ফতুল্লা ডিপোতে কর্মরত জয়নাল আবেদীন টুটুল ,।

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৫ সেপ্টেম্বর যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড জিএম (অপারেশন) সৈয়দ শাহীদুল স্বাক্ষরিত প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর একটি চিঠি পাঠান । এতে বলা হয় চট্টগ্রাম – ঢাকা পাইপলাইন প্রজেক্টের মাধ্যমে ২৪ জুন তেল সরবরাহ শুরু হয় এবং ফতুল্লা ডিপোতে তেল গ্রহণ সমাপ্ত হয় ৪ ঠা জুলাই । এতে ২ লাখ ৬২ হাজার ৮০৪ লিটার ক্ষতি হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে তেল আসা শুরু হয় ১৪ সেপ্টেম্বর, শেষ হয় ২২ সেপ্টেম্বর ।
এবার ক্ষতির পরিমাণ ১লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার। যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেড নিজেই স্বীকার করেছে তেল গায়েব হওয়ার বিষয়টি। যমুনা অয়েলের হিসাব মতে দুই দফায় মোট ডিজেল গায়েবের পরিমাণ ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৫১৮ লিটার। যার বর্তমান বাজার মুল্য ৩ কোটি ৭৩ লাখ ২০২ টাকা। এত বড় জালিয়াতি ঘটনার পরেও চলতি মাসের শুরুতেই একই ডিপোতে ছয় লাখ লিটার অকটেন ও দুই লাখ লিটার ডিজেল মিশ্রণ করার মতো গুরত্বর অভিযোগ উঠেছে। মুলত চুরি করতে ব্যর্থ হয়েই তেল মিশ্রনের মতো ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে।

তেল পরিবহনকালে চুরি ঠেকানোসহ জালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করন, পরিবহন লস কমাতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল এবং ফতুল্লা ডিপোতে পাইপ লাইন স্থাপন করে। দীর্ঘ এই ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন প্রকল্পে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন খরচ দেখিয়েছে ৩ হাজার ৬৯৯ কোটি টাকা । কিন্তু আশ্চার্যের বিষয় বহুল প্রত্যাশিত সেই পাইপলাইনে পাঠানো তেলই গায়েব করে দেয়া হয়েছে৷ প্রকৃতপক্ষে যমুনা অয়েলে কোন ভাবেই তেল চুরি বন্ধ হচ্ছেনা৷ একের পর এক অভিনব পদ্ধতিতে চলছে প্রতিষ্ঠানটিতে তেল চুরির মহোৎসব। অবশ্য তেল চুরি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই।

একারনেই তেল চুরি রোধ করা যাচ্ছেনা, কিংবা রোধ হচ্ছেনা। এদিকে মাঝে মাঝে তেল চুরির ঘটনা ফাস হয়ে , গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। সবচেয়ে মজার বিষয় যাদেরকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, এদের অনেকের বিরুদ্ধেই আছে আবার তেল চুরির অভিযোগ । নিজেরাই নিজেদের বিরুদ্বে তদন্ত করে। এরফলে তদন্ত কমিটির অধিকাংশ তদন্ত রিপোর্টই আলোর মুখ দেখেনি, আবার অনেক সময় মনগড়া তদন্ত রিপোর্টে বাঁচিয়ে দেয়া হয় মুল অপরাধীকে।
যমুনা সুত্রে জানা গেছে দ্বিতীয় দফায় চট্টগ্রাম টার্মিনাল থেকে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা ডিপোতে প্রেরনের জন্য এক কোটি ৫ লাখ লিটার ডিজেল পাম্প করা হয়৷ গ্রহন করে ২২ ও ২৩ নম্বর ট্যাংকে। ২২ নাম্বার ট্যাংকে ধারণ ক্ষমতা ৬৯ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯ লিটার এবং ২৩ নাম্বার ট্যাংকটিতে ধারণা ক্ষমতা ৫০ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭৭ লিটার । দুটো ট্যাংকে পাঠানো তেলের মধ্যে ১ লাখ ১২ হাজার ৬১৪ লিটার বা ৯৪ দশমিক ৯৫ টন তেল কম পাওয়া গেছে ।
