ছাত্রের বাপ-চাচাদের হাতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল!

রাজনীতি সারাদেশ

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে সাংগঠনিক অযোগ্যতা, অদক্ষতার অভিযোগের পাশাপাশি কমিটিতে যারা রয়েছে তাদের কারো ছাত্রত্ব দুরের কথা অনেকের তারুণ্য হারিয়ে বয়স্ক, তাদের ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ছে। সম্প্রতি সময়ে নগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার কথা থাকলেও এখনো থেকে গেছে কমিটি ছাত্রের বাবাদের হাতে, ছাত্রদলের কার্যক্রম ছাত্রদের দিয়ে করার কথা থাকলেও তারা ছাত্রদের বাবাদের দিয়ে চলছে নগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক কার্যক্রম। ছাত্রদলের কমিটির সবাই বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের মহানগর কমিটিকে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলে ছাত্রদলের পদটিও তারা আঁকড়ে ধরায় তৃণমূলে চরম ক্ষোভ ও হাতাশা বাড়ছে।
জানা গেছে, নগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের নেতৃত্বে। ছাত্র সংগঠনটিতে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদেই রয়েছেন বিএনপি নেতারা। এক ব্যক্তি একাধিক পদ ধরে রাখায় ছাত্রদলের নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি না হওয়ায় সাংগঠনিক কার্যক্রমেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ছাত্রদলের সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদের দায়িত্ব রয়েছে। সিনিয়র সহ সভাপতি ও বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মঈনুদ্দিন মো. শহীদ, সহ সভাপতি জিয়াউর রহমান জিয়া নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আলী মর্তুজা স্বেচ্ছাসেবক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক, বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নগর কমিটি ও নগর ছাত্রদলের সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু দায়িত্ব রয়েছেন, নগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক জমির উদ্দীন নাহিদ স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক ও আরেক যুগ্ম সম্পাদক মোশারফ হোসেন নগর যুবদলের যুগ্ন সম্পাদক, মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচএম রাশেদ খান নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। ২০১৩ সালের ২২ জুলাই কেন্দ্র থেকে নগর ছাত্রদলের ১১ জনের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। গাজী সিরাজ উল্লাহকে সভাপতি ও বেলায়েত হোসেন বুলুকে সাধারণ সম্পাদক করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও ব্যর্থ হন তারা। এরইমধ্যে পার হয়ে গেছে দীঘ ৭ বছরের বেশী। আর কমিটির ১১ জনের মধ্যে একজনের মৃত্যু ঘটেছে এবং আরেকজন পদত্যাগ করেন। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের ২০০২ সালে মোশারফ হোসেন দিপ্তী ও আহমেদ উর রহমান রাসেলের কমিটির পর গত ১৮ বছরে পুর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় চরম নেতৃত্ব সংকট সৃষ্টি হয়েছে সংগঠনটিতে। কমিটি জটিলতার কারণে ছাত্র দলের সামিয়াত আমিন জিসান, সাইফুল আলম, মহসিন কবির আপেল, রিপাত হোসেন শাকিল, এন মোহাম্মদ রিমন, শরীফুল ইসলাম তুহিন, সালা উদ্দীন শাহেদসহ অনেকে নতুন কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বা সভাপতি সম্পাদক হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও তারা এখনো কোন পদে আসতে পারেনি। এরপর দলের প্রতিটি কর্মকান্ডে প্রথম সারিতে থেকে দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন তারা। নতুন কমিটির পদ প্রত্যাশী সামিয়াত আমিন জিসান বলেন, আমার কমিটির আশায় আশায় প্রায় দেড় যুগ সময় কাটিয়েছি, রাজনীতি করতে গিয়ে মামলা, হামলা জেল জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছি যত দ্রুত কমিটি হবে তত দ্রুত নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে সাংগঠনিক কর্মকান্ড গতিশীল হবে বলে জানান। নতুন কমিটিতে আরেক পদ প্রত্যাশী সাইফুল আলম বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে ২৩টি রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েছি এরমধ্যে একদিনের জন্যও রাজ পথে ছাড়েনি, এখনো সব চেয়ে বেশি জমায়েত আমার মিছিলে হয়ে থাকেন বলে তিনি জানান কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিটি দিয়ে কমিটির জটিলতা দুর করার দাবি জানান।এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলু বলেন, আমি ছাত্রদলের দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার জন্য যে কোন সময় প্রস্তুুত আছি, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের যারা দায়িত্বে রয়েছে তারা যদি নতুন কমিটি না দেয় দায়িত্ব ছাড়ি কিভাবে? সাহসী, সংগ্রামী ত্যাগীদের নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব নতুন কমিটি দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সংসদের নিকট দাবি জানান। ছাত্রদলের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত টিমের প্রধান শফিউল মোবাশ্বির শাহীর সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের কমিটির প্রসঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন খোকন জানান, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংসদে আলাপ আলোচনা হয়েছে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি দেয়া হবে বলে তিনি জানান।


বিজ্ঞাপন