ভারতীয়সহ ৪ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত

এইমাত্র জাতীয় জীবন-যাপন সারাদেশ স্বাস্থ্য

মৃত্যু বাড়ল, আক্রান্তও দ্বিগুণ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি আইইডিসিআর আইসিডিডিআর,বি ও আইদেশি-র সঙ্গে যৌথভাবে প্রায় ২০০ কোভিড-১৯ নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে দেশে চারটি ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির কথা নিশ্চিত করেছে। সোমবার আইইডিসিআর এক প্রতিবেদনে এ কথা জানায়। ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে রয়েছে- বি.১.১.৭ (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৩৫১ (সাউথ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট), বি.১.৫২৫ (নাইজেরিয়া ভ্যারিয়েন্ট), এবং বি.১.৬১৭.২ (ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট)।
আইইডিসিআর জানায়, বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি শনাক্ত রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) কাজ করছে। এছাড়া কোভিড-১৯ অতিমারির প্রারম্ভিক পর্যায় থেকে অ্যাক্টিভ কেস সার্চ, কোভিড-১৯ রোগ শনাক্তকরণ, কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ও জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। সম্প্রতি পাশের দেশ ভারতে বিশ্বের সর্বোচ্চ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আইইডিসিআর ভারত থেকে আগত ব্যক্তিদের মধ্যে রোগতত্ত্বিক তদন্ত ও সন্দেহজনক রোগীদের জিনোম সিকোয়েন্সিং করছে। এ ধারাবাহিকতায় আইইডিসিআর বিগত এপ্রিল মাসে ভারত থেকে আগত ২৬জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬জন রোগীর নমুনায় বি.১.৬১৭.২ (ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত করে। এই ভ্যারিয়েন্ট-কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভ্যারিয়েন্ট অফ কনসার্ন (ঠঙঈ) হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এ ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৪টি দেশে শনাক্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আক্রান্ত রোগীদের সবাই বিগত ১ থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে পাশের দেশ ভারতে (চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, হরিয়ানা, এবং পশ্চিমবঙ্গ) চিকিৎসার জন্য ভ্রমণ করেছেন। এই ছয় জনের মধ্যে তিন জন একই পরিবারের সদস্য। ছয় জনের বয়স ৭ থেকে ৭৫ বছরের মধ্যে। এরা সবাই এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং বিভিন্ন হাসপাতালে আইসোলেশনে ছিলেন। এদের মধ্যে একজন বয়স্ক ব্যক্তি ক্যান্সারসহ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছিলেন এবং তিনি পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়া এই ইন্ডিয়া ভ্যারিয়েন্ট-এর সিকোয়েন্স বৈশ্বিক ডাটাবেজ জিআইএসএআইডি (এওঝঅওউ)-তে জমা দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
মৃত্যু বাড়ল, আক্রান্তও দ্বিগুণ : বিশ্বব্যাপী তা-ব চালানো মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৩২ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ১৮১ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৯৮জন। দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭লাখ ৮০হাজার ৮৫৭জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া গত ২৪ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১হাজার ৫৮জন। এ নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৭লাখ ২৩হাজার ৯৪জন। এদিন মোট করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১০হাজার ৩৪৭জনের।
এর আগে রোববার (১৬ মে) দেশে করোনায় ২৫ জন মারা যান, আর নতুন করে শনাক্ত হয় ৩৬৩ জন।
এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে মারা গেছেন আরও প্রায় ৯ হাজার ৫৪৪ জন। এখন পর্যন্ত বিশ্বে মোট করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৩ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৫ জনের এবং আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৩৭ লাখ ৯ হাজার ৭৬ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৪ কোটি ২১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৫ জন।
করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৩ কোটি ৩৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৫১ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ১৪৭ জনের।
আক্রান্তে দ্বিতীয় ও মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২ কোটি ৪৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৫ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৮১ হাজার ৮৬০ জনের।
আক্রান্তে তৃতীয় এবং মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত করোনায় এক কোটি ৫৬ লাখ ২৭ হাজার ৪৭৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩৫ হাজার ৮২৩ জনের।
আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার ৭৮৭ জন। ভাইরাসটিতে মারা গেছেন এক লাখ ৭ হাজার ৬১৬ জন।
এ তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে তুরস্ক। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৫১ লাখ ১৭ হাজার ৩৭৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৪৪ হাজার ৭৬০ জন।
এদিকে আক্রান্তের তালিকায় রাশিয়া ষষ্ঠ, যুক্তরাজ্য সপ্তম, ইতালি অষ্টম, স্পেন নবম এবং জার্মানি দশম স্থানে রয়েছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৩৩তম।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।


বিজ্ঞাপন