করোনাকালে তামাকপণ্য নিষিদ্ধের দাবি

জীবন-যাপন সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার (কোভিড-১৯ মহামারী) এই ভয়াবহ সময়ে ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে’ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিপণন ও বিক্রি সাময়িকভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিশিষ্ট এই ১৮ নাগরিকসহ শত নাগরিকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি চিঠি বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দেওয়া হয় বলে শুক্রবার বিকালে উন্নয়ন সংস্থা এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মোজম্মেল হক, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. গোলাম কিবরিয়া ম-ল, বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজের প্রাক্তন প্রফেসর মো. শাহ আলম, এসিডির নির্বাহী পরিচালক সালীমা সারোয়ার, দিনাজপুরের হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. বিধান চন্দ্র হালদার, বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. মো. মাহবুব হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শাতিল সিরাজ, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ঢাকা) এর সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আব্দুল মজিদ, রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাজী শাহেদ, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান, রংপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টিজের পরিচালক পার্থ বোস, রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের কম্যুনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. চিন্ময় কান্তি দাস, দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আজিজুল ইসলাম চৌধুরী, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, রাজশাহী জজকোর্টের আইনজীবী শামসুন্নাহার মুুিক্ত, বিশিষ্ট কলামিস্ট শাহ মো. জিয়া প্রমুখ।
তামাকে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং করেনাভাইরাস সংক্রমণ সহায়ক দাবি করে তা নিষিদ্ধ করার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরবার ওই চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, তামাকজাত দ্রব্য ফুসফুসের সংক্রমণ ও অসুস্থতা বাড়ায় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে তামাক ব্যবহারের কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এসব ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা ও বতসোয়ানা ইতোমধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের ওপর যে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেই বৈশ্বিক অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশে সিগারেট, বিড়ি, জর্দা, গুলসহ সকল তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় নিষিদ্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, তামাক ব্যবহারের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ২৬ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বর্তমানে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন এবং প্রায় ৪ কোটি ১০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। দেশে এই বিপুল জনগোষ্ঠী বর্তমানে মারাত্মকভাবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ ধরনের রোগীর চিকিৎসায় অনেক সময় কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থার দরকার হয় এবং বর্তমানে এই মহামারীর মধ্যে রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামাদির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সুতরাং তামাকজাত দ্রব্য বিপণন ও বিক্রয় অব্যাহত থাকলে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে সেইসাথে করোনাভাইরাস সংকট আরো ঘণীভূত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট এসিডিসহ দেশের প্রায় ২১টি তামাকবিরোধী সংস্থা ও সংগঠন সম্মিলিতভাবে এই কার্যক্রম (প্রধানমন্ত্রী বরবার শত নাগরিকের চিঠি) বাস্তবায়ন করছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।


বিজ্ঞাপন