অসুস্থতার ভুয়া অজুহাতে গোপালগঞ্জের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইতালিতে অবস্থান করছেন

Uncategorized অনিয়ম-দুর্নীতি অপরাধ আইন ও আদালত খুলনা গ্রাম বাংলার খবর বিশেষ প্রতিবেদন শিক্ষাঙ্গন সারাদেশ

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১৩৫ নং রঘুনাথপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনীষা বিশ্বাস যিনি এখন ইটালি। 


বিজ্ঞাপন

 

মোঃ সাইফুর রশিদ চৌধুরী :  অসুস্থতার ভুয়া অজুহাতে বছরের অধিকাংশ সময় বিদেশে কাটাচ্ছেন গোপালগঞ্জের এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। জেলার সদর উপজেলার ১৩৫ নং রঘুনাথপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মনীষা বিশ্বাস নিয়মিতভাবে ছুটি নিয়ে ইতালিতে অবস্থান করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার তার সর্বশেষ এক মাসের ছুটি শেষ হলেও তিনি এখনো দেশে ফিরে এসে কর্মস্থলে যোগ দেননি। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা উত্তরা বিশ্বাস।


বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, “সহকারী শিক্ষিকা মনীষা বিশ্বাস গত বছর (২০২৪) সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অসুস্থতার কথা বলে গোপালগঞ্জের প্রাথমিক শিক্ষা উপপরিচালকের কাছ থেকে ৩০ দিনের ছুটি নেন। এরপর তিনি ইতালি চলে যান। তবে অসুস্থতার স্বপক্ষে তিনি কোনো চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রমাণপত্র দাখিল করেননি। ৩০ দিনের ছুটি শেষ হলেও তিনি দেশে ফিরে আসেননি।”


বিজ্ঞাপন

প্রধান শিক্ষিকা আরও বলেন, “তিনি পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে ছুটি মঞ্জুর করিয়ে নেন এবং দীর্ঘ ২৪৯ দিন বিদেশে অবস্থানের পর ২০২৫ সালের ৩১ জুলাই কাজে যোগ দেন। কিন্তু মাত্র দেড় মাস পর, ৯ সেপ্টেম্বর থেকে আবারও এক মাসের ছুটি নিয়ে ইতালি চলে যান। এখনো তিনি ফিরে আসেননি, ফলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।”

এ বিষয়ে জানতে সহকারী শিক্ষক মনীষা বিশ্বাসের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি প্রকৃতই অসুস্থ। ইতালির রাজধানী রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ছুটি বৃদ্ধির আবেদন করেছি। আমার ছুটি মঞ্জুর হয়ে যাবে। অসুস্থতাজনিত ছুটির জন্য চিকিৎসকের কাগজ বাধ্যতামূলক নয়, তবে আমার কাছে প্রমাণপত্র রয়েছে। বাংলাদেশি কর্মকর্তারা চাইলে আমি দেখাবো। সাংবাদিকরা এসব প্রমাণ দিয়ে কি করবে?”

গোপালগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার ১৩৫ নং রঘুনাথপুর পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিইও) জোসনা খাতুন বলেন, “একজন শিক্ষক মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হওয়াই স্বাভাবিক। তিনি অসুস্থতার প্রমাণপত্র ছাড়াই ছুটি পেয়েছেন—এটি অত্যন্ত অস্বাভাবিক। কীভাবে তিনি বিদেশ থেকে বসে ছুটি বৃদ্ধি করলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয় অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, একজন শিক্ষক বিদেশে থেকে ছুটি বাড়িয়ে বছরের পর বছর অনুপস্থিত থাকলেও প্রশাসন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *