতাল। মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হয়। তিনদিন ব্যাপী এই বৈসুর প্রথম দিন হারি বৈসু।


বিজ্ঞাপন

হারি বৈসু: হারি বৈসুর দিনে ভোরবেলায় ফুলগাছ থেকে ফুল।সংগ্রহ করার প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এই ফুলে একাংশ দিয়ে পুরো বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো হয় এবং ফুলের আর এক অংশ দিয়ে নদীর তীরে,মন্দিরে এবং পবিত্র স্থানে ফুল, ধুপ এবং দীপ জ্বালিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে থাকে।

বৈসু: বৈসু আমাদের ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রধান সামাজিক
উৎসব। প্রতিবছর চৈত্র মাসের শেষ দুইদিন এবং বৈশাখ মাসের প্রথম দিন এই তিন দিনব্যাপী এ উৎসব পালন করা হয়। আমরা বৈসুর প্রথম দিনকে বলি হারি বৈসু, দ্বিতীয় দিনকে বৈসুমা এবং তৃতীয় বর্ষশেষ দিনটিকে বলা হয় বিসি কাতাল। ত্রিপুরারা মূলত আগামী দিনের সুখ ও সমৃদ্ধির জন্য স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করা হয়।

বৈসুমা : বৈসুমা হচ্ছে দ্বিতীয় দিন এবং এইদিনে মূলত খাদ্য উৎসব করা হয়। এই দিনে মানুষ একজন আর একজনের বাসায় ঘুরে দেখা সাক্ষাৎকার করে। বৈসুমা দিনের প্রধান আকর্ষণ হচ্ছে মিক্স সবজি যেটাকে “গন্তক ” বলে ককবরক ভাষায়,আবার অনেকে বলে থাকে “লাবড়া” নামে। এই গন্তক তৈরির জন্য প্রায় ১০১-১০৭ধরনের সবজি দেয়া হয়। পাশাপাশি ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী খাবারের পাশাপাশি সেমাই পায়েস, নুডলস সহ অনেক খাবার আইটেম থাকবে।

বিসিকাতাল: তৃতীয় দিন হচ্ছে বিসিকাতাল। এই দিনে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। পরিবারের ছোটরা বড়দের পানি দিয়ে পা ধুয়ে প্রণাম করে। নতুন বছরে সবার মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করা হয়।

বৈসু শেষে ত্রিপুরাদের বাড়তি আনন্দ আর বিভিন্ন ধরনের অনুষ্টানমালার সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। যেটি প্রতিবছর কুমারধন রোয়াজা পাড়ার য়াকবাকসা ক্লাব করে আসছে।

প্রতিবছর এই গ্রামের মানুষ বৈসু শেষে এই ধরনের সুন্দর অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্যদিয়েই বৈসু উৎসবকে বিদায় জানানো হয়।
এ অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষায় জাতীয় পদকপ্রাপ্ত মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা,কৃত্তিকা ত্রিপুরাসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *