পদোন্নতি পেতে গণপূর্তের দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী কায়কোবাদের ১০ কোটি টাকার শক্তিশালী মিশন : বাধা হয়ে দাড়িয়েছেন সচিব

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  : পদোন্নতি পেতে গণপূর্তের দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী কায়কোবাদের ১০ কোটি টাকার শক্তিশালী মিশনে বাধা হয়ে দাড়িয়েছেন অন্তবর্তীনকালীন সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নজরুল ইসলাম বিষয়টি এপর্যন্ত ই ঠিক ছিল কিন্তু গণপূর্ত অধিদপ্তরে ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদকে পদোন্নতি দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে গণপূর্তের চলতি দায়িত্বে থাকা প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার।


বিজ্ঞাপন

প্রায় তিন সপ্তাহ আগে তাকে পদোন্নতি দিয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও কায়কোবাদের দুর্নীতি, গোয়েন্দা সংস্থা ও দুদকের ছাড়পত্র না মেলায় এখনো পদোন্নতি দেয়া হয়নি তাকে।

সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পদ বাগাতে নিজের অফিসেই বসছেন না এই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। তাঁর দপ্তরে তার অধীনস্থ বিভাগের শতাধিক প্রাক্কলন পড়ে থাকলেও সেগুলো পাশে মনোযোগী না হয়ে দিনভর মন্ত্রণালয়, দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ছাড়পত্র নিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।


বিজ্ঞাপন

ছাত্রজীবনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় এবং সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলমের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদে সম্পৃক্ত থাকায় মন্ত্রণালয়ের জামাতঘেষা সচিব তার পদোন্নতির ফাইল আটকে রেখেছেন।


বিজ্ঞাপন

দুর্নীতিবাজ জেনেও কায়কোবাদকে পদোন্নতি দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগে থাকা গণপূর্তের চলতি দায়িত্বের প্রধান প্রকৌশলী যে শামীম আখতারও নিজে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। মেধাতালিকার সপ্তম স্থানে থাকা শামীম আখতার সবাইকে ডিঙ্গিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব পেয়েছেলিন শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্বে থাকা সাবেক সচিব শহীদুল্লাহ খন্দকার। মেধাতালিকার প্রথম পাঁচ নম্বরে না থাকায় ফ্যাসিস্ট সরকার আমলেও তাকে প্রধান প্রকৌশলী পদে নিয়মিত করা যায়নি। এখনও তিনি চলতি দায়িত্বেই রয়েছেন। যা সম্পূর্ণ অবৈধ।

গণপূর্তের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের বিশ্বস্ত সহচর ও বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের আস্থাভাজন গণপূর্তের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ। তার অব্যাহত দুর্নীতির কারণে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে, তার মতো একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হলে তা সরকারের ইমেজকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

কর্মজীবনে মো. কায়কোবাদ ইএম ডিভিশন-৭সহ ইএম-এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ডিভিশনের দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পদের মালিক হন। বিশেষ করে ইএম ডিভিশন-৭ এ দায়িত্ব পালনকালে কোনো কাজ না করেই ভুয়া প্রাক্কলন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে তিনি জাতীয় সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ ও সার্কেলের দায়িত্ব পালন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

মুজিববর্ষ উদযাপনে গণপূর্ত অধিদপ্তর যে চার শ’ কোটি টাকারও বেশি খরচ করে তার একটি বড় অংশ হাতিয়ে নেন তিনি। তৎকালীণ প্রধান প্রকৌশলী বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের নেতা আশরাফুল আলমের হয়ে তিনি সকল টেন্ডার থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। পূর্ত ভবনে প্রচলিত রয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ, স্টাফ অফিসার নির্বাহী প্রকৌশলী শফিউল হান্নান ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কল্যাণ কুন্ডুর সংকেত ছাড়া কেউ কাজ পেতো না। সে সময়ে জিকে শামীমের বাতিল হওয়া কাজগুলোকে বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে পাইয়ে দেয়ার জন্য এই তিনজন প্রধান প্রকৌশলীর হয়ে কমিশন তুলতেন।

ইএম সার্কেল-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ইএম সার্কেল চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থাকাকালে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। সবচে’ বেশি টাকা হাতিয়েছেন মিরপুরে হওয়া সরকারি আবাসিক ভবনের টেন্ডার থেকে। যার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল তৎকালীন মিরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ সরকার।

এমনই এক দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি প্রদান করলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হবে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব মো. নজরুল ইসলামের মতো আমলা কায়কোবাদের মতো মুজিববাদী প্রকৌশলীকে পদোন্নতি প্রদানে কতোটা সম্মত হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি এবং ইএম জোনের দায়িত্ব পেতে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকার মিশন নিয়ে নেমেছেন এই প্রকৌশলী। ইতিমধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টার বন্ধু এক মানবাধিকার কর্মীকে ম্যানেজ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এখন দেখার বিষয়, বর্তমান সচিব ও এ্যাডমিনিস্টেশন এসোসিয়েশনের সভাপতিকে কতোটা গলাতে পারেন এই কায়কোবাদ।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *