নিজস্ব প্রতিনিধি (রাজশাহী) : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠজন পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পারাপারে সহায়তার আশ্বাসে প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে রাজশাহী মহানগরীর বিন্দুর মোড়ে গুলশান হোটেল থেকে মোঃ মেহেদী হাসান (৫১) এবং মোঃ নিজাম উদ্দিন (৭১) নামের দুই প্রতারককে আটক করেছে বিজিবি।

আজ ২২ মে, দুপুরে বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে জানা যায়, মোঃ মেহেদী হাসান এবং মোঃ নিজাম উদ্দিন নামের দুইজন ব্যক্তি নিজেদেরকে মাননীয় সেনাবাহিনী প্রধান, সেনাবাহিনীর কিউএমজি, বিজিবি মহাপরিচালক এবং বিজিবির রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার এর লোক পরিচয় দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পারাপারে সহায়তার আশ্বাসে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে অগ্রীম হোটেল ভাড়া ও আনুষঙ্গিক বিভিন্ন খরচ গ্রহণ করে রাজশাহী মহানগরীর গুলশান হোটেলে অবস্থান করছেন।

ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের তথ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় বিজিবির রাজশাহী ব্যাটালিয়নের একটি বিশেষ টহলদল আনুমানিক দুপুর ০১.০০ ঘটিকায় রাজশাহী মহানগরীর গুলশান হোটেলে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে প্রাতমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজশাহী বিজিবিতে আনা হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন- নেত্রকোনার আটাপাড়া থানার খাগড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ খানের ছেলে মোঃ মেহেদী হাসান এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার কালিকাপুর গ্রামের মৃত ওয়াজিউল্ল্যাহ মিয়ার ছেলে মোঃ নিজাম উদ্দিন। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২০ মে ২০২৫ তারিখে ঢাকা হতে রাজশাহীতে আগমন করতঃ বিন্দুর মোড়ে অবস্থিত গুলশান হোটেলের ৪ ও ৫ নম্বর কক্ষে অবস্থান করে। তারা অবৈধভাবে ভারত থেকে গরু চোরাচালানের মধ্যস্থতা করে উৎকোচ গ্রহণের কাজ করে।

আটককৃত মোঃ নিজাম উদ্দিন নিজেকে মাননীয় সেনাপ্রধান ম্যাডামের শিক্ষক এবং মোঃ মেহেদী হাসান নিজেকে এমইএস এর ঠিকাদার হিসেবে পরিচয় দেন। তারা মিথ্যা আশ্বাস প্রদান করেন যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান এবং বিজিবি মহাপরিচালকের সাথে তাদের বিস্তারিত আলাপ হয়েছে যে, সীমান্ত দিয়ে ভারত হতে বাংলাদেশে গরু নিয়ে আসতে কোন অসুবিধা নাই। এছাড়াও তারা বিজিবি’র রাজশাহী সেক্টর কমান্ডারের বরাত দিয়ে জানান যে, সেক্টর কমান্ডার বলেছেন গরু চোরাচালানের উদ্দেশ্যে বর্ডার খুলে দেয়া হবে।
মোঃ মেহেদী হাসান জানায় যে, সে যাদেরকে নির্বাচন করবে শুধুমাত্র তারাই ভারত হতে গরু আনতে পারবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় অনুমতি দেয়ার জন্য রাজশাহী সেক্টর কমান্ডার আজ সন্ধ্যায় হোটেলে আসবেন।
জানা যায়, তারা প্রতিজোড়া গরু ৩৫,০০০/ এবং ১০ হাজার গরু বর্ডার পার করে দেয়ার বিনিময়ে ২০ লক্ষ টাকা অগ্রীম দাবি করেন। প্রকৃতপক্ষে উল্লিখিত ব্যক্তিগণ উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাগণের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অভিনব কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল অবলম্বন করেন।
তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।