আখাউড়ায় আউস ধানের বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক

Uncategorized অর্থনীতি গ্রাম বাংলার খবর জাতীয় বানিজ্য বিশেষ প্রতিবেদন সারাদেশ

আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি  :  ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় আউশ ধানের  ফলন ভালো হয়েছে।  স্থানীয় কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ মৌসুমে জমিতে আউশ ধান আবাদের পর অতিরিক্ত বৃষ্টিতে কিছু ক্ষতি হয়। তারপরও কৃষকরা হাল ছাড়েনি। সঠিকভাবে পরিচর্যার কারণে ধানের ফলন ভালো  হওয়ায় কৃষকরা বেজায় খুশি।


বিজ্ঞাপন

একাধিক কৃষক জানায়, গত বছর আকস্মিক বন্যায় ধান জমি তলিয়ে গিয়ে অনেক ক্ষতি হয়। চোখের সামনে ফসলের জমি তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য এখনো ভুলতে পারেননি। এবার ও অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় তাদের মাঝে এক প্রকার শঙ্কা তৈরী হয়। শেষ পযর্ন্ত আউশ ধানের ফলন ভালো হয়।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২১০শ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। যা গত বছরের চাইতে ২০ হেক্টর জমি বেশী রয়েছে। রোপনকৃত জমির মধ্যে উন্নতফলনশীল জাতের ধান রয়েছে। ধান রোপণের জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে বিনামূল্যে  বীজ, সারসহ কৃষি উপকরণ দেওয়া হয়।


বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে উপজেলার মোগড়া ও মনিয়ন্দ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠে মাঠে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সোনালী ধানের সমারোহ হয়ে আছে। বিভিন্ন মাঠে দেখা গেছে কেউ ধান কাটছেন। কেউ কাটা ধানের আঁটি বাঁধছেন। আবার কেউ কেউ এসব ধান কাঁধে ও মাথায় করে বাড়ি নিচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

কোথাও কোথাও দেখা গেছে বাড়ি নিয়ে আসা ধান গাছ থেকে ধান সংগ্রহ, ধান সেদ্ধ ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে এ কাজে পিছিয়ে নেই কৃষাণীরাও। তারাও শুকানোর কাজে সহযোগিতা করছেন।

স্থানীয় কৃষক আবুল হোসেন বলেন, আমরা মূলত ইরি-বোরো ও আমন ধান করে থাকি। বোরো ধান কাটার পর ৪-৫ মাস জমি খালি পড়ে থাকে। এসময় জমিতে কোন ফসল করা হয় না।

কৃষি অফিসের সহযোগিতায় গত কয়েক বছর ধরে অতিরিক্ত ফসল আউস ধান আবাদ করছি। গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যায় ফসল কিছুটা নষ্ট হয়। এবার সময়মতো আউশ ধান লাগানোর পর অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় এক প্রকার শঙ্কা তৈরী হয়েছিল। শেষ পযর্ন্ত জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়। এতে আমরা বেশ খুশি।

কৃষক আলম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তা এ বছর ২ বিঘা জমিতে আউশ ধান আবাদ করা হয়। কৃষি অফিস থেকে সার বীজ পেয়েছি। অফিসের লোকজন সব সময় দেখবাল করায় জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। এ ধান চাষে খরচ খুবই কম হয়। জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন আমন ধান আবাদ করতে কিছু দিনের মধ্যে জমি প্রস্তুত করা হবে।

কৃষক মো: কুদ্দুস মিয়া বলেন, আমারা মূলত বছরে জমিতে দুটি ফসল করে থাকি। কৃষি অফিসের লোকদের সার্বিক সহায়তায় গত কয়েক বছর ধরে আউশ ধান আবাদ করছি।

এ বছর ২ বিঘা জমিতে আউশ ধান আবাদ করা হয়। আবাদ করা থেকে ধান কাটার আগ পযর্ন্ত জমিতে কোন প্রকার সেচ নিয়ে চিন্তা করতে হয়নি। রোগ বালাই ও পোকা মাকরের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে প্রতিনিয়ত কৃষি অফিসের লোকজন দেখবাল করেছেন।

ইতিমধ্যে জমিতে ধান কাটা হয়েছে। ফলন  ভালো হওয়ায় খুবই খুশি বলে জানায়। আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, আউশ ধান আবাদ করতে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দেওয়া হয়।

ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কৃষি অফিসের লোকজন মাঠে মাঠে গিয়ে ফসলের রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে কৃষকদের পরামর্শসহ সহযোগিতা করায় ধানের ভালো ফলন হয়।

তিনি আরও বলেন আউশ ধান আবাদে খরচ কম লাভ বেশী হয়। ফসলের উৎপাদনv বৃদ্ধিতে আমরা কৃষকেদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। এ ধান ঘরে তোলার পর আমন রোপণে কোন সমস্যা হবে না।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *