মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী : গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে হাতকড়াসহ বিভিন্ন সরকারি কারা-সরঞ্জাম চুরির ঘটনায় মো. আরিফ চৌধুরী (২৮) নামে এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত আরিফ টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গাড়াবাড়ি গ্রামের স্বপন চৌধুরীর ছেলে।

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৬ জুলাই ভোরে, যখন কারাগার থেকে বিভিন্ন ধরনের সরকারি সামগ্রী চুরি হয়। চুরির ঘটনার পর কারা কর্তৃপক্ষ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আরিফ চৌধুরীর সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ পান। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তারা গোপালগঞ্জ সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এরপর শনিবার ২৭ জুলাই সন্ধ্যায়, গোপালগঞ্জ শহরের ইসলামপাড়ায় অবস্থিত একটি ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে আরিফকে আটক করে পুলিশ।

অভিযানের সময় তাঁর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ জোড়া হাতকড়া ৬ জোড়া কাঁধের ব্যাজ ৮টি মনোগ্রাম সরকারি শীতের জ্যাকেটসহ অন্তত ১০ ধরনের সরঞ্জাম । মামলাটি দায়ের করেছেন কারাগারের সহকারী জেলার সুমি ঘোষ, যেখানে কারারক্ষী আরিফকে প্রধান ও একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক এসআই নয়ন কুমার সাহা, যিনি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি বলেন:
“জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরিফ চৌধুরী চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সরকারি মালামাল। আজ রোববার তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।”
এদিকে, কারা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে আগে থেকেই অসদাচরণ ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ছিল। চুরির ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পর বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কীভাবে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কারারক্ষী এত সংখ্যক স্পর্শকাতর ও নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম চুরি করে বাসায় মজুত রাখলেন, এবং এতদিন তা কেউ টের পেল না।
এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, চুরিকৃত সরঞ্জামগুলো কোনো অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা, বা এর পেছনে অন্য কোনো চক্র সক্রিয় রয়েছে কিনা—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।