নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা ওয়াসার সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. আলী জাবেদ পতিত স্বৈরাচার সরকারের অন্যতম দোসর ছিলেন। ঢাকা ওয়াসার পলাতক ও পদত্যাগী এমডি তাকসিম এ খানের অন্যতম দোসর ও সুবিধাভোগী ডা. আলী জাবেদ। স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের শাসন দীর্ঘায়িত করার জন্যে পৈশাচিক কায়দায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে ইন্ধনদাতাও ছিলেন তিনি। ভাব-ভঙ্গি,আচার-আচরণে তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় বাঙ্গালী,শেখ হাসিনার চেয়ে বড় আওয়ামী লীগার,দলবাজির ক্ষেত্রে ওবায়দুল কাদেরের চেয়ে বড় দলবাজ ছিলেন বলে সংশ্লিষ্ট মহল অভিযোগ করছেন।

সূত্র জানিয়েছে, এমনকি ৪ আগষ্ট-২০২৪ তারিখে সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তাকসিমের নেতৃত্বে এক বিশেষ জুম মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত জুম মিটিং-এ ডা. আলী জাবেদ উপস্থিত ছিলেন। জুম মিটিং আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি।
সভায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে সরকারের যেকোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সার্বিক সহায়তা করার ঘোষণা দেয়া হয়। জুম মিটিং আইডি-৮২৪৮৯২৭১৫৫,পাসওয়ার্ড-এলজিডি এ্যাট ৩০৭২৪। জুম মিটিং-এর ফুটেজ চেক করলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে।

ডা. আলী জাবেদ ঢাকা ওয়াসার পলাতক ও পদত্যাগী এমডি তাকসিম এ খানের ছত্রছায়ায় থেকে অনেক অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে একাধিকবার সরকারি টাকায় বিদেশ সফর করেছেন। বিশেষজ্ঞ না হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা ওয়াসার মিটার ক্রয়ের জন্যে তিনি বিদেশ সফর করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে,ঢাকা ওয়াসার মেডিকেল অফিসার হলেও তিনি রোগি দেখার কাজ কখনো করেন নি। করেছেন নেতাগিরি। নিয়োগ,বদলির তদবির বাণিজ্য করে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। ওয়াসায় স্বাস্থ্যসেবার জন্যে চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে তার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আছে।
অন্যদিকে ঢাকা ওয়াসার পিপিআই প্রকল্পের ২০০ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ লুট করার জন্যে তাকসিমের ছত্রছায়ায়; ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ভোটে সভাপতি হতে না পেরে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের তাকসিমের সহযোগিতায় ওএসডি,বরখাস্তসহ নানাভাবে হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ পাাওয়া গেছে।
ডা. আলী জাবেদ এর আপন ভাই নাসেরসহ অনেককে ওয়াসায় চাকরি দিয়েছেন।
আউটসোর্সিং নিয়োগ বাণিজ্য করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নাসের জোন-১ এ বিলিং সহকারি পদে আছেন। নিয়মবহির্ভূতভাবে একাধিক সাইট পরিচালনা করছেন নাসের। ডা. আলী জাবেদ এর ক্ষমতাবলে নিজে সাইটে ডিউটি করেন না। ব্যক্তিগত ডুপলি নিয়োগ করে সাইট পরিচালনা করেন। যা ওয়াসা কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ করেছে।
ডা. আলী জাবেদ ঢাকার মীর হাজীরবাগ এলাকায় ”সমকাল” নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাম হাসপাতাল করেছেন। যেখানে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওয়াসার পানির লাইন নিয়েছেন। যথাযথভাবে পানির বিল পরিশোধ না করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছেন বলে জানাগেছে।
ডা. আলী জাবেদ দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ঢাকায় বাড়ি, একাধিক ফ্লাট ও প্লট ক্রয় করেছেন। গ্রামের বাড়িতে প্রচুর ভূসম্পদ ক্রয় করেছেন। ব্যাংকে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। যার তার জ্ঞাত আয়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ডা. আলী জাবেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয় পত্রের বিপরীতে সম্পদের অনুসন্ধান করলে অভিযোগের প্রমান মিলবে বলে সংশ্লিষ্ট মহল দাবি করছেন।।
এবিষয়ে ডা. আলী জাবেদের বক্তব্য নেয়ার জন্যে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।