নিজস্ব প্রতিনিধি (নারায়নগঞ্জ) : নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক শামীম -ফারুক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উক্ত সিন্ডিকেটটি দীর্ঘদিন ধরে অফিসে সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে ।

পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গড়িয়েছে যে, সংবাদকর্মীরা তথ্য সংগ্রহে গেলে তাদেরকেও অফিস প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা বলেও জানা গেছে,, নারায়নগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস যেনো সাংবাদিক মুক্ত, কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রকারের অনিয়ম ও দুর্নীতি’র তথ্য আড়াল করতে ই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এমন টা করছে বলে জানিয়েছেন উক্ত অফিসের নিরীহ ও সাধারণ কর্মকর্তারা ।
স্থানীয় সূত্র জানায় সম্প্রতি এই পাসপোর্ট অফিসের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। এর পর থেকেই কর্মকর্তাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। দুর্নীতিতে জড়িত অনেকেই নিজেদের কার্যক্রম গোপন রাখতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। সেই আতঙ্ক থেকেই সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে রাখা হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে যে, গেটে অবস্থানরত আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধেও গ্রাহক হয়রানি, নির্যাতন ও বিভিন্ন প্রকারের কূটকৌশলী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রশাসন এর আগে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অর্ধ-ডজন দালালকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। বরং সেবাগ্রহীতাদের অভিযোগ, এখনো ঘুষ ছাড়া কোনো ধরনের সেবা পাওয়া যাচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে প্রতিটি কাজে দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে।
শামীম আহমেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ : সেবাগ্রহীতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতি বেড়েছে, আর সেবার মান কমেছে। তাদের যোগদানের আগে অনেকে ভেবেছিলেন পাসপোর্ট অফিসে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ফিরে আসবে। কিন্তু উল্টো সেখানে বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতির মাত্রা বহুগুণে বেড়েছে। শুধু তাই নয়, শামীম আহমেদের অতীত নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে।
ফারুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ : সেবাগ্রহীতা ও স্থানীয়দের অভিযোগ, উপ-সহকারী পরিচালক ফারুক নানাভাবে প্রশাসনের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কিছু অসাধু সাংবাদিকদের টাকার বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন। তাদেরকে প্রতি মাসে বেশ মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে থাকেন এই ফারুক, যাতে তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনো অভিযোগ তুলতে পারে না । জানা যায়, ফারুক ও শামীম একসঙ্গে গড়ে তুলেছেন বিশাল এক সিন্ডিকেট।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে নীরবতা : এ বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পাসপোর্ট অফিসের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদের সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমনকি এসএমএস পাঠানোর পরও কোনো উত্তর দেননি। উপ-সহকারী পরিচালক ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি যোগাযোগ করে নি।
একইভাবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোনে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি বিধায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না ।
সেবাগ্রহীতাদের হতাশা : পাসপোর্ট করতে আসা সাধারণ মানুষ জানান, প্রতিটি ধাপে তাদের ঘুষ দিতে হচ্ছে। দালাল ছাড়া অফিসে কোনো কাজই এগোয় না। অথচ সরকার পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য কঠোর উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যাচ্ছে।
স্থানীয় এক ভুক্তভোগী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এখানে কোনো সেবা টাকা ছাড়া পাওয়া যায় না। আমরা সরকারের কাছে সেবা নিতে আসি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দালাল আর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কাছে জিম্মি হয়ে যাই।”