প্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্রে নেই কোনো চিকিৎসক

স্বাস্থ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক : খুলনা বন্য প্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে নেই কোনো চিকিৎসক। অসুস্থ বন্য প্রাণীর চিকিৎসা দেওয়া প্রতিষ্ঠানটির নেই আধুনিক সুযোগ সুবিধাও। একটি অপরারেশন থিয়েটার থাকলেও তা ব্যবহার হয়নি কখনো। এখানকার প্রাণীগুলোর চিকিৎসা দেওয়া হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ও অন্য প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক দিয়ে। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, সমস্যা নিরসনে চেষ্টা করছে তারা।
বন্য প্রাণী পুনর্বাসন কেন্দ্রে প্রবেশের পর সুন্দরী ময়ূর দেখে আপনার মন প্রফুল্ল হয়ে উঠতেই পারে। কিন্তু এখানে থাকা দুইটিই ময়ূর অসুস্থ অবস্থায় তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আছে। এর মধ্যে একটি চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এই কেন্দ্রে থাকা একটি হরিণ, বেশ কিছু ঘুঘু পাখি, বানর, ময়না পাখিসহ যা আছে তার অধিকাংশই অসুস্থ। সুস্থ্য করে এদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে। তবে পশু চিকিৎসকের অভাবে সুস্থ হয়ে উঠতে পারছে না।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলাসহ পদ্মার এপারের ২১ জেলা আর সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া প্রাণীদের আশ্রয় ও চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে খুলনায় বন বিভাগের নিজস্ব জমিতে প্রতিষ্ঠা হয় কেন্দ্রটি। শুরুর দিকে কিছুদিন থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এখানে নেই চিকিৎসক। পশু প্রাণীদের চিকিৎসার জন্য একটি অপারেশন থিয়েটার থাকলেও তা ব্যবহার হয়নি কোনদিনই। ফলে কেন্দ্রটির মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে খুলনার বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু নঈম মো. নুরুন্নবী বলেছেন, যখন গুরুতর কোনো সমস্যা হয়, তখন আমাদের চিকিৎসার ব্যাপারে অনেকটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
এ দিকে চিকিৎসকের অভাবে চিকিৎসা সংকটের কথা স্বীকার করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল। তিনি বলেছেন, এটি একটি প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছিল। তখন আমাদের এখানে একজন পশুচিকিৎসক ছিলেন। কিন্তু প্রকল্প শেষে আপাতত এখন কোনো চিকিৎসক নেই।
কেন্দ্রটিতে ছোট প্রাণী রাখার সুযোগ থাকলেও নেই উদ্ধার হওয়া বড় প্রাণীকে আশ্রয় দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা। নতুন করে বড় প্রাণী রাখার জন্যও খুলনা বন বিভাগের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
খুলনার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বলেছেন, বিভিন্ন রিসোর্টের অনুমোদনহীনভাবে যে সমস্ত প্রাণী রাখা হয়েছে, সেগুলো উদ্ধার করা হলে তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকায় পাঠিয়ে দিতে হয়। তাদের একটু রেস্ট বা সেবা দেওয়ার সুযোগ থাকে না। এগুলো আমরা উন্নয়নে চিন্তা করছি।
খুলনা বন্যপ্রাণী পুনর্বসান কেন্দ্রে বর্তমানে বিভিন্ন প্রজাতির ২২টি প্রাণী রয়েছে।


বিজ্ঞাপন