রবিউল ইসলাম (বেনাপোল) : সীমান্ত শহর বেনাপোলের নাম ব্যবহার করে অনলাইনে প্রতারণার জাল ছড়িয়েছে সারাদেশে নানা অনলাইন পেজে পোস্ট

বুস্ট করে ভারতীয় পণ্যের লোভনীয় ছাড়ের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র।

সাধারণত “বেনাপোল বর্ডার ক্রস বাইক”, “অনলাইন শপ”, “ইন্ডিয়ান প্রোডাক্ট ইন বাংলাদেশ”—এমন নানা নামে পেজ খোলা হয়। এসব পেজে ভারতীয় বর্ডার ক্রস বাইক, কাস্টমস বাইক, মোবাইল, ক্যামেরা, টিভি, ফ্রিজ, ইত্যাদি পর্ণের আকর্ষণীয় ছবি ও কম দামের অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করা হয়। বাইক কিনতে অগ্রিম কোন টাকা দিতে হবেনা শুধু ডেলিভারি চার্জের জন্য ৩০০০-৪০০০ টাকা অগ্রিম দিলেই হবে, এভাবেই ক্রেতাকে বোকা বানিয়ে বিভিন্ন ভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে চলছে প্রতারণার এই রমরমা ব্যবসা।

ঢাকার কামরুল হোসেন নামে প্রশাসনে চাকুরীরত এক যুবক জানান, তিনি “অনলাইন শপ” নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে একটি ফ্রিজ অর্ডার করেন। ক্যাশ অন ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল ফ্রিজটি। দুইদিন পর এক ব্যক্তি নিজেকে ‘ডেলিভারি ম্যান’ পরিচয়ে ফোন করে বলেন, “পণ্য পাঠাতে হলে কোড লাগবে। তখন পেজে দেওয়া নাম্বারে কল দিলে তারা বলে ফ্রিজ তো চলেই গেছে টাকা না পাঠালে কোড দেওয়া হয়না, টাকা আগে পাঠাতে হবে।” সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠানোর পর থেকে আর কোনো যোগাযোগ সম্ভব হয়নি, পেজও বন্ধ।
নারায়ণগঞ্জের গার্মেন্টকর্মী সাবিনা আক্তার জানান, তিনি ১২০০ টাকা অগ্রিম দিয়ে একটি সাইকেল অর্ডার করেন। পরে পেজ এবং বিকাশ নম্বর—দুটিই বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় প্রতিনিয়ত অভিযোগ জমা পড়ছে। জেলা গোয়েন্দা সংস্থার অভিযানে কিছু প্রতারক গ্রেফতারও হয়েছে, কিন্তু প্রতারণার ঘটনা থেমে নেই। নতুন নামে পেজ খুলে অসংখ্য চক্র নানা কৌশলে প্রতারণা করছে।
প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতারণার ধরন দিনদিন বদলাচ্ছে। এসব ঘটনায় মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। যাচাই-বাছাই ছাড়া অনলাইনে কোনো পণ্য অর্ডার না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।
বেনাপোলের নাম ভাঙিয়ে অনলাইন প্রতারণা এখন সীমান্ত ছাড়িয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতারণার ধরন যতই পাল্টাক, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হলে চাই প্রশাসনের কঠোর অবস্থান, প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত, এবং সর্বস্তরে জনসচেতনতা।