প্রেমের টানে মেক্সিকোর তরুণীর সরিষাবাড়ীতে এসে বিয়ে

সারাদেশ

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল‌্যাণে প্রেমের টানে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মেক্সিকোর তরুণী সরিষাবাড়ীতে এসে বিয়ে করলেন।


বিজ্ঞাপন

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পোগলদিঘা গ্রামের কৃষক আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম এর ছেলে রবিউল হাসান রুমান এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তার বাড়ীতে অবস্থান করছেন। মেক্সিকান তরুণীকে একনজর দেখার জন্য নর-নারীর উৎসুক জনতার ভিড় লক্ষনীয়। মঙ্গলবার বিকালে ওই বাড়িতে গিয়ে এ দৃশ‌্য দেখা যায়।

নব দম্পত্তি সূত্রে জানা যায় ,গ্লাডিয়াস­ নায়েলি টরিবিও মুরোলেস (৩২) নামে তরুণীর সাথে ২০১৯ সালে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই থেকে দুজনের গভীর বন্ধুত্ব ও প্রেম হয়। টানা দুবছর প্রেম করার পর রোববার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৮টায় বাংলাদেশে আসে ওই তরুণী। রবিউল ও তার পরিবারের লোকজন হযরত শাহ জালাল (র:) বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। বিমান থেকে নামার পর কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ঢাকা জজ কোর্টে গিয়ে এভিডেভিটের মাধ্যমে নিজের খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর রবিউল হাসান রুমান কে বিয়ে করেন। এরপর মধ‌্যরাতে সরিষাবাড়ী নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছে।

তরুণীর বর্তমান নাম মোছা. লাইলী আক্তার রেখেছেন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রবিউল হাসান রুমান কে (২৯) তিনি বিয়ে করে সংসার বেধেছেন। রবিউল হাসান রুমান পোগলদিঘা গ্রামের আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম এর ছেলে। তিনি ময়মনসিংহের রুমডো ইন্সটিটিউট অব মডার্ন টেকনোলজি থেকে মেকানিক্যালে ডিপ্লোমা শেষে ফ্রিল্যান্সিং এ কাজ করছেন।

এ ব‌্যাপারে রবিউল হাসান রুমান জানান, ২০১৯ সালে উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর তরুণী গ্লাডিয়াস নায়েলি টরিবিও মুরালেসের সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই থেকে গভীর বন্ধুত্ব ও প্রেম এর শেষ পরিনতি ঘটাতে রোববার (২১ নভেম্বর) সকাল সোয়া ৮টায় বাংলাদেশে আসে। আামি ও আমার পরিবারের লোকজন হযরত শাহ জালাল (র.) বিমানবন্দর থেকে কিছু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ঢাকা জজ কোর্টে গিয়ে এভিডেভিটের মাধ্যমে খ্রিস্টান ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের পর আমাদের বিয়ে হয়েছে। আমরা বাড়িতে দাম্পত‌্য জীবন শুরু করেছি।

তরুণী তার মেক্সিকো ভাষায় জানান, মেক্সিকোর পোএবলা শহরের ব্যবসায়ী গ্রেগ্রোরিও টরিবিওর মেয়ে তিনি। মেক্সিকোর বেনেমেরিটা অটোনোমাস ইউনিভার্সিটি অব পোএবলা থেকে তিনি ২০১৬ গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। রবিউলের সঙ্গে প্রেম হওয়ার পরপরই তিনি বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন, কিন্তু করোনাভাইরাসের জন্য বিলম্ব হয়।

তার ভাষায়, বাংলাদেশে আসতে কোনো ভয় বা সমস্যা হয়নি। করোনার কিছুটা উৎকণ্ঠা থাকলেও ভালোবাসার কাছে আসার আনন্দে তাও প্রভাব ফেলেনি। বাংলাদেশটা দেখতে অনেক সুন্দর এবং এলাকার লোকজন অনেক মিশুক ও ভালো বলেও তিনি মন্তব্য করেন । হয়তো বা কিছুদিন শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করে লাইলী আক্তার মেক্সিকোতে ফিরে যাবেন এবং পরবর্তীতে দু‘দেশের নিয়মানুযায়ী আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে রবিউল হাসান কে মেক্সিকোতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন সামস জানান , প্রেমের টানে মেক্সিকান তরুণী বাংলাদেশে এসে তাদের প্রেম সার্থকতা হয়েছে। এলাকার লোকজন মেয়েটিকে দেখতে রবিউলের বাড়িতে ভিড় করছে। মেক্সিকান তরুণীকে পুত্রবধূ করায় পরিবার পরিজনও খুশি।