মশার প্রকোপ না কমা পর্যন্ত ক্রাশ প্রোগ্রাম চলবে  : চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন

Uncategorized চট্টগ্রাম জাতীয় প্রশাসনিক সংবাদ বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিনিধি (চট্টগ্রাম)  : চট্টগ্রাম  নগরবাসীকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রকোপ থেকে রক্ষা করতে মশার প্রকোপ না কমা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম চলমান থাকবে ।


বিজ্ঞাপন

আগ্রাবাদ কমার্স কলেজের সামনে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম ও জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রমে এ কথা বলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।


বিজ্ঞাপন

মেয়র বলেন, “আগামী চার মাসে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লার্ভিসাইড এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ফগিং কার্যক্রম চলবে। মশার লার্ভা ধ্বংসে শিকাগো শহর থেকে আনা বিটিআই (Biological Larvicide) নামক ওষুধও প্রয়োগ করা হবে।”


বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বরসহ ওয়ার্ডভিত্তিক দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, “এলাকার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক সমস্যায় উনাদের সাথে যোগাযোগ করুন। রপরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাজ তদারকি করুন। জনগণের সেবক হিসেবে যেন তারা গাফিলতি না করে তা নিশ্চিত করতে হবে।”


বিজ্ঞাপন

ডা. শাহাদাত বলেন, “ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব রোধে জনগণের সহযোগিতা অপরিহার্য। বাসাবাড়িতে জমে থাকা পানি অপসারণ, প্লাস্টিক-কর্কশিটসহ অপচনশীল বর্জ্য সঠিকভাবে ফেলার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। জলাবদ্ধতারও অন্যতম কারণ এসব অপচনশীল বর্জ্য।”

তিনি বলেন, “মশার প্রজনন রোধে কোথাও ডাবের খোসা, বালতি বা নির্মাণ সামগ্রী উন্মুক্ত রাখা যাবে না। এতে পানি জমে এডিস মশার লার্ভা জন্মায়। বাসায় টব কিংবা বালতিতে দুই-তিন দিন পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। খোলা জায়গায় টব রেখে পানি জমালে সেখানেও লার্ভা জন্মায়।”

মেয়র জানান, ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ওষুধ সংগ্রহ করা হয়েছে। নগরীতে বর্তমানে মশার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে দুইবার করে মশকনিধনের ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। “আমি নিজেই মাঠ পর্যায়ে ওষুধ ছিটানোর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছি এবং প্রতিটি ওয়ার্ড থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছি,” বলেন মেয়র।

নগরীর সড়কগুলোর অবস্থার বিষয়ে মেয়র বলেন, “টানা দুই মাসের ভারী বর্ষণে নগরীর অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছয়টি জোনে ভাগ করে প্রতিটি জোনে একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে মেরামত কাজ শুরু হয়েছে। তবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে কাজের গতি কিছুটা কমে গেছে। তবুও আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি যাতে জনগণ দুর্ভোগে না পড়ে।”

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা একসময় অভিশাপ ছিল। আজ আমরা ৫০-৬০ শতাংশ জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধান করতে পেরেছি। বাকিটুকু সমাধানে খাল খনন, ড্রেন সংস্কার এবং সুইস গেট নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।”

তিনি জানান, নালা-নর্দমায় সেন্সর প্রযুক্তি সংযোজনের পরিকল্পনাও রয়েছে যাতে ভবিষ্যতে দ্রুত সমস্যা শনাক্ত ও সমাধান করা যায়। “সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ওয়াসা—সব সার্ভিস অরিয়েন্টেড সংস্থাগুলোকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করছি,”—বলেন তিনি।

শেষে মেয়র বলেন, “আমি আশাবাদী, মশক নিধন কার্যক্রম এবং নগর উন্নয়ন কার্যক্রমে চট্টগ্রামবাসীর সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা একটি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি এবং সেফ চট্টগ্রাম গড়ে তুলতে পারব।”

এসময় উপস্থিত ছিলেন ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি,, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব কুমার শর্মা, সাবেক কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন, মেয়রের একান্ত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী (মারুফ), আবদুল বাতেন,জামাল উদ্দিন,শেখ ইয়াসিন চৌধুরী নওশাদসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *