মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী : আমরা জানি বন্ড ব্যবস্থা হলো একটি বিশেষ সুবিধা। যে ব্যবস্থায় একটি বন্ড লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে তার উৎপাদিত পণ্যের বিপরীতে আমদানি সকল উপকরণ শুল্ককর ব্যতীত আমদানির সুযোগ দেওয়া হয় , তবে শর্ত একটাই উৎপাদিত পণ্য বন্ডিং মেয়াদের মধ্যে রপ্তানি করতে হবে। অতপর রপ্তানির বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা আহরিত বা প্রত্যাবাসিত হবে, ফলে আর কোন সমস্যা নাই। বন্ডারও তার আমদানি উপকরণের উপর শুল্ককর প্রদানের দায়বদ্ধতা থেকে অব্যাহতি পাবেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অফিস স্মারক নং-৬(১৫) এনবিআর /শুল্ক-৪/৯২ তাং ১০/৭/১৯৯৭ খ্রিঃ মর্মার্থ হলো ব্যাক টু ব্যাক এলসি অধীনে আমদানি কাচামাল দ্বারা তৈরী পোশাক রপ্তানি করতে ব্যর্থ হলে করনীয় প্রসঙ্গে। এমন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংক ঐ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ফোর্সড লোনের সৃষ্টি তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অথবা সংশ্লিষ্ট বন্ড লাইসেন্স প্রদত্ত কমিশনারকে অবহিত করে থাকেন যাতে ঐ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে রপ্তানি ব্যর্থ হওয়া পণ্যের তৈরী উপকরণের শুল্ককর আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
এমন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কমিশনার যে এলসি-এর বিপরীতে পোশাক রপ্তানি করতে ব্যর্থ হয়েছে সেই এলসি রিলেটেড আমদানি মালামালের উপর দাবীনামা জারীর উদ্দেশ্যে কারণ দর্শানো নোটিশ জারী করবেন এবং বন্ডার কর্তৃক জবাব সন্তোষজনক না হলে দাবীনামা জারীর ব্যবস্থা নেবেন।
মোদ্দা কথা হলো উপকরণ দ্বারা তৈরী পোশাক যদি রপ্তানি করতে পারেন সমস্যা নাই যদি না পারেন তাহলে আমদানি উপকরণের শুল্ককর পরিশোধ করবেন। তবে বন্ডিং মেয়াদের মধ্যে দাবীনামা সাময়িক ধরনের হবে এবং বন্ডিং মেয়াদ শেষ হওয়ার সাথে সাথে দাবীকৃত টাকা আদায়ের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আমাদের আলোচ্য বিষয় ছিল জাহাজ রপ্তানি করতে ব্যর্থ হলে করনীয়। জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রে বন্ডিং মেয়াদ কাস্টমস এক্ট, ১৯৬৯ এর সেকশন ৯৮ অনুযায়ী ৪৮ মাস উক্ত ৪৮ মাসের মধ্যে জাহাজ রপ্তানি ব্যর্থ হলে দাবীনামা জারী করে ঐ জাহাজের বিপরীতে আমদানি উপকরণের শুল্ককর আদায় করতে হবে। উল্লেখ্য পোশাক শিল্প ব্যতিত অন্য কোন বন্ড প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি ব্যর্থ হলে হলে ফোর্সড লোন ও দাবীনামার বিষয় আলাদাভাবে কোন আদেশ নির্দেশ জারী নেই তবে বন্ড ম্যানেজমেন্ট- এর মর্মার্থ হলো আইনের ধারা ৯৮ মেয়াদের মধ্যে ব্যর্থ হলে আমদানি উপকরণের উপর শুল্ককর পরিশোধ করতে বন্ডার বাধ্য থাকবেন।