এখন যারা যা খুশি করতে পারে তারা তো নির্বাচন চাবে না—– গোলাম মোহাম্মদ কাদের

Uncategorized জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী রাজনীতি সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : আজ বুধবার ১৩ আগস্ট, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখন জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, আমি তার প্রতিবাদ করেছি। একইভাবে এখন বলছি, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। জুলাই গণহত্যায় অনেক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। আমার এবং আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মিথ্যা হত্যা মামলা দেয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলায় যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না। আইন উপদেষ্টা ও আইজিপি বলেছেন, অনেক মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, তাহলে যাদের আটক করা হয়েছে তাদের জামিন দেয়া হচ্ছে না কেন ?


বিজ্ঞাপন

আইনের কথা হচ্ছে একজন নিরপরাধকে বাঁচাতে প্রয়োজনে দশজন দোষীকে ছেড়ে দাও। কিন্তু এখন কি হচ্ছে? একজন দোষীকে শাস্তি দিতে দশজন নিরাপদ মানুষকে শাস্তি দিচ্ছে। বাড়ি ঘর ও অফিসে আগুন দিয়ে, মামলা হামলা করে আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। আমরা বর্তমান সরকারের অপকর্মের বিরোধীতা করছি, ঝুঁকি নিয়ে জনগনের পক্ষে কথা বলছি। সরকারের জুলুম নির্যাতনের ভয়ে আমরা থেমে যাবো না।


বিজ্ঞাপন

এজন্যই জনগণ আমাদের সাথে আছে। আমাদের লাঙ্গল অন্য কাউকে দিতে চাইলে আমরা রাজপথে আন্দোলন করবো। যারা ভুমিকা রাখতে পারবে তারাই জাতীয় পার্টির প্রকৃত নেতা। সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকবো। জনগণের জন্য জীবন দিতেও রাজি আছি। অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবোই। তিনি বলেন, দেশের মানুষের মুখে হাসি নাই। দেশের মানুষ অতংকের মাঝে বসবাস করছে।


বিজ্ঞাপন

এখন যারা যা খুশি করতে পারে তারা তো নির্বাচন চাবে না। নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে, ততই তাদের লাভ। জনগণের কথা তাদের বিবেচনায় নেই। নির্বাচন চাই না এটা বলার আপনি কে? সবাইকে বলতে দিন, এটাই তো গণতন্ত্র। স্বৈরাচার হবেন? থাকতে পারবেন না। এদেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্র মেনে নেয় না।


বিজ্ঞাপন

আজ বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পার্টি ঢাকা জেলা শাখার মতবিনিমিয় সবায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

এ সময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, জাতীয় পার্টির পরিস্কার কোন রাজনীতি ছিলো না। জাতীয় পার্টি কি করতে চায় তা নিয়ে নেতাকর্মী ও জনমনে বিভ্রান্তি ছিলো। এখন থেকে আমরা জনগণের পক্ষের রাজনীতি করবো। এতদিন জনগণ ভোট দিতে পারে নাই, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আমি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলাম।

মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য যে আন্দোলন হয়েছে, আমরা সর্বাত্মক ভাবে তার সাথে ছিলাম। ছাত্ররা যখন কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে, আমি তাকে বলেছিলাম বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন।

ছাত্রদের ওপর যখন জুলুম-নির্যাতন শুরু হয়েছিল, তখন সকল স্তরের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেয়। এখন যদি বলে শুধু তারাই আন্দোলন করেছে, তা সঠিক নয়।

ছাত্ররা আন্দোলন শুরু করেছিলো, কিন্ত সাধারণ মানুষের অংশ গ্রহনে সেই আন্দোলন সফলতা পেয়েছে। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, এখন সারাদেশে সকল স্তরে বৈষম্য চলছে। দোসর অপবাদ দিয়ে মানুষের ঘর, বাড়ি ও কলকারখানায় আগুন দেয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকার আইনের মারপ্যাঁচে আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো, এখন এই সরকারও আইনের মারপ্যাঁচে আমাকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

দেশীয় রাজনীতিবিদ ও বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে একটি সফল সম্মেলনে আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান হিসেবে আমি যাকে নিয়োগ দিয়েছি, তাকে বাদ দেয়ার গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ক্ষমতাও আছে।

আওয়ামী লীগ সরকার যা করেছে, বর্তমান সরকারও তাই করছে, পরিবর্তন কী হলো? আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিবাদ বা স্বৈরাচার বলা হয়, একই কাজ যদি বর্তমান সরকারও করে তাকে কী বলবেন? আমাদের দলীয় প্রতীক অন্যদের দেয়া হবে এমন ভয় দেখিয়ে আমাদের ব্ল্যাক মেইল করেছিলো আওয়ামী লীগ, এখন আবার সেই খেলা শুরু হয়েছে। বিএনপির জনসমর্থন বেশি তাই শেখ হাসিনা আরেকটি দল সাজিয়ে তাদের ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার সাহস করে নাই।

বিএনপি মজলুম দল ছিলো তাই সাধারণ মানুষ তাদের সমর্থন করেছে। এখন আমরাও মজলুম, আমরাও জনগণের সমর্থন অর্জন করতে পারবো। এখন জাতীয় পার্টি ছাড়া সব দলই সরকারি দলের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে, সরকারি দলের দোষ ত্রুটি তাদের ঘাড়ে নাই। অপর দিকে সরকার আমাদের পিছে লেগে রয়েছে, সুবিধা তো দূরের কথা আমরা আমদের সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারি না। জনগণের চোখে এখন আমরাই মজলুম।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে আজ ঢাকা জেলার এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, ইঞ্জিঃ ইকবাল হোসেন তাপস, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাদুর ইসলাম ইমতিয়াজ, রমজান আলী ভূঁইয়া, ঢাকা জেলা নেতা আশরাফুজ্জামান আশু, মোঃ মশিউর রহমান তাপস, লাইজুল ইসলাম, মোঃ ইউসুফ, শাহজাদা।

অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা একেএম নুরুজ্জামান জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল খায়ের, দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, এনজিও বিষয়ক সম্পাদক মোড়ল জিয়াউর রহমান, যুগ্ম সাংগঠনিক শেখ সরোয়ার, যুগ্ম দফতর সমরেশ মন্ডল মানিক।

আজ সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় মহিলা পার্টির এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও বিশেষ অতিথি হিসেবে পার্টি মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বক্তব্য রাখেন।

হেনা খান পন্নির সভাপতিত্বে এই সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, শেরীফা কাদের, নুরুন নাহার বেগম, উপদেষ্টা এ্যাড. লাকী বেগম, মোঃ খলিলুর রহমান রহমান খলিল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য রিতু নূর, জেসমিন নূর প্রিয়াঙ্কা প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিঃ ইকবাল হোসেন তাপস, ভাইস চেয়ারম্যান এমএ সোবাহান, আখতার হোসেন দেওয়ান, হুমায়ুন খান, যুগ্ম মহাসচিব লিয়াকত হোসেন চাকলাদার।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *