নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা ওয়াসায় আউট সোসির্ং নিয়োগে চলছে চরম নৈরাজ্য। অবসরপ্রাপ্ত কয়েক জন কর্মকর্তা মিলে একটি সমবায় সমিতি গঠন করেছেন। কথিত সমিতির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত প্রধান হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা আব্দুল বাকী চৌধুরী।
আর সম্পাদক হচ্ছেন ওয়াসার হিসাব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান আব্দুস সোবহান। তাদের কাজ পাওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন ওয়াসার একজন সার্ভিং পদস্থ কর্মকর্তা। নিয়োগপ্রাপ্ত লোকবলের অধিকাংশই তার এলাকার। তিনি আবার দরপত্র মুল্যায়ন কমিটির সদস্য। যেকারনে দরপত্রে অংশগ্রহনের যোগ্যতা ছাড়াই বাকি-সোবহান দিনের বেলা শান্তি পানি বিক্রির দোকান আর রাতে ফুটপাতের টি স্টলে বসে নিয়োগ বাণিজ্য করছেন। অফিসেরও প্রয়োজন হয়না।
বর্তমানে আউট সোসির্ং নিয়োগের একটি কাজ কথিত সমিতিকে দেয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানাগেছে। উক্ত দরপত্রে অংশগ্রহনের কোন যোগ্যতাই নেই। একটি প্রতিষ্ঠান কে কৌশলে দরপত্র দাখিল করতে দেয়া হয়নি। আরেকটি প্রতিষ্ঠান লকডাউনের জন্যে প্রস্ততি নেয়া সত্তে¦ও দরপত্র দাখিল করতে পারেনি। দু’টি প্রতিষ্ঠানই পুন:দরপত্র আহবানের দাবিতে সিপিটিইউ এবং আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানাগেছে।
উল্লেখ্য, ১৩/১২/ ২০২০ তারিখে ঢাকা ওয়াসা হিসাব বিভাগে ১৫ জন হিসাব সহকারী নিয়োগের জন্যে দরপত্র আহবান করে। দরপত্রের শর্ত পরিপালন করে ৬টি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে। যোগ্য প্রতিষ্ঠানসমুহ কে নিয়োগ না করে নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী সমবায় সমিতি কে লোকবল সরবরাহের কাজ দেয়া হয়েছে। এমনকি দরপত্র চুড়ান্ত হওয়ার পূর্বেই লোকবল নিয়োগ দিয়েছে। দরপত্র ছিল আইওয়াশ মাত্র। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, কথিত সমবায় সমিতি দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দাখিল করতে পারেনি। দরপত্রে অংশগ্রহনের কোন যোগ্যতাই সমিতির ছিলনা। সমিতির নিজস্ব কোন অফিস নাই। ঢাকা ওয়াসার সাবেক দুর্নীতিবাজ প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল বাকী চৌধুরী অবসরপ্রাপ্ত আরো কয়েক কর্মকর্তা কে নিয়ে সম্প্রতি এই সমিতি গঠন করে। নানা অনিয়ম দুর্নীতির কারনে বাকী চৌধুরীর অবসোরত্তর সকল বেনিফিট প্রদান বন্ধ রেখেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার নামসর্বস্ব সমিতি কে লোকবল সরবরাহের কাজ দেয়ায় বিস্মিত হয়েছেন ওয়াসার সচেতন কর্মকর্তাগণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা ওয়াসার একজন সিবিএ প্রতিনিধি বলেন, ওয়াসার কর্মকর্তারা বাকী চৌধুরীর নামসর্বস্ব সমিতি কে ব্যবহার করে মূলত নিয়োগ বাণিজ্য করছে। হিসাব বিভাগে লোকবল নিয়োগের পূর্বে এই কথিত সমিতি পাম্প সহ অন্য বিভাগেও লোকবল সরবরাহ করেছে। ওয়াসা কর্র্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিষ্ঠিত ও সার্বজনীন ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: কে ঠিকাদার নিয়োগ করতে পারত। এই সমিতির পূর্বে রাজস্ব জোন পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাছাড়া, ওয়াসার সকলে এই সমিতির সদস্য। মূলত: বাকী চৌধুরীর সাথে পারস্পরিক সমঝোতা করে ওয়াসার কয়েক জন কর্মকর্তা নিয়োগ বাণিজ্য করছেন।
এদিকে অযোগ্য ও নামসর্বস্ব ঠিকাদার কে লোকবল সরবরাহের কাজ দেয়ায় দরপত্র বাতিল করে পুন:দরপত্র আহবানের দাবি জানিয়েছে অংশগ্রহনকারি ঠিকাদারগণ। অংশগ্রহনকারী একজন ঠিকাদার ইতিমধ্যে এলজিইডি মন্ত্রী, ওয়াসার এমডি, দুদকের চেয়ারম্যান, সিপিটিইউ’র মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্যে লিখিত আবেদন করেছেন।