মোহাম্মদ বেলাল হোসেন চৌধুরী : কাস্টমসের আরেক দিকপালের জীবনাবসান। ম্যান ছেরু মিয়া খ্যাত আব্দুল লতিফ শিকদার ৮৫বছর বয়সে আজ ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। করোনা আক্রান্ত হয়ে তিনি স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। আইসিইউতে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখ সোমবার ১২টা ৫৩মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
শেষবার ২০১৫ সালে স্যারের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে দেখা হয়। আমি প্রথম সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলাম। নিজের একটি কাজে এসেছিলেন। সাক্ষাতে স্বভাবজাত খোঁজখবর নিতেন। কাস্টমস ক্যাডার থেকে অবসর নেয়া জীবিতগণের মধ্যে আমাদের অন্যতম জেষ্ঠ সদস্য। তিনি কাস্টমস ক্যাডারের পরম শ্রদ্ধেয় একজন কর্মকর্তা। তাঁর পান্ডিত্য, জ্ঞান, দক্ষতা ও কাস্টমস বিষয়ক রচনাগুলোর জন্য তিনি স্মরণীয়।
তিনি আশির দশকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ও কাস্টমস,এক্সাইজ এন্ড ভ্যাট কমিশনারেট ও কাস্টম হাউস চট্রগ্রামে কালেক্টর ছিলেন। পরবর্তীকালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সদস্য হিসেবে অবসরে যান। কর্মজীবনে শিকদার স্যার ছিলেন একজন সৎ, জ্ঞানী, প্রজ্ঞাবান ও দক্ষ কর্মকর্তা। ডিপার্টমেন্টে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। কাস্টমস আইনের ওপর তিনি প্রথম রেফারেন্সহ বই লিখেন। কর্মস্থলে বিভিন্ন বিষয়ে অস্পষ্টতা দূরীকরণে বহু স্থায়ী আদেশ ও ব্যাখ্যা জারি করেন। কাস্টমস বিভাগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে নানামুখী ভুমিকা রাখেন। তিনি আমৃত্যু এনবিআরে এডিআরের ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
ব্যক্তি মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন সহজগম্য, আন্তরিক, অমায়িক ও অতুলনীয়। তিনি বরিশাল ব্রজমোহন কলেজে পড়াশোনা করেছেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা ও একপুত্র রেখে গেছেন। জেষ্ঠ কন্যার সাথে ঢাকায় একই বাড়িতে বসবাস করতে। মরহুমের ইচ্ছানুযায়ী তাঁর ঝালকাঠি জেলার গুঠিয়ার সন্নিকটে নিজ গ্রামে দাফন করা হবে।
তাঁর মৃত্যূতে কাস্টম পরিবারের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী গভীরভাবে শোকাভিভূত। মহান আল্লাহর তাঁকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন এবং তাঁর শোকাহত পরিবারকে এই শোক বহনের ধৈর্য দান করেন। আমীন।