সাবরীনা মান্নান : অফিস কর্মস্থল, যেখানে আবেগের কোনো স্হান নেই। কাজের প্রতি মনোযোগ সব সময় তাড়িয়ে বেড়ায়। ২০১৭ সালে তখন স্কলার্স স্কুল কলেজের লেকচারার, ধানমন্ডি ২৭ ক্রস করছি হঠাৎ রিকশার চাকার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাস বন্ধ প্রায়, ইবনে সিনা হাসপাতালে চার ঘন্টা থাকতে হলো, পরদিনই অফিস এবং সেদিনই চেয়ারম্যান স্যারের বোনকে বাঁচাতে রক্ত দিলাম। পরবর্তীতে শুনেছিলাম রক্ত এমন কোনো বড় বিষয় নয়, দিয়েছি তাতে কি হয়েছে! সেদিনও হেসেছিলাম।
জীবন বয়ে চলে তার আপন গতিতে, আজ অফিসে টেবিলে লেগে পায়ের নখ প্রায় উঠে গেলো, তাকিয়ে হাসলাম, কত সহজেই রক্ত বুঝিয়ে দেয়, রং কিন্তু তার একটাই।
বাসায় এসে বাবার কথা ভীষণ মনে পড়ছিল, তিনি থাকলে এমন অবস্থা দেখে হয়তো কেঁদে ফেলতেন, হয়তো। অথবা অযথাই হৈ চৈ করে বাড়ি মাতিয়ে তুলতেন। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আমি কাঁদলে বাবাও কাঁদেন। তিনি যেখানেই থাকুন না কেনো সন্তানের কষ্ট তাঁকে তাড়িয়ে বেড়ায়। যাদের বাবা চীরতরে চলে গেছেন এ অনুভূতি শুধু তারাই লালন করে।
আমি ব্যাথায় কাঁদছি, সে এসে আমাকে আদর করে বুঝিয়ে দিলো,আমি তো আছি, বোবা প্রাণীর ভাষা বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষকে দেননি।
মানুষ আকাশের বিশালতার কাছে তুচ্ছ। সমুদ্রের গভীরতার কাছে অসহায়। পাহাড়ের দৃঢ়তার কাছে নিঃশব্দে কাঁদে। বাতাসের ভাষা বোঝে না। সীমাহীন অন্যায় অনাচারে লিপ্ত। তারপরও মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব! আশরাফুল মাকালুকাত!