নিজস্ব প্রতিনিধি : আসামী মোঃ মোস্তফা (৪০), পিতা-মৃত সাহাবুল্ল্যাহ ওরফে সাবুল্লাহ, সাং-বাইশপুকুর, থানা- ডিমলা, জেলা-নিলফামারীকে নিলফামারী জেলাধীন ডিমলা থানার ডালিয়া-২ নামক বাজারের রাস্তার উপর হতে গত ২৯ নভেম্বর ২০২১ রাত্রী ৮ টা ২০ মিনিটে গ্রেফতার করা হয়েছে। অত্র মামলার মৃত শমসের আলী (৫২), পিতা-মৃত নহর উদ্দিন, সাং-ছাতুনামা, থানা-ডিমলা, জেলা-নীলফামারীসহ গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তফা এক সাথে দীর্ঘ দিন যাবৎ বগুড়া শহরের বিভিন্ন স্থানে দিন মুজুরের কাজ করত। তারা বগুড়ায় এসে মাটিডালী ঠান্ডুর স-মিলে রাতে ঘুমাইত এবং দিনের বেলায় মানুষের বাড়ীতে কাজ করত।
পাশেই শমসের এর ছোট ভাই সিরাজুল ইসলাম মাটিঢালী গ্রামস্থ হাই স্কুলের পিছনে জনৈক মজনুর বাড়ীতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করে এবং বগুড়া শহরে রিক্সা চালায়।
গত ২৮ জুন ২০২১ সকাল আনুমানিক ৯ টায় শমসের ও আসামী মোস্তফা দিনমুজুরী কাজের উদ্দেশ্যে শাখারিয়া কবিরাজপাড়া নামক গ্রামে রওয়ানা করে।
এরপর হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৩১২-২১৯১৩৯ তে তার আত্মীয়-স্বজন কল করলে বন্ধ পায়। পরের দিন অর্থ্যাৎ গত ২৯ জুন ২০২১ বিকাল আনুমানিক ৬ টায় বগুড়া সদর থানাধীন হোটেল মম ইন পার্কের পিছনে করতোয়া নদীর পূর্ব কিনারেউ জনৈক জলিলের ইউক্যালিপটাস বাগানের পশ্চিম পাশে করতোয়া নদীর ধারে ডিসিস্ড এর মৃতদেহ পাওয়া যায়।
উক্ত ঘটনায় উক্ত ঘটনায় ডিসিস্ড শমসের আলী এর ছোট ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের নামে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বগুড়া সদর থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করাকালীন পিবিআই, বগুড়া জেলা মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করতঃ তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।
পুলিশ সুপার পিবিআই বগুড়া জেলা এর হাওলা মতে পিবিআই বগুড়া জেলায় কর্মরত এসআই (নিঃ) মোঃ জাকারিয়া বিধি মোতাবেক মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
ডিআইজি পিবিআই প্রধান জনাব বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও পিবিআই বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার মোঃ আকরামুল হোসেন এর দিক নির্দেশনায় মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই (নিঃ) মোঃ জাকারিয়া সঙ্গীয় ফোর্স সহ তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আসামী মোঃ মোস্তফা (৪০), পিতা-মৃত সাহাবুল্ল্যাহ ওরফে সাবুল্লাহ, সাং-বাইশপুকুর, থানা- ডিমলা, জেলা-নিলফামারীকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তফাকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে এবং ডিসিস্ড শমসের অনেক দিন থেকে বগুড়া, কুমিল্লা, ঢাকা, টাংগাইলে মানুষের জমিতে কাজকাম করত।
তারা বগুড়ায় এসেও কাজ করত। ঘটনার সময়ে বগুড়ায় এসে কাজ করাকালীন তারা দুইজন সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ৭/৮জন দিন মুজুরসহ মাটিডালী ঠান্ডুর স-মিলে রাতে ঘুমাইত এবং দিনের বেলায় মানুষের বাড়ীতে কাজ করত।
ঘটনার দিন গত ইং ২৮ জুন ২০২১ সকালে আসামী মোস্তফা ৩০০/-টাকা হাজিরা এবং ডিসিস্ড শমসের ৪০০/-টাকা হাজিরা হিসাবে বগুড়া সদর থানাধীন শাখারিয়া কবিরাজপাড়া গ্রামে দুইজন আলাদা আলাদা বাড়ীতে কাজ করতে যায়।
কাজ শেষে ঐ দিন সন্ধ্যা বেলা গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তফা মাটিডালী ঠান্ডুর স-মিলের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে ঐ দিন সন্ধ্যা অনুমান ৬টা / সাড়ে ৬ টার সময় মম ইন পার্কের পিছনে করতোয়া নদীর পূর্ব পাশের পাড়ে ইউক্যালিপটাস বাগানের পশ্চিম পাশে আসামী মোস্তফার সাথে ডিসিস্ড শমসের এর দেখা হয়। তখন তারা ইয়ারকি-ফাজলামী করতে থাকে।
ইয়ারকি-ফাজলামীর এক পর্যায়ে আসামী মোস্তফা উত্তেজিত হয়ে শমসের এর লিঙ্গে (পেনিসে) তার ডান পা দিয়ে জোরে লাথি মারে। উক্ত আঘাতের ফলে শমসের মাটিতে পড়ে যায়।
তখন আসামী মোস্তফা শমসের কে ডাকাডাকি করলে সে কোন প্রকার সাড়া-শব্দ দেয় না। তখন সে ডিসিস্ড শমসের এর নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখে তার শ্বাস চলছে না। তার উক্ত আঘাতে ফলে ডিসিস্ড শমসের মারা গেছে। তখন সে ডিসিস্ড শমসের এর লিঙ্গে হাত দিয়ে দেখে লিঙ্গের অন্ডকোষ অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গেছে।
তখন আসামী মোস্তফা সেখানে থাকা তরকারীর জাংলা হতে পুরাতন লাইলনের চিকন রশি নিয়ে আসিয়া সমশের এর দুই হাত পিছনের দিকে বাঁধে তাকে সেখানে ফেলে আসামী মোস্তফা আনুমানিক ৩০/৪০ মিনিট অবস্থান করে ধুমপান করে ঠান্ডুর স-মিলে এসে শুয়ে পড়ে।
পরের দিন বিকাল এ টায় আসামী মোস্তফাসহ ডিসিস্ড শমসের এর ছোট ভাই সিরাজুল ডিসিস্ডকে খোঁজাখুঁজি করে।
ঐ দিন (২৯ জুন ২০২১) সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে এলাকার লোকজন লাশ দেখে পুলিশকে সংবাদ দিলে, সিরাজুল ও আসামী মোস্তফা লাশের কাছে গিয়ে লাশ শনাক্ত করে। ঘটনার ৩দিন পরে আসামী মোস্তফা বগুড়া থেকে নিজ বাড়ীতে গিয়ে ডিসিস্ড শমসের এর দাফনে অংশ গ্রহণ করে।
এরপর বিধি মোতাবেক গ্রেফতারকৃত আসামীকে গতকাল বুধবার ১ ডিসেম্বর আদালতে সোর্পদ করা হলে গ্রেফতারকৃত আসামী মোস্তফা আদালতে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন এর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।