পদোন্নতি বাগাতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের মিথ্যাচার

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত জাতীয় ঢাকা বিশেষ প্রতিবেদন রাজধানী সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক  :  মিথ্যাচার দিয়ে পদোন্নতি বাগাতে চেষ্টা করছেন ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সহযোগী গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ। অতি সম্প্রতি আজকের সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাত নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তা ধামাচাপা দিতে ঠিকাদার নিয়োগ করেছেন এই প্রকৌশলী। প্রকাশিত সংবাদের যে প্রতিবাদ তিনি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশ করেছেন তা মিথ্যা তথ্য দিয়ে ভরা।


বিজ্ঞাপন

কিন্তু তার এই শাক দিয়ে মাছ ঢাকার গল্প কী বিশ্বাস করবেন গণপূর্ত উপদেষ্টা বিজ্ঞ আইনজীবি আদিলুর রহমান খান ও সচিব মো. নজরুল ইসলাম?

অনুসন্ধানে জানা গেছে, তার পদোন্নতি কেনার মিশনে ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়ে গেছেন মো. কায়কোবাদ। কোটি কোটি টাকার কাছে হার মানছে গোয়েন্দা সংস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অনেক সরকারি দপ্তর। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়েও একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট কাজ করছে তার পক্ষে। মিডিয়ার এসব রিপোর্ট ধামাচাপা দিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার বেশ আস্থার সঙ্গেই বলছেন, সব ক্লিয়ার হয়ে গেছে।


বিজ্ঞাপন

পুজার ছুটির পর অফিস খুললেই কায়কোবাদ অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি পাবেন। আর এসব রিপোর্টের পেছনে থাকা আরেক তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহাবুবুল হককে ইএম সার্কেল-৩ থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। তাকে পিএন্ডডি সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে বদলি করে সেখানে বিএনপিপন্থী প্রকৌশলী তৈমুর আলম অথবা কাইয়ুমকে বসানো হবে।


বিজ্ঞাপন

এদিকে অথর্ব এই প্রকৌশলীকে একটি তদন্ত কমিটির দায়িত্ব দিয়েছিল গণপূর্ত অধিদপ্তর। ‘গণপূর্তে আবার ইশকনের থাবা, অজন্তার তদ্বিরে দিশেহারা গণপূর্ত অধিদপ্তর’ শিরোণামে প্রকাশিত একটি সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। যে কমিটির প্রধান করা হয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদকে।

অথর্ব কায়কোবাদ তদন্তের সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট পত্রিকার রিপোর্টারকে কমিটির বৈঠকে আসার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি না দিয়ে ওই পত্রিকার সম্পাদককে মৌখিকভাবে তলব করেন। যা একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকের জন্য অসম্মানজনক। সঙ্গত কারনেই সম্পাদক তার এই প্রশাসনিক অযোগ্যতার কারনে বৈঠকে আসেননি।

সংবাদপত্রের সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকারি কর্মচারিদের আচরণ যেখানে হওয়া উচিত সহযোগিতাপূর্ণ সেখানে কায়কোবাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারনে কেউ তাকে সহযোগিতা করেনি। কায়কোবাদের দুর্নীতিপরায়ণ ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। অথচ শামীম আখতার তাকে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি দিতে উঠেপড়ে লেগেছেন। কায়কোবাদকে পদোন্নতি দেয়া হলে অনেক যোগ্য কর্মকর্তা বঞ্চিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

সাধারণত: কোনো পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য কর্মকর্তাদের একাধিক নাম পাঠানোর বিধান থাকলেও কায়কোবাদের ক্ষেত্রে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আখতার শুধুমাত্র কায়কোবাদের নাম প্রস্তাব করে পাঠিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী শামীম আখতার আরেক ফ্যাসিবাদের দোসর কায়কোবাদকে পদোন্নতি দিতে এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

এদিকে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের যে প্রতিবাদ কায়কোবাদ পাঠিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, মুজিবর্ষের কাজ সার্কেল-৩ ও ডিভিশন-৭ এর দায়িত্বে ছিল। অথচ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, গণভবন এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যাগে যে আয়োজন ছিল তার পুরোটাই কায়কোবাদের কর্মস্থল ইএম সার্কেল-১ এর অধীনে ছিল।

এ সকল কাজ কারা করবেন ও পাবেন তার পুরোটাই তিনি আশরাফুল আলমের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। এ কারনে আশরাফুল আলমের  অপসারনের সঙ্গে সঙ্গে তাকেও ইএম সার্কেল-১ থেকে ইএম চট্টগ্রাম সার্কেলে বদলি করা হয়। এটা অনেকটা পানিসমেন্টমূলক ছিল। কারণ, সে সময়ে যাকে ওই পদে দায়িত্ব দেয়া হয় সেই তৈমুর আলম তার থেকে ৬ ব্যাচ জুনিয়র ছিল।

কায়কোবাদের দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি তদন্ত করলেই বের হয়ে আসবে। হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা কায়কোবাদ শুধুমাত্র ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী হয়ে বিপুল অর্থ সম্পদের মালিক বনে গেছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *