বিশেষ প্রতিবেদক : নভেল করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন কমবেশি ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের বাজেট ঘোষণা করেছি। জানি না আমরা কতদূর করতে পারব (বাজেট বাস্তবায়ন), তবে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। যদি সবকিছু ভালোভাবে যায়, তাহলে আমরা সম্পূর্ণ অর্জন করতে সক্ষম হব। যদি তা না হয়, তবে সেটি আমরা দেখব, আমরা পিছপা হব না। আমরা আমাদের অর্থনীতির চাকা চালু রাখতে জাতীয় বাজেট দিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনা সংকটের প্রথম থেকেই সরকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে চেয়েছে। সীমিত আকারে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার জন্য প্রণোদনা প্যাকেজও ঘোষণা করেছে সরকার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সংবাদ সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে প্রবাসীরা কিছুটা সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং তাঁদের অনেককে দেশে ফিরতে হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে এ মহামারিতে রেমিট্যান্স কমে যেতে পারে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে। আমাদের রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়ে এখন তিন হাজার ৯৪০ কোটি মার্কিন ডলার হয়েছে, রেমিট্যান্সের জন্য আমরা ২ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছি। আমাদের বিদেশি রিজার্ভ এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে।
কয়েক বছর ধরে বাজেটের ঘাটতি ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও সরকার এবার বাজেটের ঘাটতি ৬ শতাংশ নির্ধারণ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমরা এটি ১০ শতাংশ করতাম, তবে তা প্রয়োজন হয়নি।’ কোভিড-১৯ মহামারি ছাড়া সরকারকে কিছু প্রাকৃতিক বিপর্যয়েরও মুখোমুখি হতে হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে আমরা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পেরেছি। দেশে দীর্ঘস্থায়ী বন্যার পূর্বাভাস ছিল এবং এখনো কিছু নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীভাঙন আরো খারাপের দিকে মোড় নিয়েছে। আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছি, আমরা চেষ্টা করছি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের পাশাপাশি তাঁর দল দেশের জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সেবা দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সংকটের এ সময়ে জনগণের সহায়তায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টার জন্য সরকারি কর্মকর্তা এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সংকটময় মুহূর্তে সাধারণ মানুষের কল্যাণ নিয়ে চিন্তা করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অন্য কোনো দল ক্ষমতায় থাকলে তারা কখনোই এ কাজ করত না। এর পরিবর্তে তারা এ সংকটকে পুঁজি করে কিছু সুযোগ-সুবিধা অর্জনের চেষ্টা করত। কিন্তু আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করছি।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটিই আওয়ামী লীগের নীতি, জাতির পিতা যা আমাদের শিখিয়েছেন।’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সব কর্মসূচি স্থগিত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের নিরাপত্তা ও জীবন সবার আগে এবং এ কারণেই সরকার সব কর্মসূচি ভার্চুয়ালি পালন করছে।