মোহাম্মদপুরে র‍্যাব-২ এর হাতে দুই মাদক কারবারি গ্রেফতার

অপরাধ

নিজাম উদ্দিন : র‍্যাব-২ এর অভিযানে রাজধানীর মোহাম্মদপুর হতে পাকস্থলীর অভ্যন্তরে বহন করে আনা ৫,৫৫০ পিস ইয়াবাসহ মাদক কারবারী চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন

সমাজে মাদকের ভয়াল থাবার বিস্তার রোধকল্পে মাদক বিরোধী অভিযানে অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র‍্যাব নিয়মিত আভিযানিক কার্যক্রমের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য পাচার এবং মাদকদ্রব্য মজুদকারী ও বাজারজাতকারীদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছে। র‍্যাব-২ সব সময়ই মাদকের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ অবস্থান রেখে চলেছে।

র‍্যাব-২ এর আভিযানিক দল র‍্যাব-২ সদর দপ্তরের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, রাজধানী মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদকের একটি বড় চালান হস্তান্তর হবে। এ প্রেক্ষিতে, র‌্যাব-২ এর আভিযানিক দল ১৮ মে ২০২১ইং তারিখ ১৮১৫ ঘটিকায় মোহাম্মদপুর থানাধীন কলেজ গেট, মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার এলাকায় অবস্থান নেয় এবং সেখান থেকে সন্দেহভাজন মাদক কারবারী চক্রের দুইজন সদস্যঃ ক। মোঃ মামুন মল্লিক (৩৮), পিতা- মোঃ মৃত সালাম মল্লিক, পিরোজপুর এবং দীপ্ত হালদার দীপ (২৫), পিতা- দীপক হালদার, পিরোজপুর’দ্বয়কে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোনরূপ মাদকদ্রব্য বহনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও তাদের অভিব্যক্তি ও আচার-আচরণ সন্দেহ জনক হওয়ায় অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, আইন-শৃখলা বাহিনীর নজর এড়াতে তারা বাহ্যিকভাবে মাদক বহন না করে বিশেষ কায়দায় ছোট পলিথিনের পুটুলী তৈরি করে মুখ দিয়ে গিলে পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করছে। এমতাবস্থায় উভয় আসামীকে জরুরী ভিত্তিতে নিকটবর্তী শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক্সরে করে তাদের পেটের অভ্যন্তরে কিছু বস্তুর অস্তিত্ব নির্ণয় করেন। এই প্রেক্ষিতে কর্তব্যরত চিকিৎসকের চিকিৎসা ব্যবস্থাপত্র ও পরামর্শ অনুযায়ী উভয়’কে ১৮ মে ২০২১ তারিখ ০৬ঃ৪৫ ঘটিকা হতে ১৯ মে ২০২১ তারিখ ৭ ঘটিকা পর্যন্ত জরুরী বিভাগের তত্ত্বাবধানে পর্যায়ক্রমে পায়ু পথ দিয়ে আসামী মোঃ মামুন মল্লিক এর পেট থেকে ৭৫টি ক্যাপসুল সাদৃশ্য পুটুলী এবং আসামী দীপ্ত হালদার দীপ এর, পেট থেকে ৩৫টি পুটুলী বের করা হয়। উভয় আসামীর উদরাভ্যন্তর হতে নির্গত ১১০টি পুটুলী হতে সর্বমোট ৫৫৫০ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।

আসামীদ্বয় পরবর্তীকালে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায় যে, তারা পারস্পারিক যোগশাজোসে দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্তবর্তী জেলা সমূহ থেকে মাদক পরিবহন করে নিয়ে আসছে এবং রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করছে। মাদক পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রায়শঃই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর এড়াতে তারা নিত্য নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করতো। সম্প্রতিকালে মহাসড়কে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারী ও তল্লাশী বেড়ে যাওয়ায় তাদের দৃষ্টি এড়াতে তারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে ইয়াবাপূর্ণ ক্যাপসুল তৈরী করতঃ গলধঃকরণ করে পাকস্থলীর অভ্যন্তরে লুকিয়ে পরিবহন করছিল।

ধৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যাচাই বাছাই করে ভবিষ্যতে র‌্যাব-২ এ ধরনের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যহত থাকবে জানান র‍্যাব বাহিনী।
র‍্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের যেকোনো অশুভ কর্মকান্ডে যেকেউ জড়িত থাকলে তাদের র‍্যাবের চোখে ফাঁকি দেওয়া মুশকিল। বাংলাদেশ র‍্যাব বাহিনী দেশের ও জনগণের জন্য সদ্য সজাগ সবসময়। যেকোনো অশুভ শক্তি কে পরাস্ত করতে র‍্যাব বাহিনী সবসময়ই সজাগ অবস্থা অবলম্বন করে থাকেন।