এই মহা জালিয়াতর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ফতুল্লা ডিপোতে কর্মরত জয়নাল আবেদীন টুটুল , ফতুল্লা ডিপো ম্যানেজার আসলাম খান আবুল উলায়ী এবং সাবেক ডিপো ইনচার্জ বর্তমানে এজিএম ডিপো (অপারেশন) শেখ জাহিদ আহমেদের বিরুদ্ধে। তাদের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কতিপয় বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও । বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারে আমলে সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের প্রকাশ্য শেল্টারে তৎকালীন সময়ের ফতুল্লা ডিপো ইনচার্জ শেখ জাহিদ আহমেদ এবং যমুনা অয়েল শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি, ফতুল্লা ডিপোতে (গেজার পদে) কর্মরত জয়নাল আবেদীন টুটুলের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী তেল চুরির সিন্ডিকেট ছিল ফতুল্লা জুড়ে ।
বর্তমানও সেই সিন্ডিকেটটি বহাল আছে। তবে শেখ জাহিদ আহমেদ পদোন্নতি পেয়ে এজিএম হওয়ায় জয়নাল আবেদীন টুটুল পাচ্ছে আরও বাড়তি সুবিধা। এজিএম ডিপো অপারেশনের দায়িত্ব হলো বিভিন্ন ডিপোতে তেল সরবরাহ করা। অর্থ্যাৎ সকল ডিপোগুলোর ইনচার্জ শেখ জাহিদ আহমেদ। দেশের সব কটি ডিপোর তেল চুরির সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে শেখ জাহিদের বিরুদ্ধে। তাকে ম্যানেজ করেই চলছে সব কটি ডিপোতে চোরাই তেলের ব্যবসা৷ ফতুল্লা ডিপোতে শেখ জাহিদের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করছে জয়নাল আবেদীন টুটুল ওরফে তেল টুটুল।
এদিকে বর্তমান ডিপো ইনচার্জ আসলাম খান উলায়ী টুটুলের কথার বাইরে নয়। তার সিদ্ধান্তেই চলছে ফতুল্লা ডিপোর সকল কালক্রম। ফতুল্লা ডিপোতে অর্গানোগ্রামের অতিরিক্ত জনবল। এর মধ্যে ২৯ জনই টুটুলের আত্মীয় স্বজন। মুলত এরাই ডিপো নিয়ন্ত্রণ করে । স্থায়ী লোকজনকে অনত্র বদলী করে সেখানে ক্যাজুয়েল অর্থাৎ টুটুলের আত্মীয় স্বজন দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে । পাশাপাশি যেকজন স্থায়ী লোকজন আছে তাদেরকে বসিয়ে / কমগুরত্ব পুর্ন কাজ দিয়ে রেখেছে। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট কিছু ট্যাংকলরীতে ৯ হাজার লিটার পে-অর্ডার করে সাড়ে তের হাজারের গাড়ীতে অকটেন ডেলিভারি দেয়া হয়। এতবড় জালিয়াতির ঘটনার মধ্যেও টুটুল সিন্ডিকেট তেল পাচার বন্ধ করেনি।
চলতি মাসের ১ তারিখে বুধবার নসিহত জাহাজের একোয়া রিফাইনারি থেকে ৬ লাখ লিটার অকটেন ২লাখ লিটার সাদা ডিজেল ফতুল্লা ডিপোর ২০ নম্বর ট্যাংকে আনলোড করা হয় । এটা জানাজানি হলে অকটেনের মজুতের ২০ নম্বর ট্যাংকেই ডিজিল, অকটেন দুটোই লোড করে ফেলে। এরপর দেখা দেয় ডিজেলের ট্যাংকে ঘাটতি। পরের দিন ২রা অক্টোবর বৃহস্পতিবার ২০ নম্বর ট্যাংক থেকে ১৯ নম্বর ট্যাংকে ২ লাখ লিটার মিশ্রিত তেল আইটিটি করা হয় । ডিপোর ১৯ ও ২০ নম্বর ট্যাংকসহ অন্যান্য ট্যাংকের তেল ল্যাবটেষ্ট করলেই মিশ্রণ ধরা পড়বে । মোস্তাক ও বাবু নামে দুজন ক্যাজুয়েল সহকারী নদীর পারে বাল্কে ডিউটি করে। এদের কাজই হচ্ছে টুটুলের নির্দেশে নয়ছয় করা।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটো হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামি টুটুল। দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় হতে চলছে, অফিসে করেনা, তবে হাজিরা খাতায় ঠিকই নিয়মিত স্বাক্ষর চলছে তেল টুটুলের। এই সবই সম্ভব যমুনা অয়েলের উর্ধতন কর্মকর্তাদের আর্শীবাদে।
এদিকে তেল চুরির মহা জালিয়াতির ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায়, যমুনা অয়েল কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ফতুল্লা ডিপোর ওই দুটো ট্যাংক সিলগালা করে দেয় । এদিকে এই তেল চুরির সিন্ডিকেটকে বাঁচাতে অনেকটা উঠে পরে নেমেছে যমুনা ওয়েলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা। তারা কৌশল হিসাবে বিষয়টিতে ক্যালিব্রেশনে কোন সমস্যা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পাশাপাশি কোম্পানির পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে ট্যাংকের ক্যালিব্রেশনে ভুল থাকায় হিসাবে গোলমাল হয়েছে।
