সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম হাসান মেহেদীর ঘুষ বাণিজ্য  : ঘুষ, জমি, ছাত্রলীগে টাকা- রাজস্ব দপ্তরে ফ্যাসিবাদীদের  অভ্যুত্থান

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক  : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আওতাধীন মোংলা কাস্টমস হাউজে কর্মরত সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এম হাসান মেহেদী এখন কেবল একজন দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা নন- বরং রাষ্ট্রের ভেতরে গজিয়ে ওঠা এক ভয়ঙ্কর শকুন, যার থাবায় আক্রান্ত হয়েছে রাজস্ব প্রশাসনের নৈতিক ভিত্তি, অপবিত্র হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, আর হুমকির মুখে পড়েছে প্রশাসনিক শুদ্ধাচার।


বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি গণমাধ্যমের কাছে এসে পৌঁছেছে একটি অতি সংবেদনশীল ও প্রামাণ্য ভিডিও ফুটেজ, যেখানে অফিস চলাকালীন নিজ কার্যালয়ে বসে এম হাসান মেহেদীকে নগদ ঘুষ গ্রহণ করতে দেখা যায়। সেবাপ্রার্থীকে প্রথমে হয়রানি করে, পরে নির্ধারিত টাকা বুঝে নিয়েই কাজ সম্পন্ন করেন তিনি- যেন সরকারি সেবা নয়, বরং ব্যক্তিগত দালালির নির্লজ্জ প্রদর্শনী চলছে তার টেবিলের ওপারে।


বিজ্ঞাপন

ভিডিও সম্পর্কে যখন এই প্রতিবেদক তার প্রতিক্রিয়া জানতে চান, তখন তিনি সাংবাদিককে ‘ম্যানেজ’ করতে লক্ষাধিক টাকার ঘুষের প্রস্তাব দেন। অর্থাৎ, ঘুষের ভিডিও চাপা দিতেও ব্যবহার করেন ঘুষ- এ এক ভয়াবহ, শিকারি-চিন্তাধারার প্রকাশ যেখানে অপরাধই নিয়মে পরিণত হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

আরও ভয়াবহ তথ্য এসেছে- বিশ্বস্ত একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, এম হাসান মেহেদী খুলনার বিভিন্ন এলাকায় ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে প্রায় ৮০ লাখ টাকার জমি কিনেছেন, যা তার সরকার নির্ধারিত বেতন কাঠামোর সঙ্গে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ। তার এই অবৈধ সম্পদের কোনো হদিস নেই আয়কর রিটার্নে- এর অর্থ, তিনি দুর্নীতি দমন কমিশনের সংজ্ঞায় একটি ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তি’ এবং তা ফৌজদারি অপরাধের আওতাভুক্ত।


বিজ্ঞাপন

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। এই মেহেদী, যিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি নিয়েছেন, সেই পরিচয়ের আড়ালে বসে ৫ আগস্টে ছাত্র আন্দোলনের আগে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের অর্থ সরবরাহ করেছেন। তার অর্থে প্রভাবিত ক্যাডাররা প্রস্তুত ছিল আন্দোলন দমনে মাঠে নামার জন্য- এটি কোনো আলাদা ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের এক গভীর ছক।

প্রশাসনের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পক্ষ থেকে রাজনৈতিকভাবে ছাত্ররাজনীতিকে অর্থায়ন করা, ক্যাম্পাসে সহিংসতার পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া এবং ঘুষের টাকায় ক্যাডার পুষে রাখা- এসবই সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

এম হাসান মেহেদী কেবল একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা নন- তিনি এই রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে গজিয়ে ওঠা একটি ক্ষমতালোভী, রাজনৈতিকভাবে সুবিধাভোগী, দখলবাজ গোষ্ঠীর দালাল। তার ছায়ার নিচে কেবল ঘুষ নয়- সেখানে অস্ত্র, ভয়, রাজনৈতিক স্বার্থ আর স্বেচ্ছাচারের পাঁকও জমাট বেঁধে আছে।

এ যেন শকুনের চোখে ঝুলে থাকা রাজস্ব প্রশাসনের ভবিষ্যৎ- যেখানে দেশপ্রেম নয়, বিক্রি হয় বিবেক। কাকের ঠোঁটে লাল লিপিস্টিক দিয়ে শুদ্ধাচার ঢেকে রাখা যায় না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *