সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি : বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা ও মহান ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ শহিদ মিনারকে দিনের পর দিন অবমাননা করে আসছেন খোদ প্রধান শিক্ষিকা। জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এ বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা টানানোর খুঁটি (স্ট্যান্ড) থেকে শহিদ মিনার পর্যন্ত রশি টানিয়ে কাপড় শুকানোর কাজে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবন ও উন্মুক্ত মঞ্চের সামনে একটি পাইপ (খুঁটি) বসানো হয়েছে। বিদ্যালয় চলাকালীন নিয়মিত এ খুঁটির মাথায় জাতীয় পতাকা টানানো হয় এমনকি আজও জাতীয় পতাকা উত্তোলিত ছিল অপরদিকে প্রশাসনিক ভবনের পাশেই শহিদ মিনার নির্মিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই খুঁটি থেকে শহিদ মিনারের স্তম্ভ পর্যন্ত একটি শক্ত নাইলনের তার (রশি) বাঁধা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন পিয়ন দিয়ে ওই রশি বেঁধে বিদ্যালয়ের আবাসিক বাসস্থানে থাকা তার পরিবারের লোকজনের ভেঁজা কাপড় শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন। এতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক জাতীয় পতাকা ও ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিস্তম্ভ শহিদ মিনারকে দিনের পর দিন অবমাননা করে আসছেন খোদ প্রধান শিক্ষিকা। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে ওয়াজেদা পারভীন ২০১৫ সালের ১ জুন যোগদান করেন। একইসাথে তিনি উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহ-সভাপতি হওয়ায় শুরু থেকেই বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম ও একক আধিপত্য গড়ে তোলেন।তার নিজ বাস ভবন তৈরী করার জন্য নিজে ম্যানেজিং কমিটির তোয়াক্বা না করে প্রায় পাচ লক্ষ টাকা খরচ করে বাস ভবন তৈরী করেছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন তার বিরুদ্ধে ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক ২০১৫-২০১৬,২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭- ২০১৮ অর্থ বৎসরের অভ্যন্তরীণ অডিট করা হয়েছে যা প্রকাশের প্রক্রিয়াধীন বলে জানা যায়।তিনি বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও নিজে অনৈতিক সুবিধা আদায় করলেও কেউ প্রতিবাদের সাহস পায় না।এমনকি প্রশাসন ও ম্যানেজিং কমিটিকে তোয়াক্কা করেনা।
সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ওয়াজেদা পারভীন অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ভেঁজা কাপড়-চোপড় শুকানোর সুবিধার জন্য জাতীয় পতাকার খুঁটি থেকে শহিদ মিনার পর্যন্ত রশিটি বাঁধা হয়েছে। তবে এটা আমি নিজে করিনি, পিয়ন দিয়ে করিয়েছি। এখন ট্রেনিংয়ে আছি, পরে বিস্তারিত কথা হবে।
এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের পিয়ন আজাদ মিয়া জানান, ম্যাডামের নির্দেশে আমি রশিটি সেখানে বেঁধেছি। তবে ভেঁজা কাপড়-চোপড় ম্যাডাম নিজে ও তার কাজের মেয়েকে দিয়ে ওই রশিতে শুকাতে দেন।
বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান শাহ্জাদা বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। তবে এখনই আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। এটা করে থাকলে ঠিক করেননি। পরবর্তীতে যাতে এমনটা না হয়, সেজন্য এখনই তাকে বলে দেওয়া হবে।