কিন্তু যমুনার দায়িত্বশীল একাধিক কর্মকর্তা জানান ক্যালিব্রেশনের বিষয়টি সহজ করে দেখার সুযোগ নেই , তাহলে আরও বড় ধরনের কেলেংকারী বেরিয়ে আসবে । সেসকল কর্মকতারা আরও জানান ক্যালিব্রেশন অর্থাৎ ট্যাংক সক্ষমতা যাচাইয়ে কোন ভাবেই ১ শতাংশের বেশি ত্রুটি হতে পারেনা । বরং তেল চুরির জন্যই মজুত সক্ষমতা কমিয়ে দেখানো হয়েছে ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে ২০১৮ সাল থেকে ২২ নাম্বার ট্যাংকটি এই ক্যালিব্রেশনে তেল গ্রহণ ও বিক্রি হচ্ছে । নতুন করে তৈরী সক্ষমতা সনদেও জালিয়াতি করে মজুত ক্ষমতা কমিয়ে দেখানে হয়েছে। এতে করে বাড়তি তেল মজুত হলেও মেপে কম পাওয়া যায় । জালানি তেল পরিমাপ করা হয় সনাতন প্রক্রিয়ায়। ডিপ ষ্টিক দিয়ে মুলত ট্যাংকের গভীরতা মাপা হয়৷ এই গভীরতা ২ কিলোমিটার কম দেখাতে পারলেই ১ হাজার ১৮০ লিটার পর্যন্ত তেল চুরি করা যায় ।
ট্যাংকে তেল মজুত শুরুর আগে বাংলাদেশ ষ্ট্যান্ডার্ডস আ্যান্ড টেষ্টি ইনষ্টিটিউশন ( বিএসটিআই) থেকে সক্ষমতা যাচাই করে ( ক্যালিব্রেশন) সনদ নিতে হয়। নির্দিষ্ট মেয়াদের পর আবার যাচাই করে সনদ নিতে হয়৷ তেল কোম্পানীর হয়ে কাজটি করে দেয় বেসরকারী কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ফতুল্লা ডিপোর দুটো ট্যাংকের সক্ষমতা যাচাইয়ের কাজ করেছে খুলনার ঠিকাদার মেসার্স এস এম নুরুল হক। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে এই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটিকে কার্যাদেশ পাওয়ার সকল কিছুর মুলে ছিল সিবিএ নেতা জয়নাল আবেদীন টুটুল।
তবে শুরু থেকেই তেল চুরির কৌশল হিসাবে ক্যালিব্রেশন সম্পাদনেও আছে বড় ধরনের অনিয়ম। ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর বিএসটিআই কর্তক সক্ষমতা সনদে (ক্যালিব্রেশন) বলা হয়েছে ২২ নম্বর ট্যাংকে ২ হাজার মিটার গভীরতায় তেল ধারণ ক্ষমতা ক্ষমতা ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ লিটার । আর ১২ হাজার ১৪০ মিটার গভীরতায় ধারন ক্ষমতা ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৭ লিটার৷ একই প্রতিষ্ঠান ২০২৫ সালের ৬ মার্চ নতুন সক্ষমতা যাচাইয়ে বলেছে ২ হাজার মিটার গভীরতায় ধারণ ক্ষমতা ১২ লাখ ২৮ হাজার ৮৪০ লিটার।
আর ১২ হাজার ১৪০ মিটার গভীরতায় ধারণ ক্ষমতা ৭২ লাখ ৮ হাজার ১২৯ লিটার। অর্থাৎ দ্বিতীয় সনদে মজুত ক্ষমতা কমেছে প্রায় ৬০ হাজার লিটার। এদিকে ২৩ নম্বর ট্যাংকটি নতুন বলে সক্ষমতা তুলনা করা যায়নি । তবে একাধিক সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে এই ট্যাংকেও সক্ষমতার চেয়ে ৮ হাজার লিটার কম দেখানো হয়েছে৷ মেসার্স এস এম নুরুল হকের সত্তাধিকারী আন্দালিব বিন হকের দাবি সক্ষমতার ক্ষেত্রে ১ শতাংশ তারতম্য হতে পারে । এতে ৭০ লাখের ক্ষেত্রে ৭ হাজার কমতে বা বাড়তে পারে । তবে তিনি ৬০ হাজার লিটারের বিষয়ে নিশ্চিত নয়৷ এটা মুদ্রাজনিত ভুল হতে পারে বলেও তিনি দাবি করেন৷
এদিকে বিগত সময়গুলোর মতো ঘটনা ধামাচাপা নামকাওয়াস্তা গঠন করেছে একটি তদন্ত কমিটি৷ খোদ যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্বে অভিযোগ, সেখানে নিজেরাই করেছে তদন্ত কমিটি । এত বড় জালিয়াতির ঘটনায় বিপসি কিংবা জালানি মন্ত্রনালয় তদন্ত কমিটি গঠন না করার পিছনে কোন অদৃশ্য শক্তি লুকায়িত আছে, এরকম দাবী যমুনা অয়েলের দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তার। এদিকে তদন্ত কমিটতে অন্তর্ভুক্ত দুই সদস্যকে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ ২৮ সেপ্টেম্বর জিএম ( অপারেশন) সৈয়দ শাহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ছয় সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটিতে প্রধান করা হয়েছে এজিএম ( ই এন্ড ডি) মোহাম্মদ আলমগীরকে ।
