গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুর মহানগরীর তারগাছ এলাকায় অনন্ত ক্যাজুয়াল ওয়্যার লিমিটেড নামে একটি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছেন শ্রমিকরা। শনিবার সকালে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। সম্প্রতি শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশনা মানছে না বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা।
শ্রমিকরা জানান, গত ১১ এপ্রিল কারখানার মহাব্যবস্থপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মুনির আহমেদ স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ দেয়া হয়। সেখানে পুনরায় কারখানা লে-অফ রাখার মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
কারখানায় কর্মরত, কর্মচারী ও শ্রমিকদের জানানো হয়, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে করোনাভাইরাস মহামারি রুপ নিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রেতাগণ তাদের অনেক ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। শ্রমিকদের মধ্যে করোনাভাইরাস আতঙ্ক বিরাজ করছে। যার কারণে শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে কারখানা চালু রাখা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। পুরো বিষয়টি কারখানা কর্তৃপকক্ষের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত। এমন পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ৪ মার্চ পর্যন্ত কারখানা লে অফ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে কর্তৃপক্ষ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কারখানা লে অফ রাখার মেয়াদ বৃদ্ধি করে। বর্তমানে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং সরকারি নির্দেশের প্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ পুনরায় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লে অফ রাখার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের ইন্সপেক্টর ইস্কান্দর হাবিব জানান, ওই কারখানাটি গত ২৪ এপ্রিল থেকে চালু করা হয়। কারখানার শ্রমিক রয়েছে প্রায় তিন হাজার। তবে শুরুতে কারখানার সকল শ্রমিক যোগ না দিলেও অর্ধেকের বেশি শ্রমিক কাজ শুরু করে। কারখানা চালু হওয়ায় শনিবার নতুন করে আরও প্রায় এক হাজার শ্রমিক কাজে যোগ দিতে গেলে তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হয়।
এ সময় শ্রমিকদের মধ্যে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে শ্রমিকরা সকাল ৮টা থেকে কারখানার প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের ফলপ্রসু আলোচনা হলে বেলা ১১টার দিকে শ্রমিকরা তাদের অবরোধ তুলে নেন।