নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের রাজনীতিতে হত্যা, সন্ত্রাস, ষড়যন্ত্র আর সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার তাদের হাত ধরেই। এখনও তারা সেই অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। দেশে-বিদেশে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা তলে তলে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মঙ্গলবার আয়োজিত এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ওবায়দুল কাদের সংসদ ভবনের সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত হন।
আলোচনা সভায় কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর যৌবনের উত্তাপ দিয়ে গড়া স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তার সমাধির জন্য দু’গজ জমিও জুটল না। স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার এতই বদনসিব যে, তার মরদেহ সমাধি করা হলো রাজধানী থেকে অনেক দূরের অজগাঁ টুঙ্গিপাড়ায়।
বঙ্গবন্ধুর মতো নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার কয়েজন বিশ্ব নেতার সঙ্গে তুলনা করে কাদের বলেন, বাংলাদেশের মাটি কি হজম করতে পারে বঙ্গবন্ধু মুজিবের রক্ত? বাংলাদেশের মানচিত্রের সমান যার অস্তিত্ব, চরিত্র হননের কোন ছোরা দিয়ে তাকে কী নিধন করা হয়ে গেছে? অবমূল্যায়নের কোনো নরুন দিয়ে ছেদন কী করা গেছে স্বাধীনতার এই বটবৃক্ষকে? না, শত ষড়যন্ত্র আর হাজার চেষ্টার পরও মুজিব মরেনি।
কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে। একদা নিথর স্তব্ধ অন্ধকার টুঙ্গিপাড়ায় এখন লাখো জনতার ঢল। যতদিনে বাংলায় চন্দ্র-সূর্য উদয় হবে, যতদিন এ জনপদে পাখির কলরব থাকবে, নদীর কলতান থাকবে, সাগরের গর্জন থাকবে, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলা নামের দেশ থাকবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু মুজিব আপনিও বেঁচে থাকবেন।’
বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার কন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ফেরার প্রসঙ্গ টেনে সেতুমন্ত্রী বলেন, ইতিহাসের নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে ১৯৮১ সালে মুজিববিহীন বাংলায় ফিরে আসেন মুজিব কন্যা। প্রতিকূল আবহাওয়ায় তাকে বরণ করি হৃদয়ের সব টুকু আবেগ, কষ্ট আর ভালোবাসায়। শেখ হাসিনা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন আমাদের আস্থার ঠিকানা, আশার নিউক্লিয়াস, উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার পুরোধা। তাকে ঘিরেই আজকের বাংলাদেশ। আজকের সমৃদ্ধিও এগিয়ে চলা।
বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও রায় কার্যকরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আছেন বলেই ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের বিচার হয়েছে জাতির কলঙ্কমোচন হয়েছে। আত্মস্বীকৃত খুনিরা শত আশ্রয়-প্রশ্রয় ও প্রটেকশন পায়নি জনতার কাছে। আদালতের রায়ে ফাঁসিতে ঝুলে আছে খুনিরা। যারা লুকিয়ে আছেন তাদেরও ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে। ইতোমধ্যে জোরদার করা হয়েছে কূটনৈতিক তৎপরতা।
শেখ হাসিনার তুলনা কেবল তিনি নিজেই’- মন্তব্য করে কাদের বলেন, সাম্প্রতিককালে করোনা সংকট মোকাবেলায় তার দূরদর্শী এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার দক্ষতা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। শেখ হাসিনা যেমনি অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন তেমনি যে কোনো হত্যাকা-ের বিচার তিনি অপরাধীর দলীয় পরিচয় খোঁজেননি। অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখেছেন।
মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক মাহমুদা বেগম প্রমুখ।