সদস্য হিসাবে আছেন এজিএম ডিপো (অপারেশন) শেখ জাহিদ আহমেদ, ম্যানেজার ( অপারেশন) মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া, ফতুল্লার ডিপো (ম্যানেজার) আসলাম খান আবুল উলায়ী এবং সিপিডিএল ও পিটিসিএলের একজন করে উপযুক্ত প্রতিনিধি৷ তদন্ত কমিটির দুই এবং চার নাম্বার সদস্য যথাক্রমে শেখ জাহিদ আহমেদ এবং আসলাম খান আবুল উলায়ীকে অন্তর্ভুক্ত করাতে, উল্টো তদন্ত কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
অবশ্য ওঠাটাই স্বাভাবিক । যেই ডিপাতে এত বড় তেল চুরির জালিয়াতি ঘটনা ঘটেছে সেই ডিপোর ইনচার্জ, পাশাপাশি যিনি সকল ডিপোর ইনচার্জ এরকম দুজনকে কিভাবে তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে, এই প্রশ্ন যমুনা অয়েলের অনেক কর্মকর্তা, কর্মচারীদের।এই দুইজন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়টি কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেনা। বরং তদন্ত কমিটি হওয়ার কথা ওদের বিরুদ্ধেই। এদিকে এবিষয়ে বিভিন্ন গন্যমাধ্যমে প্রকাশিত রির্পোটকে এদিকে বিপিসির চিঠির আলোকেই করা হয়েছে আরও একটি তদন্ত কমিটি। ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক ( বন্টন ও বিপনন) মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইনের স্বাক্ষরিত চিঠিতে যমুনা অয়েলের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বলা হয়, আগামী তিন দিনের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে।
তারই ধারাবাহিকতায় একই দিন যমুনা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার ( এইচ আর) মো: মাসুদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় । এতে আহবায়ক করা হয়েছে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ফাইনান্স) মোহাম্মদ জোবায়ের চৌধুরী, সদস্য সচিব ডেপুটি ম্যানেজার (ফাইনান্স) মো : জসীম উদ্দিন এবং সদস্য করা হয়েছে ডেপুটি ম্যানেজার ( শেয়ার) মো : আখতার মোহাইমিনুল হককে। এই কমিটিকেও সময় বেধে দেয়া হয়েছে তিনদিন। এই সময়ের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে ।
যেখানে এত বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটনা ঘটে গেল, সেখানে বিপিসি কিংবা জালানি মন্ত্রণালয় থেকে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছেনা কেন? এই প্রশ্নটি উঠাতে, অবশেষে বিপিসি কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২রা অক্টোবর বাংলাদশেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের উর্ধতন মহাব্যবস্থাপক মনি লাল দাশ স্বাক্ষরিত চিঠিতে তদন্ত কমিটিতে আহবায়ক করা হয়েছে বিপিসির বন্টন ও বিপনন বিভাগের মহাব্যবস্থাপককে , সদস্য সচিব করা হয়েছে উপব্যবস্থাপক -২ ( বানিজ্য ও অপারেশন) এতে সদস্য করা হয়েছে উপমহাব্যবস্থাপক ( ইন্জিনিয়ারিং এন্ড প্লানিং) পিওিপএলসি, উপ মহাব্যবস্থাপক (
অপারেশন আ্যান্ড প্লানিং) পিটিসি পিলসি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সিডিপিএল ( বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষে) রওনক ইসলামকে। কমিটিকে বলা হয়েছে আগামী দশ কার্যদিবসের মধ্যে বিপিসির চেয়ারম্যান বরাবর তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য। তবে সবকটি তদন্ত কমিটিই হয়েছে দ্বিতীয় দফা ডিজেল গায়েব সম্পর্কিত ঘটনার বিষয়ে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন, এমনটাই জানান তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য ।